‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাস যোগ্য ক’রে যাব আমি-
নব জাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
কেউ কিছু দেয় না, নিতে হয়। আমরা যারা তরুণ আছি তাদের সবাইকে এই নীতি আজ মানতে হবে। হয়ত আজ আমরা ছোট, কিছুই বুঝি না, ওরা বলে। কিন্তু কাল আমরা ছোট থাকব না। ইতিহাস দিব্যি স্বাক্ষি দেয়। তরুণ মানেই বড় কিছু। তরুণ মানেই নতুন কিছু। পৃথিবীর ইতিহাস থেকে জানা যায় বিশ্বে যত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। যত বিপ্লব সাধিত হয়েছে তা তরুণদের দ্বারা। তারুণ্য এমন এক শক্তি যার বিরুদ্ধে কখনো কোন শক্তি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি, পারবেও না। বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের সৃষ্টিতে আমরা তারুণ্যের শক্তি প্রতিধ্বনিত হতে দেখেছি বারবার। এই পৃথিবীতে তারুণ্যের শক্তি অদ্বিতীয়। যুগে যুগে যত অত্যাচারী শাসক ছিল তাদের পতনের মহানায়ক হিসেবে তরুণেরাই এগিয়ে ছিল। তরুণেরা বসে থাকে না। আজ পৃথিবীর সর্বচ্চ হিমালয়ের চূড়া থেকে শুরু করে ইংলিশ চ্যানেল কিংবা আফ্রিকার আমাজনের গহীন জঙ্গল এমন কোন স্থান নেই যেখানে তরুণের পদচিহৃ অঙ্কিত হয়নি। যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমরা গলা উঁচু করে বলতে পারি পৃথিবীটা তরুণদের। আমরা যারা তরুণ আছি আমাদের। আর আগামীতে আমাদের ঘারের উপর এসে পড়বে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আর এগুলোর গুরুদায়িত্ব। তার মানে পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায় আগামীটাও আমাদের। এজন্য আমাদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে। সর্বক্ষেত্রে বিচরণ করতে হবে। জানতে হবে প্রচুর ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-দর্শন, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে, পৃথিবীকে আনতে হবে আমাদের হাতের মুঠোয়। যার মধ্য দিয়ে আমাদের চোখের সামনে ফুটে উঠবে মানুষের জীবন দর্শণ। যুক্ত হতে হবে স্বচ্ছ রাজনীতির সাথে। সম্পৃক্ত হতে হবে উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে। ভাবতে হবে সমাজ, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি নিয়ে। তরুণদের একযোগে কাজ করার মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ভাবে একটি পরিপূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। যেখানে মানুষ অর্থনৈতিকভাবে কষ্ট পাবে না, না খেয়ে থাকবে কোন শিশু, কোন মানব সন্তানকে ঘুমাতে হবে না ফুটপাতে কিংবা রেল ষ্টেশন অথবা ঘাটে। হাসপাতালের টাকা পরিশোধ করার জন্য কোন নারী তার সদ্য প্রস্ফুটিত কলিকে বিক্রি করবে না কিংবা হাসপাতালে রেখে পালাবে না। অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য কোন স্কুল পড়–য়া ছেলেকে কাজ করতে হবে না চায়ের দোকানে। মেধাবী কোন ছাত্রকে রিক্সা চালিয়ে যোগাতে হবে না পড়ার খরচ, কোন মেধাবী ছাত্রীকে দেহকেই মূলধন করে ব্যবসা করতে হবে না হোটেলে।
তরুণ তৈরি আছ তো?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬