অনুভূতি
লেখা- ফাহিম নোমান
---- হঠাৎ একদিন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে দেখলাম। মেয়েটাকে দেখার পরই বুকের মধ্যে অন্যরকম একটা ঢেউ বয়ে গেল। প্রতিদিন কোচিং এ আসত। আর আমি ওর কোচিং এর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম ওকে দেখার জন্য। কিন্তু ওকে বলতে পারতাম না যে, ওকে ভালবাসি। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারলাম, ওর নাম #নাফিসা। প্রায় ১ সপ্তাহ কেটে গেল। ধিরে ধিরে ও আমাকে লক্খ্য করল। তাই প্রতিদিন কোচিং এ ঢোকার আগে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে যায়। এভাবেই কেটে গেল আরও তিনটি মাস। কিন্তু বলিনি আমার ভালবাসার কথা। একদিন আমার একটা বন্ধু আমার জন্য একটা চিঠি নিয়ে এল। চিঠিটা নাফিসার ছিল। অনেক আগ্রহের সাথে চিঠিটা নিলাম। কিন্তু চিঠিতে লেখা ছিল।- 'জানি তুমি আমাকে ভালবাস।আমিও বাসতাম। কিন্তু, তুমি আমাকে ভালবাসার কথা জানাতে পারনি। তাই আমি আর চাইনা যে, তুমি আমার কাছে আস। যে ছেলে মুখে কিছু বলতে পারেনা, সেই ছেলকে আমি চাইনা।'চিঠিটা পরে আমি কিছু করলামনা শুধু ওকে একটা চিঠি দিয়ে বল্লাম'হ্যা আমি বলতে পারিনি। কারন আমি নির্বাক। আমার কথা বলার ক্ষমতা নেই। সৃস্টিকর্তাই জন্মের সময় আমার মুখের ভাষা কেরে নিয়েছে। তাই এটাই মনে হয়, আমার ভালবাসার পরিনতী......
শুনেছিলাম পরে নাকি #নাফিসা খুব কঁদেছিল। কিন্তু আমি আর ওর দিকে ফিরে তাকাইনি। এভাবেই দিন যেতে লাগল। একদিন দেখি ও আমার বাসায় এসে হাজির। জানিনা কিভাবে আমার বাসা খুঁজে পেয়েছে। মা এসে বল্ল, ও নাকি আমার সাথে দেখা করতে চায়। কিন্তু আমি মাকে বল্লাম ওকে চলে যেতে বলতে। মা খুব অবাক হল। কিন্তু মা মানতে নারাজ। আম্মু আমাকে জোর করে নিয়ে গেল বসার ঘরে। দেখি ও বসে আছে। ও যখন আমার দিকে তাকাল, তখন আবারও আমার মনের মধ্যে একটা ঢেউ বয়ে গেল। অপলক ও আমার দিকে চেয়ে থাকল। ওর মায়াবি চোখ দুটি থেকে আমি আমার চোখ সরাতে পারছিলামনা। এক মুহূর্তের মধ্যে আমি এক অন্য জগৎ এ চলে গিয়েছিলাম। মা বল্ল তুমি বস, আমি আসছি। কিন্তু আমি আমার কল্পনা থেকে ফিরে আসলাম। আমার মধ্যে, আমার ক্খুব্ধতা আবার ফিরে এল। আমি আমার ছোট বোন ইলমিকে ডেকে আনলাম। ওকে বল্লাম নাফিসাকে চলে যেতে বলতে। ও প্রথমে রাজি হলনা কিন্তু পরে বলতে রাজি হল। ও যখন চলে যাচ্ছিল, তখন ওর দিকে একবার তাকিয়ে ছিলাম। ওর চোখ দিয়ে তখন পানি পরছিল। মেয়েটা একবার ও কথা বলতে পারেনি আমার সাথে। পরে মা এসে আমাকে অনেক বকা বকি করল কিন্তু আমি কথা কানে দেইনি। ওইদিন রাতে কিছুক্খন চুপ করে বসে ছিলাম। তারপর হঠাত্ নিজের উপরই রাগ হতে লাগল। কেন ওকে আজ এভাবে চলে যেতে বল্লাম? একটু কথা বল্লে কি হত? হ্যা ওর সাথে এরকম করাটা ঠিক হয়নি। তারপর নিজের অজান্তেই কাঁদতে শুরু করলাম।
সেদিন রাতে আমার এক ফোটাও ঘুম হল না,সারারাত ওর কথা চিন্তা করেই কেটে গেল।মন থেকে ওর কথা দূরে সরিয়ে রাখতে চাইলাম,কিন্তু পারলাম না।কোনোমতে শুধু রাত টা পার করে দিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গেলাম।রাস্তায় অনেক গোলাপ ফুল বিক্রি হচ্ছে।কিন্তু কেন? ও হ্যা।মনে পরেছে, আজকে তো ভ্যলেন্টাইন ডে।এটাকে হাস্যকর মনে করে উরিয়ে দিলাম।খেতে বসেছি,কেন যেন মনে হচ্ছিল আমি ওর জন্যেই জন্মেছি।কোনমতে খেয়ে বাইরে বের হলাম।রাস্তায় বের হয়ে দেখছি সব কাপলরা একজন আরেকজনের হাত ধরে হাটছে।ওইদিকে না তাকিয়ে,আমি আমার মত হাটতে লাগলাম।কিন্তু হঠাৎ আমার মন বদলে গেল।আমার মনে বারবার ওই সময় গুলোর কথা মনে পরতে লাগল। যখন আমি ওর কোচিং এর সামনে দাঁরিয়ে থাকতাম।আর ও যখন আমার দিকে মুচকি হেসে থাকত।যখন আমার বাসায় এসেছিল...আমি আর থাকতে পারলামনা।আমি খুঁছতে লাগলাম ওকে।কিন্তু ও নিজেই আমার কাছে এসে ধরা দিল।ওর এক বান্ধুবি আমাকে এসে বল্ল, ও আমার জন্যে***পার্কে অপেক্খা করছে।আমি প্রায় ছুটে গেলাম ওর কাছে।পাকর একটা বেঞ্চে বসে ছিল। আমি ওর সামনে দাড়াতেই, ও উঠে দাড়াল। আর আমি ওর মায়াবি চোখ দুটি আবার দেখতে পেলাম। আজকে ওকে আগের থেকেও সুন্দর লাগছে। ও ধিরে ধিরে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। আর আমি নির্বাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। "আমি তোমাকে চিনতাম না। তোমার নাম কি তাও জানতামনা। শুধু এতটুকু জানতাম তুমি আমাকে ভালবাস। বিশ্বাস কর আমিও তোমাকে এখন ভালবাসি। তুমি কথা বলতে পারনা কারন, কথা বলার ক্খমতা তোমার নেই। কথা দিয়ে ভালবাসা হয়না। ভালবাসা হয় মন দিয়ে। আমি আজকে তোমাকে আমার ভালবাসার কথা বলতে এসেছি। আর আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি" কারন, #তুমিই_আমার_ভ্যলেন্টাইন। আমি ওর চোখ দুটি আর সেই করুন মুখটার দিকে চেয়ে আমার হাত দুটো তুলো ধরলাম। আর ও এসে আমায় জরিয়ে ধরল। তারপর আমি নিজেকে বুঝতে পারলাম। হ্যা আমি আমার ভালবাসাকে খুজে পেয়েছি। ও আমার আর ওই আমার সব।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২০