প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন। অফিসের এসাইনমেন্ট। আমাকেই কাভার করতে হবে। বুধবার সকাল ১১ টায় শিকলবাহায় পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধনের পর জনসভা। আগের দিন স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে পাস নিয়েছি। সব গোয়েন্দা সংস্থা নামও নিয়েছে। সুতরাং পথে ঝামেলা হওয়ার কথা নয়। তারপরও আগের অভিজ্ঞতা আছে বলে ঝুঁকি নিলাম না। রাতেই কালের কন্ঠের নূপুর আর বাংলাদেশ প্রতিদিনের টিটো বলে রেখেছিল তারাও আমার সঙ্গে যাবে। ওদেরকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৮ টাতেই বেরিয়ে পড়লাম। ৩য় কর্ণফূলী সেতু বোধহয় আমরাই প্রথম পার হয়েছি। খালি সেতুর উপর দিয়ে একটানে গাড়ি পার। প্রবেশ মূখে পুলিশ গাড়ি আটকালেও পাস দেখে ছেড়ে দেয়। সোজা চলে গেলাম জনসভা স্থলে। দু'ঘন্টা আগেই লোকে লোকারণ্য। এসএসএফ এর বাধা পার হয়ে মঞ্চের পাশে দাড়ালাম। নেতারা আসছেন একে একে হেলেদুলে। মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে আড্ডা দিলাম খানিক্ষন। আড্ডা থেকেও অনেক সময় লেখার রসদ মেলে। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার পাশের মাঠে ল্যান্ড করল সাড়ে ১১ টায়। প্রথমে গেলেন পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধনে। ঝক্কি হবে দেখে পিছু পিছু আর গেলাম না। ফিরে এসে মঞ্চে উঠলেন। ৪০ মিনিট পর যখন বক্তব্য শুরু করবেন, তখনই আকাশের কান্না। মূষলধারে প্রচন্ড বর্ষন। বৃষ্টির মধ্যেই তিনি বক্তব্য রাখলেন। বললেন, এ ভালবাসার প্রতিদান কিভাবে দেব জানিনা। শুধু মনে রাখবেন আপনাদের পাশে আছি। জনগনের অধিকার আদায়ে যদি পিতার মত রক্তও দিতে হয় দেব। কবিতার ছন্দে বললেন, রিক্ত আমি নি:স্ব আমি দেবার কিছু নাই, আছে শুধু ভালবাসা দিয়ে গেলাম তাই।' মঞ্চের সামনে খোলা আকাশের নিচে বসে অঝোর বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে শুধুই শুনছিলাম। কিছুই নোট নিতে পারিনি। নোটবুক, কাগজপত্র, টাকা পয়সা, জামাকাপড় সব ভিজে একাকার। পরে অফিসে গিয়ে এক চ্যানেলের ভিডিও রেকর্ড শুনে নোট টুকে নেই। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ, বৃষ্টিও শেষ। কাকভেজা হয়েই প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরের পেছন পেছন সেতু পার হয়ে অফিসে ফিরে এলাম। ততক্ষনে সেতুর উপর হাজার হাজার লোক। সবাই হাটছে আর উপভোগ করছে দৃষ্টিনন্দন এই সেতুর সৌন্দর্য। বহু আকাংখিত কর্ণফূলী সেতুটি পেয়ে লোকজন যেন বৃষ্টিতে ভেজার সব কষ্ট ভূলে গিয়েছিল এক নিমেষে। ভাবছি, সেদিন আকাশও কেঁদেছিল কি এই প্রাপ্তির আনন্দে ?
পাওয়ার আনন্দে আকাশও কাঁদে !
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৫১টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন