somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিলবোর্ড তুমি কার? তুমি আমাকে কি দেখাতে চাও? নাকি তুমি আমার কাছে কিছু চাও?

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি গল্পঃ
“কম্পানির বড় কর্তার কাছে নোটিশ আসলো যে আগামী বার্ষীক সাধারণ সভার আগে কম্পানির বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা মাসে ১০০ টি ঘড়ি থেকে বাড়িয়ে মাসে ৪০০ টি ঘড়ি করতে হবে যা আগামী বার্ষীক সাধারণ সভার আগে রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করতে হবে। এবং এই কঠিন কাজের জন্য ঐ বড় কর্তাকে যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার এবং বাস্তবায়নের ক্ষমতা দেয়া হল। বড় কর্তা পরবর্তি ৪ মাস বাজারের সবচেয়ে উন্নত মানের যন্ত্রাংশ, মানব সম্পদ নিয়োগ করেন এবং ১০০% দক্ষতার সহিত এদের ব্যবহার নিশ্চিত করেন। কিন্তু এতে উনি মাসে ১৫০ টির বেশি ঘড়ি উৎপাদনে সক্ষম হলেন না। এরপর বড় কর্তা উনার ক্ষমতাবলে কম্পানির অন্যান্য খাত যেমন টিভি, ফ্রিজ (যা কম্পানির মূল আয়ের উৎস ছিল) উৎপাদন ৯৫% কমিয়ে দিয়েও এবং সেই রিসোর্সগুলা ঘড়ি উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করেও মাসে ২০০ টির বেশি ঘড়ি উৎপাদনে সক্ষম হলেন না। সমান্তরালে উনি সর্বোচ্চ আউটসোর্সিং এ গেলেন, এতে কম্পানির বাজেট এ খাতে ৯৯% ছুয়ে গেল। কিন্তু এতেও মাসে ২৫০ টির বেশি ঘড়ি উৎপাদনে সক্ষম হলেন না। শেষমেষ উপায়ন্তর না দেখে উনি গোপনে প্রতিদ্বন্দ্বী কম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেন আরও ১৫০টি ঘড়ি মাসে উৎপাদন করে দিতে হবে, বিনিময়ে কম্পানির ৯৯% শেয়ার এবং সকল ফিক্সড এস্যাট লিখে দিলেন যা আগামী বার্ষীক সাধারণ সভার পর কার্যকর হবে (এই ধরনের চুক্তি করার ক্ষমতা উনাকে দেয়া ছিল)। প্রতিদ্বন্দ্বী কম্পানি চুক্তি মোতাবেক মাসে ১৫০টি ঘড়ি দিল এবং আগামি বার্ষীক সাধারণ সভার ২ দিন আগে বড় কর্তা রিপোর্ট করলেন উনার অর্জন নিয়ে এবং মার্কেটিং কে বল্লেন উনার অর্জন সম্বলিত কিছু পোষ্টার ছেপে কম্পানির প্রতি কোনায় কোনায় সাটিয়ে দিতে।“
গল্প শেষ।
Recently কিছু ‘Billboard’ বিষয় বস্তু হচ্ছে এই সরকারের কি অর্জন তা নিয়ে। Billboard এর তথ্য অনুসারে, “বি,এন,পি-র আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন (সাল-২০০৬) = ৩১০০ মেগাওয়াট। আওয়ামীলীগ-র আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন (সাল-২০১৩) = ৮৫২৫ মেগাওয়াট।“ ----- আমি পুরাপুরি নিশ্চিত না, তবে ফিগার যা দেখসি মনে হয় এর কাছাকাছি।

Recently Billboard নিয়া যখন আড্ডায় হাসাহাসি হচ্ছিল, হঠাত এক দেশপ্রেমিক বন্ধু রাগতসরে বললো বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই তথ্য কি ভুল শুধু এইটার উত্তর দে?
এই গল্প তার প্রশ্নের উত্তর দেয়। সবার সাথে সেয়ার করলাম।
এই তথ্য নিশ্চয়ই ভুল না, এত ছোট ভুল না করার মত আস্থা এই সরকারের প্রতি আমার আছে। এই সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি ছিল এবং এতে এই সরকার আগের সরকারের তুলনায় এই বেপারে সফল।
কিন্তু এই বিদ্যুৎ পাইতে যে আমার ঘর বিক্রি হয় নাই তার নির্ভরতা কি? আমার বিদ্যুৎ খরচ যে আমার ও আমার বাচ্চার খাবারে ভাগ বসাচ্ছে না তা কি আমরা জানা আছে? এই বিদ্যুতের জন্য যে আমার ভবিষ্যত বিক্রি হয়ে যায় নাই তা কি আমার জানা?
কুইক রেন্টাল কেলেংকারি, চড়া দামে বিদ্যুৎ ক্রয়, খনিজ সম্পদ বিদেশী কম্পানির কাছে সহজলভ্য করা, প্রাকিৃতিক বন/সম্পদের অপব্যবহার কি আমাদের অন্যান্য জরুরি বাজেট কর্তণ করেনি?
এই বিদ্যুৎ বেশি পাওয়ার জন্য আমার স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, শিক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যত সম্পদের যদি সদ্ব্যবহার না হয় তাইলে বেপারটা তো উপরের গল্পের মতই।
আসলে পুরা বেপারটাই একটা আরেকটার উপর নির্ভরশীল যেটাকে বিশেষজ্ঞরা ‘মডেল’ বলেন। এই মডেল পর্যালোচনা বিশেষজ্ঞদের বেপার, আমার মত আম জনতা যেটা বুঝি উন্নয়ন হইল সুগন্ধের মত। যেইটার জন্য Billboard লাগে না। Billboard লাগে তখনি যখন কোন কিছু impose করা লাগে। সাধারণ জণগনকে বুঝাইতে এই রকম not false figure (unexplained) মনে হয় খুব কার্যকরী। আমার চোখে কোন সঠিক মডেল এরই বাস্তবায়ন দেখি না।
এখনো আমাকে আগের মত অনিশ্চয়তা নিয়ে ঘুমাতে হয়, প্রতিদিন বাড়ী ফিরতে আগের চেয়ে দীগুন ঝামেলা নিতে হয়, এখনো দেখি দুর্নীতিবাজরাই পাজেরো নিয়ে যায় যখন আমার শিক্ষক বন্ধু মায়ের চিকিতসার খরচ না দিতে পেরে বহু শখের শিক্ষকতা ছেরে দুরদেশে পারি জমায়, এখনো আগের মত রাস্তায় নিরিহ মানুষ মারা হয় কুকুরের মত, এখনো শ্রমিক কাদে তার সজনের লাশের জন্য, এখনো শিক্ষা ধণীদের বেপার, এখনো স্বাস্থ্য টাকার কাছে জিম্মি, এখনো সাংবাদিক মারার পরে নাটক রচনা হয়, বিশ্যজিতরা এখনো রাস্তার ময়লা, দুর্ণিতিবাজরা হয় দেশপ্রেমিক আর ভাষাসৈনিক চিকিতসার অভাবে মারা যায়। এতোকিছুর পরে Billboard-এ কারও হাসি আমার কাছে বিদ্রুপ মনে হয়।

আরেকটা বেপার চোখে পরছে খুব, সেইটা হইল সে তো আমার চাইতেও খারাপ। স্কুলে যেমন রেসাল্ট খারাপ হইলে খুজতাম আমার চেয়ে কে কে খারাপ করছে। এই Billboard গুলা্তে সেই জিনিষটারই প্রকাশ
বেশী। তবে পসিটিভ বেপার হচ্ছে, সরকারের যে পরীক্ষা ভাল হয় নাই এবং রেসাল্ট খারাপ হবে সেটা আগেই বুঝতে পারসে। সরকারের ভিউ ক্লিয়ার।
Billboard এ উনারা যদি উন্নয়নের পাশাপাশি যেগুলা নির্বাচনী ইশ্তেহারে ছিল কিন্তু পারেন নাই তার জন্যও ক্ষমা চেয়ে সীমাব্ধতার কথা বলতেন, তাহলে মনে হয় বেশি গ্রহণযোগ্য হত।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:০১
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×