somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছড়িয়ে দিচ্ছি ধ্বংস

৩০ শে মে, ২০০৮ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছড়িয়ে দিচ্ছি ধ্বংস

আকাশে উড়ছে অনেকগুলো কাক। আর গুটিকয়েক চিল। কাকের দলেরা পিছু নেয়, চিলেরা হঠাৎ নেমে আসে। মনে হতে থাকে যেন দ্রুত নেমে আসছে মাটির বুকে। না তা হয়না। হতে নেই, চিলেদের স্বভাবে এভাবে তাড়া খেয়ে মাটিতে নামার নিয়ম নেই। আর কাকেদের ফিরে আসারও।

হঠাৎ একটা শব্দ । দ্রুত একটা বিমান চলে গেলো । বিমানের শব্দে বুঝে নিতে হয় পাশেই এয়ার বেইস। প্রতিনিয়ত নামছে আর উড়ছে সরু নাকের মেটালিক উড়ন্ত দানবগুলো। আর বাতাসের তীব্রতা বুঝিয়ে দেয় আমি দাড়িয়ে আছি কর্ণফুলীর মোহনায়।

কাকেরা আবার তেমন উড়ে নাকি ? চিলেরা পিছু নেয় ? কে কার পিছু নেয় কে’বা জানে। একটি চক্র ধরে যখন আমরা ঘুরতে থাকি আদতে কি জানি কে কার পেছনে? খেলা করে প্রতিনিয়ত। কখনো সম্মুখপানে, কখনো উড়ন্ত দৌড়। কখনো মনে হয় বিমানের তাড়া খেয়ে পালাচ্ছে দুটোই। চিল এবং কাক কিংবা যে কোন একটি। চিল এবং কাকের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা কিংবা উড়ন্ত দৌড় প্রতিযোগিতা অনেকটা ম্রিয়মান মেটালিক দানবগুলোর কাছে।

মেটালিক দানবগুলো সম্পর্কে জানি আমরা সবাই কম-বেশি। নাম আর গতিতে ভিন্নতর হলেও কার্যক্ষমতায় পুরোপুরি ইউনিক হয়ে উঠছে এগুলো। সক্রিয়তায় সব দানব একে অপরের খুব কাছাকাছি; সমভাবাপন্ন। ধ্বংসেই তৃপ্তি এদের। আর এদের উড়ে যাওয়া মনে করিয়ে দেয় যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার কথা।

যুদ্ধ ! যুদ্ধ মানেই তো লড়াই, বিরোধিতা আর ধ্বংস। আর এই যুদ্ধের প্রকরনে এমন এক গুণগত পরিবর্তন এসে গেছে যে এটাকে খেলা বলাটাই অধিক সমীচিন মনে হয় আমার কাছে। ধাতবযন্ত্রের খেলা। ধ্বংসের প্রতিযোগিতা ।

আজকালকার যুদ্ধে এতো বেশি স্বয়ংক্রিয়তা এসে গেছে যে আজকাল একেবারে যুদ্ধ বিমানের লুকোচুরি খেলা দেখি না। স্যাটেলাইট মিডিয়ার কল্যাণে পুরো যুদ্ধ চিত্রটাই চোখের সামনে জীবন্ত ধরা পড়ে। আর প্রাকৃতিক অবক্ষয়ের এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের নগরজীবন এতটা প্রসারিত খুব একটা চোখে পড়ে না কাক-চিলের ফ্লাইং রান। ছোটবেলায় গ্রীষ্মের দুপুরে ছাদে উঠলে প্রায় চোখে পড়তো ফ্লাইংরান ।

শীতের প্রথমে কিংবা শেষে কখনো চোখে পড়তো এক ঝাঁক অতিথি পাখির ম্যারাথন যাত্রা। এখন তো ন্যাশনাল জিওগ্রাফী কিংবা ডিসকোভারি চ্যানেল একমাত্র ভরসা নিজের অস্তিত্বকে অনুভব করার; নষ্টালজিয়ায় ফিরে যাওয়ার।

যেখানে কাক আর চিলেদের নির্মল দৌড় ঝাঁপ আমাদের ছোটবেলার টুকরো টুকরো ক্ষণগুলো এক করে রাখতো তখন এই প্রজন্মের আমাদের শিশুরা ভাবতে থাকে মেটালিক দানবের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। অটোমেটিক গান হাতে রোবট কিংবা সমরবিদ কিংবা সাজানো ট্যাংকের বহরে পিসি গেইম নিমিশে ঢুকে যাচ্ছে মস্তিষ্কের কোষে কোষে।

স্যাটেলাইট মিডিয়ার কল্যাণে প্রাপ্ত জীবন্ত যুদ্ধচিত্রের কথা। কত সহজ হয়ে গেলো এই ধ্বংসকামনার রসদগুলো। আমরা কত সহজে চিবোচ্ছি হত্যা চিত্র এবং এর ভাবনাগুলো। সেকেন্ডে সেকেন্ডে লাইভ টেলিকাস্ট আর আমরা তিনবেলা হজম করছি রসালাপে।

ধ্বংসের ডেমোগুলো খুব সহজে রপ্ত করে নিচ্ছি আর ছড়িয়ে দিচ্ছি প্রজন্ম হতে প্রজন্ম।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০০৮ বিকাল ৪:২১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×