তীব্র স্রোতে আমাদের নৌকার যেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। কোথাও আমরা নেমে ঠেলে নিয়ে গেছি। একবার প্রপেলরের পাখা ভাঙলো, ভাগ্য ভালো আমাদের কাছে বাড়তি আরেকটা প্রপেলর ছিলো, সেটা লাগিয়েই এগিয়ে গেলাম। যেতে যেতে আমরা ছোট ঝর্ণা (ঝিরি) পেলাম অনেক। আর দুপুরের দিকে হঠাৎ করে দেখতে পেলাম বড় ঝর্নাটা, পোয়া মুহুরি বাজারের ঠিক আগে। হাতে সময় ছিলো কম, ফেরার সময় দাঁড়াবো ঠিক করে আমরা অল্প খানিকটা সময় থেকে এগিয়ে গেলাম সামনে। পোয়ামুহুরীতে চায়ের বিরতি, অসাধারণ চা খেলাম ওখানে। কিছু ছবি নিলাম, তারপর আবার সামনে, দূরে। যখন আমাদের নৌকাটা চলতে পারছিলো না অতিরিক্ত ওজনের কারনে, আমরা অনেকেই নেমে হেঁটে গিয়েছি। আমি এগিয়ে ছিলাম সবার আগে। নির্জনতা ভেঙে একা একা এগিয়ে যাওয়ার আসলে মজাটাই আলাদা।
এমনিতেই নৌকা ঠেলতে আর নদী ধরে হাটতে গিয়ে ভিজে গিয়েছিলাম অনেকটাই। তার উপরে ছিলো হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি। ভিজেছি, আবার গায়েই শুকিয়েছে কাপড়। সন্ধার আগে আগে ডুব দিলাম নদীতে পুরা গোসলটা করার জন্য। আর সেখানেই হারালাম আমার সাধের চশমা। বাড়তি চশমা নেই আমার, মোটামুটি অন্ধ হয়ে গেলাম তখনই, আর মনখারাপ। এত দারুন জায়গাটা আর বোধহয় আমার দেখা হলো না! আমাদের টিমের অখিল ভাই তার চশমাটা বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে। ওনার চশমার পাওয়ার আমার চশমার পাওয়ারের অর্ধেকের মত। আমার অন্ধত্ব উনি শেয়ার করে নিলেন খানিকটা আর আমি কৃতজ্ঞতায় ভাষা হারিয়ে ফেললাম যেন!
ততক্ষণে আমমরা পৌছে গেছি সিন্ধুপাড়া। আমাদের আর সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না, সন্ধ্যা হয়ে গেছে তখন। পোয়ামুহুরী থেকে আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা একজন সিন্ধূ পাড়ায় গিয়ে কারবারী (সর্দার) এর সাথে কথা বলে এলো। কারবারির বাড়িতেই আমাদের থাকার ব্যাবস্থা হলো। আমরা পোয়ামুহুরী থেকে চাল-ডাল-তেল কিনে নিয়ে এসেছিলাম। কারবারীর বাসায় গিয়ে রান্না শুরু হলো, আর তার সাথে গান-নাচ আর আড্ডা। আশপাশের বাড়ির মানুষেরা যোগ দিলো আমাদের সাথে। খাওয়া দাওয়া শেষে অবশেষে ঘুম।
----------------------------------------------------------------------------------
পর্ব : এক Click This Link
পর্ব: দুই Click This Link
পর্ব: চার Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:৩৫