somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপূর্ব আহমেদ জুয়েল
আমি অতি সাধারন একটা মানুষ …………পৃথীবির প্রতিটি মানুষের কিছু আশা-আকাঙ্কা থাকে, থাকে সীমাহিন স্বপ্ন। যেখানে সে তার জীবনকে সাজায় একিবারে নিজের মত করে। আমারো তেমন একান্ত কিছু স্বপ্ন আছে, যা আমাকে ভালো কিছু করার প্রেরনা যোগায়।

ব্যাংক লুটেরাদের মচ্ছব: একটা দেশ কীভাবে বেদখল হয়ে যায়!

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আচ্ছা এই যে শেখ হাসিনা রেজিমের গত ১০ বছরে প্রায় ডজন খানেক ব্যাংক থেকে লক্ষ কোটি টাকার বেশি লুটপাট করা হলো (সর্বশেষ বেসরকারি খাতের অন্যতম সফল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হলো), এগুলো কার টাকা? সরকারের? সরকার দলের লোকজনের? না, এই টাকার বেশিরভাগ আপনার, আমার, বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের তিল-তিল করে জমানো টাকা। জীবন-যৌবন বন্ধক রেখে প্রবাসে খেটে খাওয়া মানুষের পাঠানো রেমিটেন্স। ৪০ লক্ষ পোশাক শ্রমিকের জীবনী শক্তি নিংড়ে নিঃশেষ করে দেওয়া পরিশ্রমের ফসল রপ্তানি আয়।

আফসোস! দেশের মানুষের বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, গরীব, খেটে-খাওয়া মানুষের অর্জিত, ব্যাংকে সঞ্চিত এই বিপুল পরিমাণ টাকা লুটপাট ও পাচার করে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নাকি এখন সিংগাপুরের শীর্ষ ধনীদের কাতারে!! কী অবাক করা কাণ্ড!! আগে বিদেশী বেনিয়া ব্রিটিশরা, পাকিস্তানিরা এই দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে, এখন বাংলাদেশের দস্যুরা। নিঃসন্দেহে, শেখ হাসিনা সরকারের আগেও বাংলাদেশ থেকে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী দুর্বৃত্ত শ্রেণি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে, কিন্তু কোন সরকারের সরাসরি আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এত বিপুল বিক্রমে ব্যাংক খাত লুটপাটের কোন নজির বাংলাদেশে গত ৭০ বছরে নাই।

নিন্দুকেরা জানতে চান, ব্যক্তি শেখ হাসিনার দায় কতটুকু? ব্যক্তি শেখ হাসিনার দায় আছে কি নাই সেটি সময় বলে দিবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্টত দায় আছে, এবং সেটি দুইভাবে। প্রথমত, তিনি ক্ষমতায় আসার পর সবগুলো সরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সেখানে গণহারে নিজ দলীয় ক্যাডারদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যাদের দৃশ্যত একমাত্র মন্ত্রই ছিলো কীভাবে দুই নম্বরি করে টাকা কামানো যায়! এই যাদের ইচ্ছা, তাদের হাতে দেশের ব্যাংক খাত কে তুলে দিয়েছে? শেখ হাসিনার সরকারের নীতি। মূলত, এই লোকদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ নেতৃত্ব, যোগসাজশেই সরকারি ব্যাংকগুলোর লুটপাট সম্পন্ন হয়েছে। এতেই অবশ্য শেখ হাসিনা সরকার ক্ষান্ত হয় নাই। বেসরকারি খাতের সফল ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকসহ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে “রাজাকার-মুক্ত” করে ”একাত্তরের চেতনা” প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াসে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজনৈতিক পেশিশক্তি ব্যবহার করে এই ব্যাংকগুলোকে দিনে-দুপুরে জবরদখল করা হয়। ফলাফল: এই ব্যাংকগুলোকেও ফোকলা করে জনগণের প্রায় লক্ষ-কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। নিজেদের প্রশ্ন করেন, এসআলম গ্রুপের হাতে দেশের আর্থিক খাতের এতগুলো ব্যাংক কে তুলে দিয়েছে? আপনি কি মনে করেন, শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে আর কারও এত বড় ক্ষমতা আছে? না, কারো নাই। সুতরাং এই লুটপাটের সরাসরি দায় শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আরেকভাবে এই সংশ্লিষ্টতা খুঁজতে পারেন। গত ১০ বছরে এই শীর্ষ লুটপাটের নেপথ্যের হোতাদের কোন একজনকেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দূরে থাক, এমনকি চিহ্নিতও করা হয়েছে? হয়নি। বরং আমরা দেখেছি তাদের বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষায় আড়াল করা হয়েছে। কেন নেপথ্যের কারিগরকের চিহ্নিত ও সাজা হয়নি? উত্তর কি এটা যে যারা সাজার আয়োজন করবেন ও সাজা দিবেন, এই লুটের ভাগের অংশ তারাও পেয়েছেন? নিজেই উত্তর খুুঁজুন। আকলমান্দ্ কে লিয়ে ইশারাই কাফি।

এই যে একাত্তরের চেতনার নামে রাতের অন্ধকারে ব্যালট বাক্স দখল করে জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করা, দেশে গুমের মতো নিকৃষ্ট মানবতা বিরোধী অপরাধ চালু করা, এবং একাত্তরের চেতনাকে ঢাল বানিয়ে জনগণের কষ্টার্জিত লক্ষ-কোটি টাকা লুটপাট -- আপনি কি মনে করেন ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে করা এই বেঈমানীর দায়ে শহীদরা শেখ হাসিনা ও তার পোষ্যদের ক্ষমা করবে?

প্রশ্ন উঠতে পারে, এই লুটেরাদের রাম রাজত্বে জনগণের কি ব্যাংকে টাকা রাখার ঠেকা পড়েছে? না, পড়ে নাই। মানুষের উচিত নিজেদের টাকার নিরাপত্তার জন্য টাকা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করা, আর কিছু না পারলে জমি-সোনাদানা কেনা। কারণ যে হারে লুটপাট হচ্ছে, কিছু ব্যাংক পথে বসলে আশ্চর্য হবেন না। তখন, আপনার টাকার নিরাপত্তা কেউ দিবে না। সরকার নাকি আবার আইন করেছে যে, ব্যাংক দেউলিয়া হলে আপনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পাবেন! মানুষ ঠকানোর কী সুন্দর আয়োজন! চেতনার ষোলকলা পূর্ণ!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×