somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিল্ড্রেন অফ বোডম – দ্যা গড অফ মেটাল

০১ লা জুন, ২০১০ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি মেটাল গান শুনি খুব বেশী দিন ধরে নয়। বড়জোর ৪ বছর হবে। তবে প্রথম দিকে এক্সট্রিম মেটাল আমার ভালো লাগতো না। আমার সর্বোচ্চ দৌড় ছিল হেভী মেটাল পর্যন্ত। মেটালিকা, আয়রন মেইডেন এগুলো শুনেই ভাবতাম পৃথিবীর সেরা মেলোডিক গান শুনছি বোধহয়। পরে একসময় জেনেছি একটা ফিনিস ব্যান্ডের মেলোডি কত সহজেই না তথা কথিত বিশ্বসেরা আমেরিকান আর ব্রিটিশ মেটাল ব্যান্ডগুলোর মেলোডিকে হারিয়ে দিতে পারে। পাঠকরা হয়তো বুঝে ফেলেছেন আমি কোন ফিনিস ব্যান্ডের কথা বলছি। হা, আমি হাজারো মেটাল লাভারের স্বপ্নের ব্যান্ড এবং যারা সর্বপ্রথম গিটার এবং কিবোর্ডের বিস্ময়কর সমন্বয়ে ডেড মেটালকে মেলোডিক ডেড মেটাল নামে নতুন সংস্করণে উপস্থাপন করেছিল সেই চিল্ড্রেন অফ বোডমের কথাই বলছি।

মেটাল মিউজিক লাভারদেরকে চিল্ড্রেন অফ বোডম নামটির সাথে নতুন করে পরিচয় করে দেয়ার কিছু নেই। তবু যারা মেটাল মিউজিক পছন্দ করেন কিন্তু চিল্ড্রেন অফ বোডম নামটি দুর্ভাগ্যবশত আগে শোনেন নি,আজই প্রথম শুনলেন তাদের জন্য একটু ব্রিফ দিয়ে নিচ্ছি।



চিল্ড্রেন অফ বোডম হচ্ছে মেলোডিক ডেড মেটালের বিশ্বসেরা ব্যান্ডদের মধ্যে একটি এবং আমার দেখা সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ ব্যান্ড। যারা এক্সট্রিম মেটাল গানগুলোতে পাগল করে দেয়া মেলোডির সমন্বয় দেখতে চান তাদের জন্য চিল্ড্রেন অফ বোডমের চেয়ে ভাল আর কোনো ব্যান্ড হতে পারে বলে আমার মনে হয়না। আমি অবশ্য এটা বলতে চাচ্ছি না যে, অন্যান্য ডেড মেটাল ব্যান্ড যেমন ক্যানিবাল কর্পস, ল্যাম্ব অফ গড এদের গান ভালো না বা এদের মেলোডি নিম্ন মানের। এরা অবশ্যই ভালো। তবে মনে রাখবেন ক্যানিবাল কর্পস, ল্যাম্ব অফ গড এরা কিন্তু মেলোডিক ডেড মেটাল ব্যান্ড নয়, এরা হচ্ছে ব্রুটাল ডেড মেটাল ব্যান্ড। ব্রুটাল ডেড মেটাল যারা শোনেন তাদের কাছে অবশ্য ক্যানিবাল কর্পস, ল্যাম্ব অফ গড এগুলোই বেশী ভালো লাগবে। ব্রুটাল ডেড মেটাল অনেকটা থ্রাস মেটালের মত, সেখানে বিকট বিকট চিৎকার থাকবে সাথে থাকবে প্রচন্ড অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে বাজানো গিটারের মেলোডি (রিফ) সেই সাথে বুকের পাজর গুড়িয়ে দেয়ার মত ড্রাম বিট। তবে ব্রুটাল ডেড মেটাল সহ্য করা কষ্টকর,আমার নিজেরও সহ্য হয়না কারন সেখানে কিবোর্ডের কোন ব্যবহার থাকে না প্লাস ভোকাল হয় অনেক বেশী পাওয়ারফুল যা সিংহের গর্জনকেও হার মানায়। তাই এই সেকশনে গাইতে হলে ভোকালের গলায় সেই শক্তিশালী টোন থাকতে হবে জন্মগতভাবে। কিন্তু মেলোডিক ডেড মেটাল ব্যাপারটা একটু আলাদা। তাই ক্যানিবাল কর্পস, ল্যাম্ব অফ গড ইত্যাদির সাথে চিল্ড্রেন অফ বোডমকে তুলনা না করাটাই আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়, জানি না আপনারাও আমার সাথে একমত হবেন কিনা।

আলেক্সি লাইহো

যদি আপনি মনে করেন গান যতই মেটাল হোক তা অবশ্যই হতে হবে মেলোডি নির্ভর, সেখানে মেলোডিকে আলাদা করে অবশ্যই ফোকাস করতে হবে গানের পাশাপাশি এবং মেলোডি ও গান বিচ্ছিন্ন হতে পারবেনা না কখনোই, গানে ভোকালের গলার টোন এমন হবেনা যে তার টোনের নিচে মেলোডি চাপা পড়ে যাবে, তবে আপনি অবশ্যই মেলোডিক ডেড মেটাল শোনার চেষ্টা করবেন, ব্রুটাল নয়।
মেলোডিক ডেড মেটালের চূড়ান্ড স্বাদ আস্বাদনের জন্য আমার সাজেশন “চিল্ড্রেন অফ বোডম” অবশ্য “ইন ফ্লেমস” অথবা “ওপেথ” ও চলতে পারে। আরো একটি ব্যান্ডের মেলোডিক ডেড অবশ্য আমার ভালো লেগেছিল নাম হচ্ছে “ডিসারমোনিয়া মুনদি”, এটা সুইডেনের ব্যান্ড। সে যাই হোক এখন আর সেদিকে যেতে চাচ্ছি না।

আলেক্সি লাইহো

যেভাবে চিল্ড্রেন অফ বোডমের গানের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিলঃ

তখন আমি বাংলা মেটাল শুনতাম এবং তখন আমার কাছে সবচেয়ে সেরা মেটাল ব্যান্ড ছিল বাংলাদেশের ব্যান্ড “আর্টসেল”।

যাই হোক, একদিন কি একটা ওয়েব সাইট (সম্ভবত http://www.cooltoad.com) নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে করতে দেখলাম ওখানে সেকশন ওয়াইজ কিছু গান দেয়া। যেমন ডেথ মেটাল, ব্লাক মেটাল, নু মেটাল, ডার্ক মেটাল ইত্যাদি। কৌতহলবশত, আমি ডেথ মেটাল লেখা ফোন্ডারটিতে ক্লিক করলাম কারণ কিছুদিন আগে ডেথ মেটাল বিষয়ক কিছু বিস্ময়কর কথাবার্তা শুনেছিলাম এক বন্ধুর কাছে। আমি তখনও জানতাম না ওই ফোল্ডারে আমার জন্য কি বিস্ময় অপেক্ষা করছে। ফোল্ডারটির ভেতরে খুব বেশী হলে ১৫ টার মত গান ছিল। তার মধ্য থেকে একটা গান আমার দৃষ্টি আকর্ষন করল যার টাইটেল ছিল “EVERY TIME I DIE” কিন্তু গানটির সাথে আর্টিষ্টের নাম দেয়া ছিল না। আমি গানটি ডাউনলোড দিলাম। ডাউনলোড শেষ হওয়ার পর শুনলাম, শেষ হওয়ার পর আবার প্লে দিলাম, এরপর আবার, তারপর আবার। গানটা যতবার শুনি ততবারই মনে হয় আরো একবার শুনবো। এভাবে শুনতে শুনতে ঠিক কতবার শুনেছি বলতে পারবো না। তবে “EVERY TIME I DIE” - ই আমার আমার জীবনে সবচেয়ে বেশীবার শোনা গান এবং ওই গানটি শোনার পরই আমার নিজের একটা ব্যান্ড বানানোর ইচ্ছে জেগে উঠেছিল প্রবলভাবে। সেই ইচ্ছের জের ধরেই আজ আমি টিয়ারস অফ সাইলেন্স নামে একটা ব্যান্ড বানিয়েছি(প্রগরেসিভ রক)। পরে জানতে পেরেছিলাম “EVERY TIME I DIE” গানটি চিল্ড্রেন অফ বোডমের। সেই ছিল শুরু। এর পর চিল্ড্রেন অফ বোডমের সব গানই আমার হাজার হাজার বার শোনা হয়ে গেছে।

পাঠকগন, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন যে, চিল্ড্রেন অফ বোডম আমার কত প্রিয় একটি ব্যান্ড।


আলেক্সি লাইহো


এই ব্যান্ডের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মেম্বার হচ্ছে আলেক্সি লাইহো যিদি একাধারে ভোকালিষ্ট, লেইরিসিষ্ট, কম্পোজার এবং পৃথিবীর সর্বকালের ৫০ জন দ্রুতগতির গিটারিষ্টের একজন এবং বাংলাদেশী আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডের গিটারিষ্টদের অধিকাংশের মেইন ইনফ্লুয়েন্স, আমিও আছি তাদের মধ্যে।

চিল্ড্রেন অফ বোডমের লাইন আপঃ

Current members:

Alexi Laiho – lead vocals, lead guitar (since 1993)
Roope Latvala – rhythm guitar, backing vocals (since 2003)
Henkka Seppälä – bass, backing vocals (since 1996)
Janne Wirman – keyboards (since 1997)
Jaska Raatikainen – drums, percussion (since 1993)

Former members:

Alexander Kuoppala – rhythm guitar (1995–2003)
Jani Pirisjoki – keyboards (1995–1997)
Samuli Miettinen – bass guitar (1993–1995)


অ্যালবামঃ

Something Wild (1997)
Hatebreeder (1999)
Follow the Reaper (2000)
Hate Crew Deathroll (2003)
Are You Dead Yet? (2005)
Blooddrunk (2008)


আপনাদের সাথে তাদের কিছু গান শেয়ার করতে চাচ্ছি। আশা করি ভাল লাগবে।

১. Everytime I die ঃ Click This Link

২. Silent night, bodom night ঃ Click This Link

৩. Downfallঃ Click This Link

৪. Needled 24/7 ঃ Click This Link

৫. Are You Dead Yetঃ
Click This Link

৬. Lake bodom ঃ Click This Link

৭. Blooddrunk ঃ Click This Link


আশা করি লেখাটা আপনাদের ভালো লাগবে, যদি লাগে তাহলে আমারও ভালো লাগবে। এর পর dimmu borgir আর Bullet for my valentine নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক পারি কিনা। অবশ্য আপনাদের সমর্থন থাকলেই লিখব অন্যথায় নয়। ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য ।


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:২০
৪৪টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×