somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“নীরব অনুধাবন” – টিয়ারস অফ সাইলেন্সের ২য় গানের (ডেমো) ডাউনলোড লিংক

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
জ়ন রাসেল (ভোকালিষ্ট, লিরিসিষ্ট)

দীর্ঘ বিরতির পর আবারো আমরা নতুন একটি গানের কাজ শেষ করেছি। চেষ্টা করেছি আমাদের আগের গান “সাদা তুলির আচর” থেকে দূরে সরে নতুন কিছু করতে। আগের গানটি আমাদের প্রথম গান ছিল বলে সব কিছু ইচ্ছে করেই আমরা খুব সহজ সাবলীল রাখার চেষ্টা করেছিলাম। সেজন্য অল্প কয়েকজন শ্রোতা/মিউজিশিয়ান বিষয়টির সমালোচনাও করেছিলেন। এই গানটি শুনে আশা করছি আপনাদের তেমন মনে হবেনা। অনেকে আমাদের ফেসবুক পেজে বলেছিলেন আরেকটু স্পিডি, আরেকটু গভীর লিরিক্স আর আরেকটু মেটালিক সাউন্ড চান আপনারা। এই গানটিতে আমরা আমাদের জেনেরো (প্রগ্রেসিভ রক) সীমার ভেতরে থেকে শ্রোতাদের অনুরোধগুলোর প্রতিফলন দেখানোর চেষ্টা করেছি তবে অবশ্যই আগে আমাদের নিজেদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে।

মানিক খান (গিটারিষ্ট, কম্পোজার)


গানটির শুরুটা একদমই হালকা মেজাজে হলেও শেষ দিকে বেশ ভারী কিছু টোন আনা হয়েছে কিছুটা মেটাল ফ্লেভার আনার জন্য। আর আমাদের ব্যান্ডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যেটা “গানের শক্তিশালী জায়গাগুলোতে অ্যাকোষ্টিক গীটারের উল্লেখযোগ্য ব্যবহার” সেটাও এই গানে পাবেন। অ্যাকুষ্টিক গীটার প্রথম দিকে অনেকক্ষন চলে ব্যাকগ্রাউন্ডে এবং এক পর্যায় গানের কিছু অংশে এককভাবে পরিচালনাও করে, লীড আসার আগ পর্যন্ত।

হিমেল হাসান (ব্যাক-আপ ভোকালিষ্ট)



লিরিক্সটাতে কি বোঝানো হয়েছে সেটা একটু চিন্তা করলে সহজেই ধরে ফেলতে পারবেন। ইচ্ছে করেই লিরিক্সটা একটু ভাসা ভাসা রাখা হয়েছে যাতে আপনি আপনার ইচ্ছেমত সাজিয়ে নিতে পারেন লিরিক্সের পটভূমিটা। তবে আমরা অবশ্য লিরিক্সটাতে একটা জিনিস তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম। সেটা ছিল এরকমঃ

ফয়সাল খান (বেইসিষ্ট)

“একজন যোদ্ধা। সে দেশের জন্য নিজের সবকিছুই উজার করে দিয়েছিল। যুদ্ধ শেষে সে বিজয় নিয়েও ফিরেছিল। কিন্তু একসময় সে বুঝতে পারে যে, বিজয় নিয়ে সে ফিরেছে ঠিকই তবে, যেমন দেশকে দেখার জন্য সে তার সব উজার করে দিয়েছিল সেই দেশকে সে পায়নি। সে যে দেশ পেয়েছে, এই দেশের সাথে তার স্বপ্নের দেশের কোন মিল নেই বরং কোথায় যেন বড় কিছু অমিল রয়ে গেছে। এই দেশ তার ত্যাগের মূল্য দিতে জানে না। তাকে তার বীরত্বের সম্মান না দিয়ে বরং কিছু নীরব সান্ত্বনা নিয়েই বেচে থাকতে বলে। যোদ্ধাটি এই ব্যাপারগুলো মন থেকে মেনে নিতে পারে না। তার কাছে হিসেবটা কেমন যেন গড়মিল মনে হয়। সত্যের জন্য সারাজীবন যুদ্ধ করার পরও তার প্রাপ্তির খাতাটা আজ কেন এত মলিন? যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়েছে একসময় তাকে কেন আজ মাথা নত করে চলতে হয় পৃথিবীর বুকে? সে অনুভব করে যে, অন্ধকারে একাই সে দাড়িয়ে আছে মুক্তির গান নিয়ে, সেই গান শোনার মত কেউ নেই। তার কাছে মনে হয় তার গানগুলো বুঝি শব্দহীন হয়ে গেছে। তাই তার বিজয়ের মিছিলে কেউ তার পাশে নেই একরাশ কালো আধার ছাড়া। সবাই উদভ্রান্তের মত নিজ স্বার্থের পেছনে ছুটছে অবিরাম, এক মুহূর্ত দাড়ানোর সময়ও কারো নেই। এই কষ্ট সেই যোদ্ধাকে এইটাই পীড়া দেয় যে, সে এক সময় নিজেকে বলতে শুরু করে যে, এই দেশের জন্য আমি যুদ্ধ করিনি কোনদিনই, যে দেশের মানুষ আমার আত্নত্যাগের মূল্য দিতে জানে না এমন দেশের জন্য আমি কেনইবা যুদ্ধ করব? আমি বরং আমার নিজের প্রয়োজনেই যুদ্ধ করেছিলাম যেটা ছিল নিজ স্বার্থের অভিসারে চাপা। এই বলে সে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়। হয়তো তার আত্নত্যাগকে এই দেশ স্বীকৃতি দেয় নি, তবু তো বাস্তবতা থেমে নেই। সময়টা চলছে তার সহজাত নিয়মেই, চলছে তার জীবনটাও কিছু মিথ্যে স্বপ্নে আকা ছবি নিয়ে, তবে কিসের/কার বিরুদ্ধে সে অভিযোগ করবে? তাই আজ আর সে এসব প্রশ্নের উত্তর খোজে না। যে প্রশ্নের কোন উত্তর আজকের এই ব্যস্ত মানুষগুলো দিতে পারবেনা তার উত্তর খুজেই বা কি লাভ? কিইবা হবে অভিমান করে? কিছু অভিযোগ তো আর বদলে দিতে পারবেনা বাস্তবকে, পুনরায় রাঙিয়ে দিতে পারবেনা তার পেছনে ফেলে আসা সোনালী রংয়ের স্মৃতির অভিধানকে”।

রুপকাশ্রয়ে এখানে এই ব্যাপারটাই বোঝানো হয়েছে।

নোমান খান (ড্রামার)

লিরিক্সটা এরকমঃ


নীরব সান্তনা, নিয়ে চলেছি বহুদুর,

দিয়েছি সবই, পাইনি কিছু,

তবু কেন অভিনয় ?


নির্জন অভিমান, পেছনে ফেলে আসা স্মৃ্তির অভিধান,

বদলে গেছে হয়তো সবই,

রয়ে গেছে বিনিময়।



সবই ছিল প্রয়োজন, স্বার্থের অভিসারে চাপা,

জীবন তবু রয়ে যায়, চলে ছবি আকা।



চলতে চলতে পথে একা একা হেটে,

পিছু ফিরে দেখি শূন্যতা,

রাতের আধারে কুয়াশার চাদরে,

লুকোনো সব ব্যস্ততা ।



সঙ্গী আমার কিছু ধূসর মায়া,

কালো আধারে স্বপ্ন বাধা,

বেজে চলেছে শব্দহীন গান,

নীরবতায় অদৃশ্য টান ।


গভীর অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আমি,

একাকী দেখেছি স্বপ্নগুলো,

চলছে সময়, চলছে জীবন,

তবু কেন অভিযোগ (২)।



সবই ছিল প্রয়োজন, স্বার্থের অভিসারে চাপা,

জীবন তবু রয়ে যায়, চলে ছবি আকা।



চলতে চলতে পথে একা একা হেটে,

পিছু ফিরে দেখি শূন্যতা,

রাতের আধারে কুয়াশার চাদরে,

লুকোনো সব ব্যস্ততা ।



সঙ্গী আমার কিছু ধূসর মায়া,

কালো আধারে স্বপ্ন বাধা,

বেজে চলেছে শব্দহীন গান,

নীরবতায় অদৃশ্য টান ।



সবাইকে গানটি একবার হলেও শুনে দেখার অনুরোধ রইল। হয়তো ভাল লাগবে। যদিও আমাদের গান বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে আপনার ভালো লাগবেই। তবু আবারো বলছি, ভাল লাগবে অবশ্যই। হা হা। সো শুনে দেখবেন। আর ভাল খারাপ যেমনই লাগুক সেটা সম্ভব হলে আমাদের ফেসবুকের গ্রুপ অথবা পেজে গিয়ে জানিয়ে আসবেন। আগের গানে (সাদা তুলির আচর) খুব অল্প কিছু শ্রোতা নানা রকম সমালোচনা করলেও আমরা তাদের সমালোচনাকে স্যালুট জানাই। তাদের সমালোচনাকে আমরা অনুপ্রেরণা হিসেবেই নেয়ার চেষ্টা করেছি। আর আশা করছি এই গানটি এমনিতেই ভালো লাগবে। আর যদি ভালো না লাগে তাহলে কিছুই করার নেই। আগামীতে এর চেয়ে অনেক ভালো কিছু নিয়ে আসব, সেই ইচ্ছে ব্যক্ত করছি। অবশ্য জানা নেই, পারব কিনা।


সবশেষে ছোট্ট একটি কথা, পৃথিবীর কোন মিউজিশিয়ানই পরিপূ্র্ন নয়, হোক না সে যত বড়ই মিউজিশিয়ান। আর আমরা কোন বড় মিউজিশিয়ান না, মিউজিক আমাদের পেশাও নয়, মিউজিক আমাদের অনুপ্রেরণা, মিউজিক আমাদের ভালো লাগা, মিউজিক আমাদের নেশা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মিউজিক আমাদের নীরব প্রতিবাদের ভাষা। তাই আমাদের গানেও অনেক লিমিটেশন ছিল এবং আছে। সেসব লিমিটেশনের ভেতরে থেকেই ভালো কিছু “ভালো লাগা” উপহার দেয়ার উদ্দেশ্যেই গানগুলো করা। তাই শ্রোতাদের ভালো লাগলে আমাদের জন্য সেটাই অনেক বেশী হবে।


গানটির ডাউনলোড লিংকঃ নীরব অনুধাবন - টিয়ারস অফ সাইলেন্স

Detail Info:

Band: Tears Of Silence (TOS)

Song Title: Nirob Onudhabon

Genre: Progressive Rock

Country: Bangladesh (Dhaka)

Year: 2012

Download Link: নীরব অনুধাবন - টিয়ারস অফ সাইলেন্স


Contribution of Members in this Song:

Lead Vocals and Lyrics: Jon Rassel

Back up Vocals: Himel Hasan

Guitars, keyboard and entire composition: Manik Khan

Drums: Noman Rahman

Bass: Faisal Khan


আমাদের ওয়েব সাইটে পাবেন আমাদের যাবতীয় মিউজিক সংক্রান্ত আপডেটঃ http://www.tearsofsilencebd.com/


Official Page: Click This Link

Group: Click This Link


অফিসিয়াল লোগো।

সবাই ভাল থাকুন আর থাকুন আমাদের সাথেই। আল্লাহ হাফেয। m/

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৯
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×