শীত চলে গেছে। পঞ্জিকায় না হলেও, শারীরিক বোধ থেকে বসন্তও যাই যাই করছে। এখন ফজরের নামাযের পর পরই প্রাতঃভ্রমণের জন্য বের হলে প্রত্যুষের মনোরম স্নিগ্ধতায় শরীর মন জুড়িয়ে যায়। আর তার উপর যদি হাঁটার পথে রঙ বৈচিত্রে ভরপুর ফুলের সমাহার চোখে পড়ে, তাহলে তো কথাই নেই! আমি আমাদের এলাকার পরিচালনা পর্ষদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আমাদের হাঁটার পথ সংলগ্ন দু’পাশের খালি ভূমিতে সুন্দর সুন্দর কিছু ফুলের শয্যাবিন্যাস করার জন্য। বিকশিত ফুলগুলো এখন খুবই দৃষ্টিনন্দন, মনোমুগ্ধকর।
সুপ্রভাত!
Morning greetings!!!!
ভালবাসার রঙ
Colors of love
আজ দু’দিন ধরে সকালের ঐ সময়টাতে আমি হাঁটতে বের হচ্ছি। হাঁটার উদ্দেশ্য মূলতঃ শরীর থেকে ঘাম ঝরানো, অর্থাৎ ক্যালরি বার্ন, এবং সেই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষদের বিচিত্র সব পোষাকে হন্তদন্ত হয়ে হাঁটতে দেখি, কখনো মৃদু দৌড়াতে। আমি হাঁটাটাকে উপভোগ করতে চাই, তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত গতি বাড়াই না। বরং চলার পথে পথিপার্শ্বস্থ সৌন্দর্য দেখে দেখে পথ চলতে থাকি। ছোট ছোট পাখিরা খুঁটে খুঁটে আধার খায়, পথের আশে পাশে বেশ সুন্দর কিছু ফুল ফুটে থাকে, মৃদু বাতাসে তারা আন্দোলিত হয়, আর আমার ফুলে ফুলে ঢঁলে ঢঁলে গানটার কথা মনে পড়ে। একটা আয়তক্ষেত্রাকার বড় দিঘীর চারপাশ দিয়ে আমাদের হাঁটার পথ। পথটা একমুখী। তাই হাঁটার সময় মনে হয়, সবাই বুঝি একই গন্তব্যের প্রতি ধাবমান, যা প্রকৃতই সত্য। আমাদের সবার গন্তব্যই তো এক!
বাসন্তী প্রত্যুষের হাল্কা বায়ু প্রবাহ দিঘীর জলে মৃদুহিল্লোল তুলে, তির তির করে প্রবহমান সেই হিল্লোল চোখ জুড়িয়ে দেয়। বহু পরিচিত মুখকে আপন গতিতে হাঁটতে দেখি, তাদের বেশিরভাগই নিজস্ব ছন্দ এবং লয় মেনে চলে হেঁটে যান। অতিক্রম করার সময় বড় জোর একটু মৃদু হাসি কিংবা হাত তুলে ইশারায় অভিবাদন বিনিময় করে চলে যান। এটা আমার ভাল লাগে। আবার কেউ কেউ অপেক্ষা করতে থাকেন, সাথে যোগ দিয়ে তার পছন্দের কোন বিষয়ে আলাপ জুড়ে দেয়ার জন্য, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এসব আলাপে আমি সাধারণতঃ নিজ থেকে অনাগ্রহী থাকি, তবে কেউ আলাপ জুড়ে দিলে তার সাথে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করি না। অনাগ্রহের কারণ, আলাপ একবার শুরু হলে পথ ও প্রকৃ্তির ছোট খাট আকর্ষণগুলো আর চোখে পড়ে না। গতকাল একজন এমন আলাপ জুড়ে দিয়েছিলেন, তাই ইচ্ছে থাকা সত্তেও গতকাল কোন ছবি তুলতে পারিনি। আজ সকালে মোটামুটি একাই হাঁটলাম। হাঁটার সময় যেসব ফুলেল সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে, তার কয়েকটি ছবি এখানে দিলাম।
ঢাকা
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
মনোমুগ্ধকর ফার্ন
Fascinating ferns....
মনোহর লাবণ্য
Charming beauty
সতেজতার প্রতীক
Symbol of freshness
এখানে প্রায়ই পাখি বসে
A favorite place for the small birds
নিষ্পাপ শুভ্রতা
Innocence
সৌম্য, সুন্দর....
A thing of beauty ....
রঙের সমাহার
Multi colors!
প্রত্যুষের সস্মিত অভিবাদন
Fresh morning smiles....
রং বৈচিত্র
A motley mixture
গাঁদা বৈচিত্র
Myriads of marigold
উপেক্ষিতা
Uncared for
ক্ষুদে রাজকন্যার দল
Little princesses
আড়াল থেকে অভিবাদন
Greetings from the sideways....
চোখ জুড়ানো
Eye soothing!
সলাজ অভিবাদন
Shy greetings!
এই পুকুরটার চারপাশ দিয়েই আমরা হাঁটি। একবার চক্কর দিলে হয় ৫২০ মিটার।
মাছরাঙাটি শিকারের অপেক্ষায়, নাকি বিশ্রামরত- ঠিক জানিনা। গ্রামে-গঞ্জে হলে সে হয়তো বসে থাকতো কোন গাছের ডালে কিংবা ভাসমান কচুরীপানায়, কিন্তু নাগরিক জীবনে তার বসার জন্য বরাদ্দ রয়েছে এসএস রেলিং। ক্লান্ত দুপুরে শান্ত জলের ওপর ওপারের দালানকোঠার ছায়া পড়েছে, গাছপালার ছায়া হলে কত না শোভন ও সুন্দর হতো! (ছবিটি আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ তারিখে দুপুর ১২ঃ৩৯ এ তোলা)।
Instead of a tree bough, a brooding kingfisher is sitting on a SS railing to catch its prey from the pond. The shades of the buildings on the other side of the pond falling on its placid water adds beauty to the scene. But, had there been trees instead of buildings, it would have certainly looked better. (The picture was taken at 12:39 today, 28 February 2019)
না, এই শেষের ছবিটা আমার হাঁটার পথের কোন ফুল নয়, এটা আমাদের ব্যালকনি-বাগানে আমার গিন্নীর নিবিড় পরিচর্যায় ফোটা একটি গাঁদা ফুলের ছবি।
This last picture was not taken from my walking track; this flower is from my balcony tubs, blossomed with the loving care of my wife.
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:২০