somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আচ্ছা আমরা নিজের জন্য কী করি?

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনের সাথে অনেক যুদ্ধ করে আজ দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছি। শুধু মাত্র স্বপ্ন পূরণের আসায়। এই যুদ্ধ কখন যে শেষ হবে তার কোন ইয়াত্তা নেই। জীবন পাথরের চেয়েও শক্ত, সহজে এর ক্ষয় ধরতে চায়না। এর উপর দিয়ে যতই জড় বৃষ্টি বয়ে যাক না কেনো, দিন শেষে আবারও সতেজ হয়ে উঠে জীবন। সামন্য এই কিছু সময়ের জীবনের জন্য মানুষ কত কি করে! মৃত্যু যে নিদিষ্ট একটা টাইমের মধ্যে হবেনা, এটা যেনেও মানুষ গতিবেগে হাটতে থাকে জীবন-জীবিকার সন্ধানে। মৃত্যুর এক সেকেন্ড আগেও মানুষ ভাবে জীবন যুদ্ধে কি জিততে পেরিছি আমি? কিন্তু সে জানেনা যে তার মৃত্যু এক সেকেন্ড পরই নিঃস্বেশ হয়ে যাবে এই সাধের দুনিয়া থেকে।

মানুষ তার স্বপ্ন পূরণের জন্য স্কুল থেকে চাকরি পাওয়া অব্দি পর্যন্ত স্বপ্নের পিছু পিছু দৌড়ায়। জীবনের ৫ থেকে ২৫ কিংবা ৩০টা বছর কোথা থেকে চলে যায় কেউ টেরই পায় না। কেউ বুঝতেই পারে না জীবনের এই ২৫/৩০টা বছর কোন কোন খাতে ব্যয় হলো। এর হিসাব কসতে গেলে রাতের পর রাত চলে যাবে কিন্তু হিসাব মিলাতে পারবে না।

এরপর ২৫/৩০ বছর পর কারো কপালে ভালো চাকরি জুটলে জুটে, না হলে কোন না কোন কর্ম করে খায়। চাকুরি, বিয়ে, স্ত্রী কিংবা স্বামী, সন্তান, বাবা, মা, ভাই-বোন, শশুড়-শাশুড়ি। এদের দায়িত্ব, কর্তব্য, চাহিদা, যত্ন, দেনা-পাওনা সকল কিছুর জন্য জীবনে সব কিছু বির্সজন দিতে হয়। এগুলো প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। কিন্তু আমরা প্রত্যেকে নিজের জন্য কী করি? ২৫/৩০ বছর পর কর্মক্ষেত্রে যখন নামি তখন তো আর সেটা নিজের জন্য হলো না। সেটা তো সংসার বাঁচানোর তাগিদ, কিভাবে দুটো টাকা ইনকাম করবো, কিভাবে সংসার টিকিয়ে রাখবো, কিভাবে সন্তানদের ভবিষৎ উজ্জ্বল করবো সেই তাগিদে থাকি, সেটা নিয়েই তো ব্যস্ত হয়ে পরি এই দুনিয়ার মোহতে। তখন তো নিজের কথাটাই আমরা প্রত্যেকে ভুলে যাই। যে নিজের মধ্যে আরো একটা প্রাণ বাস করে। সেই প্রাণকেই না হয় প্রশ্ন করুন? সেই প্রাণের কি কোন সস্তি দেই আমরা?


আমরা দৈনন্দিন জীবনে, সংসারের খুটিনাটি কাজ, অফিস, রান্না-বান্না, বাজার-ঘাট, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম। সবটাই করি সংসার কিংবা পরিবারের জন্য। বিনোদন হিসাবে আমরা পারিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, শপিংয়ে যাওয়া, সিনেমা দেখতে যাওয়া সবই করি। কিন্তু নিজের জন্য কী করি? আপনি ভাবুন, আপনি যেই হোন ছেলে কিংবা মেয়ে, যেই লিঙ্গের মানুষ হোন আপনি শুধু একটু ভাবুন নিজের জন্য কখনো কি কিছু করেছেন এই ৫ থেকে ৬০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সের মানুষগুলোকে বলছি “নিজের জন্য কি করেছেন।” নিজের সখ, আহ্লদ, পছন্দ, অপছন্দ এই চাহিদাগুলো কি আপনার মিটাতে পারেন? শুধু একাকীত্ব একবার ভাবুন নিজের জন্য কি করেছেন! কেউ হয়তো বলবেন হুম আমি নিজের জন্য সবই করি আমি বলবো না। নিজের জন্য কিছুই করেন না। সবটাই অন্যের জন্য করেন।


ধরুন একটা ফল গাছ- এই গাছটি থেকে আমরা ১২ মাসই ফল পাই। এটাতে আমরা যত্ন, সার, পানি দেই কিংবা না দেই। ও, ওর মতো সারা মাসই ফল দিয়ে যায়। একটা সময় ফলগুলো খুব ছোট আর রোগাটে হয়। গাছটি কিছুদিন পর থুবড়ে মাটিতে পরে যায়। কারণ গাছটি খুব দুর্বল। অন্যের জন্য সেবা দিতে দিতে নিজেই নিঃস্বেশ হয়ে যায়। আর গাছের মালিক ঠিকই বললো গাছটির বয়স হয়ে গেছে তাই হয়তো পড়ে গেছে। কিন্তু সে এটা বুঝলো না যে- যত্ন, সার কিংবা পানির অভাবে অকালের রোগা হয়ে থুবড়ে পরে গেছে। যদি একটু যত্ন বা এর গোড়ায় পানি কিংবা সার দেওয়া হতো তাহলে এতো তাড়াতাড়ি দূর্বল হয়ে পড়ে যেতো না। এটা তো একটা উদাহরণ-

মানুষও তো এমনি হয়, নিজের মনের চাহিদা, শরীরের যত্নের অভাবে একটা সময় শরীর দূর্বল হয়ে যায়। বাসা বাধে শরীরের বিভিন্ন রোগ। তখন নিজেরও মনে হয় “নিজের জন্য কী করলাম”। সবটাই তো অন্যের জন্য করলাম। যখন একটা মানুষ হাসপাতালের বেডে কিংবা বাসার বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরায়, যখন অন্যের অধীনে ছাড়া নিজে এক গ্লাস পানি ঢেলেও খেতে পারে না। তখন মানুষ জীবনের হিসাব কসতে বসে। কিন্তু অঙ্কের ফল আর মিলে না। তখন মনে হয় জীবন কোথার থেকে শুরু হলো আর কোথায় এসে শেষ হলো! এর যোগফল মিলাতে পারছি না!


তাই নিজের জন্য কিছু করুন- শুধু বাসা টু অফিস, বাজার টু রান্না, খাওয়া ঘুম সন্তানদের ভবিষৎ এগুলো থেকে একটু বিরত থাকুন। এগুলোর ফাকে একটু নিজের জন্য সময় বের করুন। সব ছেড়ে একটু নিজের জন্য বেরিয়ে পরুন অজানা কোন গন্তব্যে। কমলাপুর স্টেশনে এসে একটা টিকিট কেটে ছুটে যান কোন গন্তব্যে। সাগর পাড়ে যান, সিনেমা দেখুন, বই পড়ুন, গান শুনুন, গানে সুর ধরুন, ছবি আঁকুন, গল্প-কবিতা লেখুন। নিজের যা যা শখ আছে পুরণ করুন। নিজের জন্য পছন্দ মতো শপিং করুন, পছন্দ মতো খাবার খান, নিজের প্রতি যত্ন নেন এবং সুন্দর পৃথিবীটা উপভোগ করুন। তবেই নিজের উপর প্রশ্ন করার উত্তর পেয়ে যাবেন।

ইন্টারনেট থেকে ছবি সংগ্রহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৪
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×