somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিন্দুকেরা নিন্দার ফল পায় খুবই ভয়ংকর ভাবে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক দিন পর ফিরে আসা ব্লগে। জানিনা আমাকে সবাই ভুলে গেছে কিনা!, ভুলে যাওয়ারই কথা কারণ একটা সময় সবাই সবাইকে ভুলে যায়, ভুলে গেছে আর ভুলে যাবে এটাই নিয়ম পৃথিবীর। আসলে অফিস, অন-লাইনে কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছি তাই এখানে সময় দিতে পারছি না।

হঠাৎ করে ছোটবেলার একটা কথা মনে পরে গেলো। এই ২০১০/১১/১২ এর কথা। তখন আমি স্কুল পাশ করে কলেজে ভর্তি
হয়েছি। এক অজপাড়াগায়ের মেয়ে। আসেপাশের সবাই ভাবতো “পুরনো পাগলের ভাত নেই, নতুন পাগলের আমদানি”। বাক্যটা পাড়াপ্রতিবেশির মুখ থেকেই শোনা, তই এখনো মনে আছে।

যখন স্কুলে পড়ি তখন আমার বয়সি অনেক মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। তখন থেকেই ভাবতাম আহ! এতো ছোট বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়! কিন্তু কখনো মনে ভয়, বা অনুশোচনা হয়নি। বা কারো কথা শুনার মতো সময়ও ছিলো না। নিজেকে নিজের মতো ভাবতাম। অন্যকে ভাবার সময়ই দিতাম না।

ভয়, বা অনুশোচনা হয়নি এই শব্দ দুটোর মানি অনেকেই জানতে চাইতে পারেন। এর মানে হলো অন্যদের বিয়ে হলে- মনে একটা ভয় কাজ করে। সেটা সবার বেলায়ই হয় ছেলে কিংবা মেয়ে। ভয়টা হলো- মানুষ কি বলবে,। আর অনুশোচনা এর মানি হলো নিজেকে অপরাধি ভাবা, নিজেই নিজেকে দোষারোপ করা- ইস ওরা বিয়ে হচ্ছে আমার হচ্ছেনা। এই শব্দ ‍দুটোর মানি হলো এটাই। তবে এই দুটোর কোনটাই আমার মনে কখানো কোন ব্যপারেই কাজ করতো না। তাই আমি লাকি।

এখন বলি আসল কথা। এরকম আসে পাশের মেয়েদের যখন বিয়ে হতো আর ছোট ছোট ছেলেরা যখন পড়া লেখা না করে বিদেশে কিংবা ক্ষেতে-খামারে কাজ করতো তখন শুনতাম- আহ! বিয়ে হয়ে গেছে ঐ বাড়ির মেয়েটার, এখন বাবা-মা চিন্তামুক্ত। আহা! ছেলে কামাইসুদ (কাজের উপযোগী) হয়ে গেছে এখন আর টাকা পয়সার অভাব নাই, বাবা-মা চিন্তুমুক্ত। এই কথা গুলো বলে পাড়ার এক ধরনের আজাইরা মানুষেরা। যদিও মা এই ব্যপারগুলোতে মাঝে মাঝে কান দিতেন। গ্রামের মানুষ তো তাই হয়তো এই রকম অভ্যাস। কিন্তু বাবা কখনো এর ধারে কাছেও ছিলেন না। বাবা বলতে আমার মেয়েকে ইনঞ্জিনিয়ার বানাবো।



যখন স্কুল থেকে কলেজে পা দিলাম আশে পাশের অনেক বলতো- মেয়ে বিয়ে দিবেন না? মেয়ে তো বড় হয়ে গেছে এখন বিয়ে দেন। যখন আমার কানের সামনে কেউ এসে বলতো তখন তার উত্তরটা খুব করা ভাবেই দিতাম। বলতাম বিয়ের শখ হলে আপনে আরেকটা বিয়ে করে নেন না। কেনো আমাকে ডিস্টাব করছেন। অনেকেই ডিস্টাব মানে বুঝতেন না তাই মুখটা কুচকে চলে যেতো। অনেককেই আবার মা বলতো আমার মেয়েকে পড়া লেখা করাবো, চাকরি বাকরি করবে তারপর নিজেরটা নিজেই বিয়ে করে নিবে। এটা নিয়ে আপনাদের মাথা ঘামাতে হবেনা। আর তখনি পাড়াপ্রতিবেশিরা সুর ধরতো “পুরনো পাগলের ভাত নেই, নতুন পাগলের আমদানি” অনেকে বলতে মেয়ে নাকি পড়ালেহা (পড়ালেখা) করবে, মেয়ে চাকলি (চাকরি) করবে। দেখুম কি করে মেয়ে। মুখ বেচকিয়ে কথা গুলো অনেকেই বলতো।


এই কথা গুলো যারা বলতো তাদের কথায় কখনোই কান দিতাম না। তাদের থেকে অনেকটা এড়িয়ে চলতাম। এখন বড় হয়েছি, পড়াশুনা শেষ করেছি একটা জব ও করি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা প্রতিষ্ঠানে। যা এই বয়সে ভাবাই যায়না। আমার কাছে এখন একটা ভালো সার্টিফিকেট আছে (বাবার স্বপ্ন), একটা ভালো চাকুরি আছে, লাইফ সেটেল করার মতো অনেক পথ খোলা আমার জন্য, আমার ভালো একটা বরও আছে। আজ আমি তাদের সামনে দিয়ে বুক ফুলিয়ে হাটি কিন্তু প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কখনোই কোন কথা শুনাই না। কারণ আল্লাহ এটা পছন্দ করেন না।

তারা বলতো তাদের মেয়েদের ভালো জায়গায় বিয়ে দিয়েছে বড়লোক জাইমা, টাকা ওয়ালা জামাই। কিন্তু তারা আজ আমার থেকে অনেক নিচের লেভেলে পরে আছে কেউ তারা সুখি না। সবাই অসুখি। হয়তো তারা এখন ভাবে আমাকে ওরকম করে বলাটা তাদের মোটেও উচিত হয়নি। তাই কখনো কাউকে নিন্দা করা উচিত না, কাউকে কষ্ট দিয়ে কথা বলাও উচিত না। সেটা নিজের গায়েই লাগে।



আমার জীবনের একটা ঘটনা বলে শেষ করি। আমার অফিসের একজন বড় বস, মহিলা বস- উনি একজন মহাব্যবস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করা মানুষ। বয়সের দিক থেকেই সে অনেক বড়, আমার মায়ের বয়সি। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা মানুষকে সম্মান বা স্নেহ কোনটাই দিতে পারে না। উনি একদিন আমাকে দোষ ছাড়াই ভুল বুঝে বলেছিলো আমি নাকি কাজের অযোগ্য। কথাটা শুনে আমার বিষন খারাপ লেগেছিলো, কান্নাও করেছিলাম। কিন্তু আমার কোন দোষ ছিলোনা যার ছিলে সে আমাকে ফাসিয়ে দিয়েছে। তবে উনি বুঝতে পেরে পরবর্তিতে সেটা নিয়ে আমার কাছে সরিও বলেছে। কিন্তু আমার চোখের পানিটাতো সৃষ্ট্রিকর্তা সাথে সাথে কবুল করেছেন। তাকে এই কথাটি ব্যাক দেওয়ার জন্য। ঠিক ছয় মাস পর ঐ বসকে তার আবার বড় বস ভরা সভার মধ্যে প্রায় ৩০/৪০ জন মানুষের সামনে কাজের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছিলেন। সেই ভরা সভায় আমিও ছিলাম। তখন আমার মনে হলো নিশ্চয় আল্লাহ আজ আমার কথাটা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

তাই কাউকে কখনো নিন্দা করা, মুখ কুচকানো, বা বড় কথা শুনাতে নেই। কোন না কোন দিন এর জবাব তাকে পেতে হয়। আর সেই জবাবটা খুবই ভয়ংকর ভাবেই পেতে হয়।

তাই সবাই নিন্দা বা সমালোচনা থেকে বিরত থাকুন।


ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯
১৮টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×