ধরাযাক, ‘আমি’ কোন হেরাগুহায় দীর্ঘকাল ধ্যানমগ্ন থাকার পর একখানা কিতাব হাতে জনসম্মুক্ষে আসিয়া ঘোষণা করিলাম- “ ইহা আসমানি কিতাব; ঈশ্বর এক অদৃশ্য দূত মারফত ইহা আমার উপর নাজেল করিয়াছেন। এবং পূর্ববর্তী নবী-রাসুল-প্রেরিত পুরুষ ও তাহাদের ধর্মগ্রন্থগুলোকে বাতিল ঘোষণা করিয়াছেন।” তখন নিশ্চয় আপনারা তীব্র বিদ্রুপসহ জানিতে চাহিবেন__ “তোমার বক্তব্য যে অসত্য নহে তাহার প্রমাণ কি?” তখন আমি আমার বক্তব্যের সত্যতার প্রমাণস্বরূপ ঐ কিতাব হইতে দু’খানা আয়াত (যথা, যিশু-র দ্বারা দ্বীনের দাওয়াত আজিও শেষ হয় নাই/ হিমেল দিবাকরকে শেষনবীরূপে পাঠাইয়াছি তাই!) স্বগর্বে আবৃত্তি করিয়া বলিলাম__ “ইহা যে সঠিক উক্ত কিতাবে তাহা ঈশ্বর নিজেই স্বীকার করিয়াছেন”। তখন নিশ্চয় আপনারা পুনরায় জানিতে চাহিবেন__ “এই আয়াত যে ঈশ্বরের বাণী তাহার প্রমাণ কি?” তখন আমি দৃঢ় কণ্ঠে ফের বলিলাম__ “ইহা যে ঈশ্বরের বাণী তাহার প্রমাণ আমি; ইহা ঈশ্বরের এক বিশেষ দূত মারফত আমার উপর নাজেল হইয়াছে। ঐ দূতকে কেউ না দেখিলেও, কেবল আমি দেখিতে পাই”। এবং প্রবল হুংকার সহিত আরও বলিলাম__ “শোন হে মুমিন, করিলে একিন- বেহেশতে হুরুন/ না করিলে দোজখে মিলিবে গু-মুত্র-আগুন/ না শুনিলে কথা/ কাটা হইব মাথা...” এভাবে আমার বক্তব্যের সত্যতার সাক্ষীস্বরূপ কিতাব, কিতাবের সত্যতার সাক্ষীস্বরূপ আমি কেন্দ্রিক বাদানুবাদ চলিতেই থাকিল...
উপরোক্ত ঘটনার মত করে যদি কোন ‘আমি’ লোভ ও ভয়কে পুঁজি করে নিজেকে নবী দাবী করেন,এবং তার বক্তব্যের সত্যতার প্রমাণ হিসেবে একটা ‘আসমানি কিতাব’-এর বক্তব্যকে সাক্ষী মানেন; আবার ‘আসমানি কিতাব’-এর বক্তব্যের সত্যতার প্রমাণ হিসেবে নিজের বক্তব্যকে সাক্ষী মানেন। অর্থাৎ তিনি যদি এরকম চক্রিক যুক্তির মাধ্যমে নিজেকে নবী বলে দাবী করেন, তবে আপনারা কি তা মেনে নিবেন? যদি না মানেন, তবে কেন মানবেন না তা যুক্তিসহকারে ব্যাখ্যা করুন...
০১-০১-২০১২ইং
বেলকম, সাউথ আফ্রিকা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:০৮