somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসসালামুআলাইকুম।
আমরা অনেকেই ইসলাম নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকি। আমি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস তুলে ধরলাম। নানা দিক দিয়ে এটা গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ের অন্তরভূক্ত।
হাদিসটি সহীহ আল বুখারী থেকে তুলে ধরা হলো। প্রথমে বন্ধুদেরকে আমি মূল গ্রন্থের সাথে হাদিসটি মিলিয়ে দেখতে অনুরোধ করছি। তারপর আমরা ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করবো। জ্ঞানী বন্ধুদের কাছ থেকে আমি কিছু বিষয়ে অবগত হতে পারবো বলে আশা রাখছি।

১৯৯১ সনের জুন মাসে আধুনিক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত সহীহ আল বুখারী এর ষষ্ঠ খন্ড থেকে ৬৩৫৭ নং হাদিসটি এখানে তুলে ধরলামঃ

অর্থঃ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাজেরদের কতক লোককে শিক্ষা দান করতাম। তন্মধ্যে আব্দুর রহমান ইবনে আওফ ছিলেন। এ সময় একদিন আমি তার মীনাস্থ বাড়ীতেই ছিলাম। আর তিনি ছিলেন উমর ইবনুল খাত্তাবের
সাথে তাঁর (উমরের) সর্বশেষ হজ্জের সাথী। যখন আব্দুর রহমান আমার নিকট ফিরে আসলেন তখন তিনি (আমাকে লক্ষ্য করে) বললেন, যদি আপনি লোকটিকে দেখতেন! (তাহলে, এক আশ্চর্য বস্তুই দেখতেন। আর তা হচ্ছে এই,) জনৈক ব্যক্তি আজ আমীরুল মুমিনীনের নিকট এসে বললো, হে আমিরুল মুমিনীন! আপনি অমুক ব্যক্তি সম্বন্ধে কিছু মন্তব্য করতে পারেন কি? সে বলেছে, যদি উমর (রাঃ) মৃত্যুবরণ করে তাহলে আমরা অমুকের (তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহর) হাতে বায়াত করে নেবো। আল্লাহর কসম! আবু বকর (রাঃ) এর বাইয়াতও হঠাৎ করেই সংঘটিত হয়েছিল। যা পূর্ব চিন্তা কিংবা পরামর্শভিত্তিক হয়নি। বরং পরামর্শ ব্যতিরেকে তাৎক্ষণিকই তা সমাপ্ত হয়ে গেছে। তার এ কথা শুনে উমার ভীষণভাবে রেগে গেলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ইনশাআল্লাহ আজ সন্ধ্যায় আমি অবশ্যই লোকদের মধ্যে দাড়াবো (অর্থাৎ ভাষণ দেবো)। আর সেসব বিভ্রান্ত সৃষ্টিকারী লোকদের
থেকে তাদেরকে সতর্ক করে দেবো, যারা তাদের ন্যায্য অধিকার আত্মসাৎ করতে চায়। আব্দুর রহমান বললেন, তখন আমি বললাম, হে আমিরুল মুমিনীন! আপনি এখন এ কাজ করবেন না। কেননা এটা হজ্জের সময়, একেবারে নীচু স্তরের সাধারণ এবং নির্বোধ অপরিণামদর্শী ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী লোকও এখানে একত্রিত হয়েছে। আর যখন আপনি ভাষণ দেবেন তখন এরাই আপনার নৈকট্যের সুযোগ লাভ করে আপনার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে বসবে। আর আমার আশংকা যে, আপনি যখন দাঁড়িয়ে কিছু বলবেন, তখন তা আপনার থেকে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যে, তা আর আয়াত্বাধীন থাকবে না। তারা আপনার কথাকে যথাযথভাবে আয়াত্বও করতে পারবে না। আর
যথাস্থানে ব্যবহারও করতে পারবে না। (ফলে এক মারাত্মক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে)। সুতরাং আপনার মদীনায় পৌঁছা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কেননা তা হচ্ছে হিজরত ও সুন্নাতের লীলাভূমি। তখন আপনি এককভাবে জ্ঞানী ও সুধী ব্যক্তিদের সাথে মিলিত
হjবেন। আর আপনি যা কিছু ব্যক্ত করতে চান তখন তা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারবেন, জ্ঞনী ব্যক্তিরা আপনার কথাগুলোকে হৃদয়ঙ্গম করবে আর
যথাস্থানে সেগুলোকে ব্যবহারও করবে। অতঃপর উমর (রাঃ) বললেনঃ জেনে নাও,
আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ মদীনায় পৌঁছে আমি সর্ব প্রথম এ কাজই করবো।
ইবনে আব্বাস বললেন, এরপর যিলহজ্জ মাসের শেষভাগে আমরা মদীনায় আগমন করলাম।
যখন জুমআর দিন আসলো, সূর্য একটু ঝুকতেই আমি খুব তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন করলাম,
অবশেষে আমি মিম্বারের গোড়ায় সাঈদ ইবনে যায়েদ ইবনে আমর
ইবনে নুফাঈলকে উপবিষ্টবস্থায় পেলাম। অমনি তাঁর পাশে এমনভাবে বসে গেলাম
যে আমার হাঁটু তাঁর হাঁটুকে স্পর্শ করলো। আর দেরী হলো না তখনই উমর ইবনুল খাত্তাব
বেরিয়ে আসলেন। যখন আমি তাকে সামনে থেকে আসতে দেখলাম, তখন আমি সাঈদ
ইবনে যায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফাঈলকে বললাম, আজ অপরাহ্নে ইনি এমন কিছু
কথা অবশ্যই বলবেন যা তিনি খলিফা নিযুক্ত হওয়ার সময় থেকে আর কখনো বলেন নি।
কিন্তু তিনি (সাঈদ) আমার কথাটিকে উড়িয়ে দিলেন এবং বললেন,
আমি ধারণা করি না যে, তিনি (উমর) এমন কথা বলবেন যা এর পূর্বে বলেন নি। উমর
(রাঃ) এসেই মিম্বারের উপর বসলেন। যখন ঘোষকগণ নীরব হলেন, তিনি উঠে দাঁড়ালেন
এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে আল্লাহর প্রশংসা করলেন। অতঃপর বললেন, আজ
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে এমন কিছু কথা বলতে চাই যা বলার সাধ্য
আমাকে দেওয়া হয়েছে। এর পরিণাম সমন্ধে আমি অবগত নই। হতে পারে মৃত্যু আমার
সম্মুখেই। সুতরাং যে ব্যক্তি তা অনুধাবন করতঃ হৃদয়াঙ্গম করবে, সে যেন তা (আমার
কথাগুলো) সেই স্থান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয় যে পর্যন্ত তার সওয়ারী পৌঁছাবে। এবং যার
এই আশংকা আছে যে, সে তা অনুধাবন করতে পারবে না, তার জন্য হালাল (বৈধ)
হবে না যে, সে আমার উপর মিথ্যা আরোপ করে। নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা সত্য দ্বীন
দিয়েই মুহাম্মাদ (সাঃ)কে পাঠিয়েছেন। এবং তাঁর উপর কিতাব (আল কোরআনও) নাযিল
করেছেন। আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও রয়েছে। (অর্থাৎ
ব্যভিচারীকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা।) আমরা তা পড়েছি ও
বুঝেছি এবং হৃদয়াঙ্গমও করেছি। (ব্যভিচারীকে) রসুল্লাহ (সাঃ) রজম করেছেন এবং তাঁর
ওফাতের পরে আমরা রজম করেছি। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে যে, দীর্ঘযুগ পরে কোন
ব্যক্তি এ কথা বলতে চাইবে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাইনি।
ফলে আল্লাহর এ ফরযকে যা তিনি নাযিল করেছেন বর্জন করায় তারা সবাই গোমরাহ ও
পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহর কিতাবে এ কথা সুস্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি বিবাহিত হওয়ার
পর যেনা করবে, চাই সে পুরুষদের থেকে হোক কিংবা নারীদের থেকে, যখন প্রমাণ
পাওয়া যাবে, অথবা অবৈধ গর্ভ প্রমাণিত হবে, অথবা সে নিজেই স্বীকার করবে,
তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে হবে। অতঃপর আল্লাহর কিতাব
থেকে আমরা যা পড়েছি তন্মধ্যে এটাও পড়েছি যে, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার
বংশ পরিচয় থেকে বিমূখ হয়োনা। কেননা বাপ-দাদার পরিচয় থেকে বিমূখ
হওয়া তোমাদের জন্য কুফরী (শক্ত গোনাহর) কাজ। অথবা তিনি (উমর) বলেছেন,
ইহা তোমাদের মধ্যে কুফরী হবে, যদি তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার পরিচয় থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেও। রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সাবধান! তোমরা আমার প্রশংসায় অনুরূপ
সীমা লঙ্ঘন করো না যে রূপ ঈসা ইবনে মারিয়ামের প্রশংসায় সীমালঙ্ঘন করা হয়েছে।
বরং তোমরা বলো আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসুল! অতঃপর (উমর রাঃ) বললেন,
আমার নিকট এ কথা পৌঁছেছে যে, তোমাদের থেকে কেউ কেউ একথা বলতে চায়,
আল্লাহর কসম! যদি উমর মৃত্যু বরণ করে তাহলে আমরা অমুকের হাতে বাইয়াত করবো।
কিন্তু তোমাদেরকে কোন ব্যক্তি যেন কখনো এই প্রতারণায় না ফেলতে পারে,
সে বলবে আবু বকরের হাতে বাইয়াত পরামর্শ ব্যতিরেকে হঠাৎ
করে হয়েছে এবং তাৎক্ষনিকই শেষ হয়ে গেছে। সাবধান! তা অবশ্যই সেভাবেই হয়েছে।
তবে যাদের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন ছিল তারা সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু আল্লাহ তায়ালা এর ক্ষতি থেকেই রক্ষা করেছেন। আর তোমাদের মধ্যে আবু
বকরের সমকক্ষ এমন কেউ নেই; যার কাছে পৌঁছাতে সওয়ারীর ঘাড় ভেঙ্গে পড়ে। অতএব
মুসলমানদের থেকে যে কেউ পরামর্শ ব্যতিত কোন ব্যক্তির হাতে বাইয়াত করে তার
অনুসরণ করা যাবে না, এবং সে ব্যক্তিরও না, যে তাকে অনুসরণ করে। (ইসলামের) আত্ম-
চেতনাবোধ এটাই কামনা করে যে, এদের উভয়কে হত্যা করাই বাঞ্ছনীয়। কেননা,
আল্লাহ তায়লা যখন তাঁর নবী ওফাত করেন প্রকৃতপক্ষে তিনি (আবু বকর) ছিলেন
আমাদের মধ্যে সবার চাইতে উত্তম ব্যক্তি। অবশ্য আনসারগণ আমাদের
বিরোধিতা করেছে এবং তারা সবাই বনি সায়েদার চত্বরে একত্রিত হয়েছে। এমন
কি আলী, যুবাঈর এবং তাদের সাথীরাও আমাদের বিরোধীতা করেছে। মুহাজীররা আবু
বকরের নিকট একত্রিত হলো। এ সময়ে আমি আবু বকরকে বললাম, হে আবুবকর! চলুন
আমরা আমাদের আনসারী ভাইদের নিকট যাই এবং তাদের
উদ্দেশ্যে আমরা রওনা হলাম। যখন আমরা তাদের নিকটবর্তী হলাম তখন দুজন পূণ্যবান
ব্যক্তির সাথে আমাদের সাক্ষাত হলো। এবং লোকেরা কিসের উপরে ঐক্যমত
হয়েছে তাও উভয়ে জানালো, আর আমাদেরকে জিজ্ঞাস করলো, হে মোহাজেরগণ!
কোথায় এবং কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন? আমরা বললাম, আমাদের ঐসব আনসারী ভাইদের
উদ্দেশ্যেই যাচ্ছি! তখন তারা উভয়ে বললো, তাদের নিকট তোমাদের না যাওয়াই
বাঞ্ছনীয়, বরং তোমাদের যা করণীয় তাই করো। কিন্তু আমি বললাম, আল্লাহর কসম!
আমরা নিশ্চয়ই তাদের কাছে যাবো। অবশেষে আমরা চললাম এবং বনী সায়েদার
চত্বরে আমরা তাদের কাছে আসলাম। ইত্যবসরে চাদর আবৃত এক ব্যক্তিকে তাদের
মাঝে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তারা বললো, ইনি হচ্ছেন সাদ
ইবনে উবাদাহ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তার কী হয়েছে? তারা বলল,
ইনি জ্বরে আক্রান্ত। আর যখন আমরা সামান্য সময় বসলাম, তখনই তাদের খতিব
উঠে দাঁড়ালেন। এবং যথাযথ মর্যাদার সাথে আল্লাহর প্রসংশা করলেন। এরপর বললেন,
আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী এবং ইসলামের সৈনিক। আর হে মোহাজেরগণ!
তোমরা অতি নগণ্য একটি বিতাড়িত জামায়াত, যারা স্বজাতি থেকে বিতাড়িত
হয়েছো। আর তারা এটাই চাচ্ছে যে, আমাদেরকে মূল থেকে পর্যূদস্ত
করবে এবং খেলাফতের অংশ থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করে দেবে। উমর বললেন, যখন
তিনি বক্তৃতা বন্ধ করলেন, আমি কিছু কথা বলার ইচ্ছে করলাম যা আমাকে খুবই
স্বতঃস্ফূর্ত করে তুলেছে। তাই ইচ্ছে কররাম যে, আবু বকরের সামনেই তা তুলে ধরবো।
আর তিনি সীমা লঙ্ঘন করে যে সব অহেতুক উক্তি করেছেন তা খন্ডন করবো। কিন্তু
আমি যখন কথা বলার ইচ্ছা করলাম, তখন আবু বকর আমাকে বললেন, স্থির থাকো। আর
আমি তাকে নারাজ করাটা পছন্দ করলাম না। অতঃপর আবু বকর কথা বলতে শুরু করলেন।
প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন আমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী ও মর্যাদা সম্পন্ন। আল্লাহর কসম!
তিনি এমন কোন কথা বাদ দেননি যা আমার অন্তরে সাজানো ছিল
বলে আমাকে আনন্দিত করেছিল অথচ তিনি তাৎক্ষনিক অনুরূপ বরং তার
চেয়ে উত্তমভাবে তা পেশ করলেন। অবশেষে নীরব হলেন। অতঃপর তিনি বললেন,
(হে আনসারগণ!) তোমরা তোমাদের যেসব উত্তম কাজের কথা বলেছো,
বস্তুতঃ তোমরা সেটার অধীকারী বটে। কিন্তু এ-যে খেলাফতের ব্যাপার, তা কুরাইশ
ব্যতিত অন্যের জন্য স্বীকৃতি দেয়া যায় না। কারণ তারা হচ্ছে খান্দান ও আবাস ভূমির
দিক থেকে সর্বোত্তম আরব। এবং আমি তোমাদের জন্য এ দুব্যক্তি থেকে একজনকে পছন্দ
করি। সুতরাং এদের থেকে যাকে তোমরা চাও বাইয়াত করে নাও। এতটুকু বলার পর
তিনি আমার ও আবু উবাইদাহ ইবনে জাররাহ এর হাত ধরে ফেললেন। এ
সময়ে তিনি আমাদের দু জনের মাঝখানেই বসা ছিলেন। কিন্তু আমি তাঁর এ
কথাটি ছাড়া অন্য কোন কথাকে অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম! আমার জন্য এটা শ্রেয়
যে, আমি আমার ঘাড় সংহারের জন্য সম্মুখে অগ্রসর করে দেই ইহা (এভাবে মৃত্যুবরণ
করা) আমাকে সে পরিমাণ গুনাহে লিপ্ত করবে না, যে পরিমাণ আবু বকর যে জাতির
মধ্যে আছে, সে জাতির উপর আমি শাসক নিযুক্ত হই। হে আল্লাহ! এটা হতে পারে যে,
আমার আত্মা মৃত্যুর সময় এমন কিছু আকাংখা করতে পারে যা এ সময় আমি পাচ্ছি না।
এমন সময় আনসারদের এক ব্যক্তি (হুবাব ইবনে মুনযির) বলে উঠলো, আমি হলাম এ জাতির
মেরুদন্ড ও খান্দানী সম্ভ্রান্ত। সুতরাং হে কুরাইশগণ! আমার প্রস্তাবই অটল অনড়। অতএব
আমীর (শাসক) একজন হবেন আমাদের থেকে, আর একজন হবেন তোমাদের থেকে। এ
নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি ও হৈচৈ শুরু হয়ে গেল। অবশেষে আমি মতবিরোধ
দেখে ভীত হয়ে গেলাম। এ সময় আমি বললাম, হে আবু বকর আপনার হাত প্রশস্ত করুন।
তিনি হাত প্রশস্ত করলেন, অমনি আমি তাঁর হাতে বাইয়াত করলাম। এরপর
মুহাজেরীনরা তাঁর হাতে বাইয়াত করলো। পরে আনসারীরা বাইয়াত করলো। আর
আমরা সবাই সাদ ইবনে উবাদাহ থেকে কেটে পড়লাম। এ সময় তাদের থেকে এক
ব্যক্তি বলে উঠলো, তোমরা তো সাদ ইবনে উবাদাহকে হত্যা করে দিলে। কিন্তু
আমি বললাম, আল্লাহই সাদ ইবনে উবাদাহকে হত্যা করেছেন। উমর বললেন, আল্লাহর
কসম! আমাদের সম্মুখে উপস্থিত সমস্যার মধ্যে আবু বকরের বাইয়াত সমস্যার
চাইতে গুরুত্বপূর্ণ অন্য আর কিছুকে আমি অনুভব করিনি। {অর্থাৎ রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর
দাফন কাফনের চেয়ে বাইয়েতে আবু বকর তখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল} আমরা এ আশংকাও
করেছিলাম যে, যদি এখন মুসলমানদেরকে আমরা দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলি, আর বাইয়াত
অনুষ্ঠান না হয়ে যায় এবং তারা (আনসারীরা) এরপর কোন এক ব্যক্তির হাতে বাইয়াত
করে নেয়, তখন আমাদের সম্মুখে দুটি পথই খোলা থাকবে। হয়তো আমাদের ইচ্ছার
বিরুদ্ধে তাদেরকে অনুসরণ করতে হতো, অন্যথা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে হতো, ফলে এক
বিরাট ফ্যাসাদ সৃষ্টি হতো। অতএব যে ব্যক্তি মুসলমানদের সাথে পরামর্শ ব্যতিত অন্য
ব্যক্তির হাতে বাইয়াত করে এমতাবস্থায় তার অনুসরণ করা যাবে না। এবং তারও
না যে তার অনুসরণ করে। বরং এদের উভয়কে হত্যা করা উচিত।

৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×