
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ৩৭% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, আর আমাদের দেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের ঘুম উধাও। এমনিতেই বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা ভয়াবহ রকম কঠিন হয়ে উঠেছে, তার উপর এই ট্যাক্স—সোজা কথায়, মাথায় হাত।
এই ট্যাক্স আসলে কী?
৩৭% ট্যাক্স মানে হচ্ছে, যদি কোনো বাংলাদেশি পণ্য ১০০ ডলারে আমেরিকায় প্রবেশ করে, সেটার উপর ৩৭ ডলার অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। মানে পণ্যের দাম দাঁড়াবে ১৩৭ ডলার। এখন প্রশ্ন হলো, সেই বাড়তি দাম দিয়ে কে কিনবে?
উত্তর: কেউ না, যদি না সেটা কোনো যাদুর পণ্য হয়।
এর প্রভাব কী হতে পারে?
১. বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা কমবে।
ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, সবাই বসে নেই। তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন হবে।
২. রপ্তানির পরিমাণ কমবে।
ব্যবসায়ী যে পণ্য আমেরিকায় পাঠাতে চায়, সে যদি জানে তার পণ্য দাম বাড়ার কারণে বিক্রি হবে না, সে আর পাঠাবে না। এই সহজ অংকটাই অনেকে বুঝে না।
৩. কারখানা ও শ্রমিক সংকটে পড়বে।
রপ্তানি কমলে উৎপাদন কমবে, আর উৎপাদন কমলে চাকরি যাবে, এখানে কারও মনে দয়া কাজ করবে না।
বাংলাদেশ কী করতে পারে?
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় আলোচনায় বসা দরকার।
কোনো না কোনোভাবে GSP সুবিধা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে, যদিও সেটা এখন স্বপ্নের মতো শোনায়।
বিকল্প বাজার খোঁজা দরকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এশিয়ার উদীয়মান বাজার, এগুলো আমাদের নতুন লক্ষ্য হওয়া উচিত।
উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
শুধু গার্মেন্টস নয়, চামড়া, হস্তশিল্প, জাহাজ নির্মাণ, এসব ক্ষেত্রেও নজর দিতে হবে।
শেষ কথা
আমেরিকার এই ৩৭% শুল্ক অনেকটাই এক ধাক্কায় আমাদের রপ্তানি সম্ভাবনাকে নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে। তবে আমরা যদি এটাকে একটা রিয়েলিটি চেক হিসেবে নেই, তাহলে এটাও হতে পারে বদলের সূচনা। নয়তো, আমাদের শুধু ‘Made in Bangladesh’ লেখা ট্যাগই থাকবে, ক্রেতা থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৫:০৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




