
একসময় তিনি ছিলেন খান গ্রুপ অব কোম্পানির একজন প্রভাবশালী ডিরেক্টর। কোটি কোটি টাকার মালিক, অগাধ সম্পদের অধিকারী। স্ত্রী ছিলেন মাইলস্টোন কলেজের বাংলা মাধ্যমের শিক্ষিকা। দুই কন্যাসন্তান নিয়ে সাজানো সংসার সবকিছু যেন স্বপ্নের মতো ছিল।
কিন্তু সাফল্যের নেশায় তিনি ভুলে গিয়েছিলেন নিজের বাবা, মা, ভাই-বোনদের। কারও প্রতি ছিল না কোনো দায়িত্ববোধ বা মমতা। কেবল স্ত্রী আর শ্বশুরবাড়িই ছিলেন তাঁর জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।
সময়ের নির্মম পরিহাস একদিন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিনি। ব্রেন স্ট্রোকের পর হয়ে গেলেন প্যারালাইসড। সব হারালেন বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংক ব্যালান্স, সবকিছু। সেই প্রিয়তমা স্ত্রী, যাঁর জন্য তিনি সব ত্যাগ করেছিলেন, তিনিই দেড় বছর আগে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেলেন।
এখন তিনি পড়ে আছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একসময় ভাবা হয়েছিল তিনি হয়তো হারিয়ে গেছেন, কিন্তু অনেক কষ্টে পরিবারকে খুঁজে পাওয়া গেল।
কিন্তু সেই খোঁজে পাওয়া আরও বেদনাদায়ক। পরিবারের লোকেরা জানিয়ে দিলেন তাঁরা কোনো দায়িত্ব নিতে পারবেন না। মেয়ে, যে এখনো মাইলস্টোন কলেজে পড়ে, কেঁদে অনুরোধ করল এসব বিষয়ে না ঘাটাঘাটি করতে। কারণ, এসব জানাজানি হলে নাকি তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে।
ভাই-বোনেরা থাকেন ভারতে, তাঁদের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ নেই। ডাক্তাররা বলছেন, তিনি আর কখনো পুরোপুরি সুস্থ হবেন না। শরীরের এক পাশ পচে গেছে, কেবল যেটুকু সম্ভব চিকিৎসা চলছে। যদি বেঁচে থাকেন, শেষ ঠিকানা হবে ফরিদপুর বৃদ্ধাশ্রম।
জীবন কতটা অদ্ভুত, কতটা নির্মম এই মানুষটির গল্প যেন তারই এক নির্মম প্রমাণ।
যার জন্য জীবনভর আয়োজন, সেই আপনজনরাই একদিন মুখ ফিরিয়ে নেয়।
শেষে মানুষ হয়তো একাকী, নিঃস্ব আর নিঃসঙ্গ।
সত্যিই, কেউ কারো নয়।
ঘটনা সত্য এবং সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


