
হাসিনা রেজিমের পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ডক্টর মুহম্মদ ইউনুছের উপর পুর্ন আস্থা রেখেছিলাম। ওনার বয়স একটু বেশি হওয়ায়, ক্ষেত্র বিশেষ চেয়েছিলাম দীর্ঘদিন না হলে ও অন্তত ২-৩ বছর ক্ষমতায় থাকুক। কারন ছিল উনার গ্লোবাল ইনফ্লুয়েন্স, ইমেজ, রেপুটেশনে আর অর্থনীতির উপর জ্ঞান। আরো একটি কারন হচ্ছে গনতন্ত্রে নিয়ে ওনার ভাবনা। উনি প্রায়স দেশের বাইরে দেওয়া বিভিন্ন সাক্ষাৎকার এবং ওনার বই 'দ্যা ওয়াল্ড অফ থ্রি জিরোছ' শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, "অচিরই বিশ্ব গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধসে পড়বে"। কারন গনতন্ত্র ব্যাবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের কাছে জিম্মি। এর বাইরে ব্যুরোক্রেসি সহ আরোকিছু জটিলতায় গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অল্প সময়ে একটি জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও সামাজিক পরিবর্তনকে বাধাগ্রস্ত করে। এটা অবশ্য আমার নিজের বিশ্বাস।
ন্যায় বিচার, সচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, ব্যবসা ও বিদেশী বিনিয়োগ বান্ধব, ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণের ও বসবাস উপযোগী শহর বানানো, উন্নত জাতায়াত, শিক্ষা ব্যাবস্থা সংস্কার, কারিগর শিক্ষার মান উন্নয়ন, বিদেশি পর্যটন আকর্ষণ সর্বোপরি সকল মানুষের ব্যাক্তি স্বাধীনতা সর্বোচ্চ উপভোগ করা যেখানে ধর্ম ও সামাজিক রীতিনীতি কোন বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। যদি ও এই ধরনের সংস্কার একটি দীর্ঘ মেয়াদি প্রক্রিয়া তবু ও ইউনুস একটি রুপরেখা বা এমন মডেলের সমাজ ব্যবস্থার শুরু করে যেতে পারতেন; যেমনটা তিনি তার বইতে লিখেছিলেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের প্রসাশন, আইন, বিচারব্যবস্থা, অর্থনীতি কোন সেক্টর ই স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না। এমন অবস্থায় ঠিক হতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজনে হলে ও অসম্ভব কিছু নয়! কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আজকে এক বছরের কাছাকাছি দেশের আইনশৃঙ্খলা, অস্থিরতা, সামাজিক অবক্ষয়, বিচার বিভাগ, রাজনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। এর মধ্যে "মরার উপর খাড়ার ঘা" কিংস পার্টি এনসিপি! সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় এনসিপির তৈরি করা সকল এন্যারকি জায়েজ করে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে; বোঝানো হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের একমাত্র কান্ডারি এনসিপি।
৫ তারিখের পুর্বে কারও কারও বাবা রিকশা চালাতো, কারও বাবা ভ্যান চালাত, কারও বাবা প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতা করে কোন ভাবে জীবন নির্বাহ করতো। কেউ ছেঁড়া স্যান্ডেল পরে ক্লাসে যেত। কারও মানি ব্যাগে টাকাই থাকতো না। কেউ আবার অন্যের কাছ থেকে ধার-দেনা করে কোন ভাবে পড়াশুনা করছিলো। সেই ছাত্ররা কি চেরাগ পেলেন; ঘষা দিলেই কেউ প্রাডো গাড়িতে চড়ে, কেউ ডুপ্লেক্স বাড়ি বানায়! অসংলগ্ন বেফাঁস কথাবার্তা, রাজনৈতিক সামাজিক শিষ্টাচার এরা সীমা ছাড়ায়ে গেছে।
এক ব্যাংক রিজার্ভ, টাকার মান ধরে রাখা ও দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া আর কোন সেক্টর ই দৃশ্যত কোন পরিবর্তন নেই। আগামী কয়েক বছরে হবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই!! আদর্শগত ও রাজনৈতিক বিভক্তি এখন চরমে; এর একমাত্র সমাধান হয়তো হতে পারে শ্রীঘ্রই একটি ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচন...
আমার মন ডক্টর ইউনুস কে আরো কিছুদিন ক্ষমতায় থাকার সায় দিলে ও আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি, ব্যবসা পরিস্থিতির উন্নতি আর এনসিপির বেপরোয়া কর্মকাণ্ড আর জ্বলজেন্ত একটি বিপ্লবকে মানি মেশিন টার্ন ওভার করায় বিবেক বাধা দিচ্ছে। রাজনৈতিক এই জটিল সমীকরণ আমার অবস্থা এখন " বিঁধি তুমি বলে দাও, আমি কার..দুটি মানুষ একটি মনের দাবিদার......
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






