somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে কিছু সোজা-সাপ্টা কথা !!!

১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি সবসময় নিজেকে একজন পাঠক হিসেবে মনে করি। এই ব্লগিং প্ল্যাটফর্মের সাথে অনেকদিন ধরে যুক্ত থাকলেও পোস্টের সংখ্যা খুবই নগণ্য। কিন্তু এখন কিছু কথা না বলে পারছি না।

কোন প্রেক্ষাপটে গণজাগরণ মঞ্চের সৃষ্টি তা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সবাই জানে। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য। যার কারণে লাগাতার এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই অহিংস আন্দোলন চলছে। যেটি সারা বিশ্বে প্রসংশিত হয়েছে। মূলত কাদের মোল্লার যাবতজীবন রায়কে কেন্দ্র করে ৫ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ এই আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে শাহবাগ চত্বর এ।

শাহবাগের আন্দোলনকে অনেক রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে বা এখন করছে। শুরুতেই আসি বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কথায়। বিরোধীদল বিএনপি অভিযোগ করছে এটা গণজাগরণের মঞ্চ না এটা আওয়ামীলীগদের যারা সমর্থন করে তাদের সৃষ্ট। এটা যদি আওয়ামীলীগের সৃষ্ট হতো তাহলে আন্দোলনের তিন দিন পর তারা সংহতি প্রকাশ করত না। তারা তো সেদিনই প্রজন্ম চত্বরে আসতে পারত। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামীলীগও বুঝতে পারে নি বর্তমান প্রজন্মের ফেসবুক ব্যবহার করা ও চ্যাট করা যুবকেরা এইরকম একটি আন্দোলন করতে পারে।

যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যারা ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে এ বিষয়ে কোন সুস্থ, সচেতন ও দেশপ্রেমী বাঙালি দ্বিমত পোষণ করতে পারেন বলে আমার মনে হয় না। বিরোধীদল বিএনপি এই ট্রাইবুন্যালের সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আপনারা যদি পৃথিবীর অন্য দেশের যুদ্ধাপরাধের ট্রাইবুন্যাল সম্পর্কে নূন্যতম খোজ-খবর নিতেন তাহলে দেখতে পেতেন তার তুলনায় বাংলাদেশের এই ট্রাইবুন্যালের মান কোন অংশে কম না। প্রসঙ্গত নূরেমবার্গ ট্রাইবুন্যালের কথা বলা যেতে পারে।

আমরা কোন রাজনৈতিক দল বুঝি না। আমরা শুধু চাই এইসব যুদ্ধাপরাধীদের উপযুক্ত স্বাক্ষী-প্রমাণের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি। শাহবাগের মঞ্চ হলো সাধারণ জনতার মঞ্চ। সবার জন্য এর দুয়ার খোলা। যে সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন এই রাজাকারদের বিচার চান, তারা এই মঞ্চে শামিল হয়েছে।

আমরা দেখেছি কিভাবে বিএনপির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে শাহবাগের আন্দোলনের মঞ্চে আওয়ামীলীগ তাদের জায়গা শক্ত করেছে। শুধুমাত্র জামায়াত ইসলামীর সাথে মিত্রতা রক্ষা করার জন্য তারা শাহবাগে যান নি। আর এই সুযোগে মহাজোট সরকার এক সাথে দুই ঢিল মারছে। ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামীলীগ শাহবাগ এর সাথে খুব বেশি সম্পৃক্ত ছিল না এটা আপনারা সবাই দেখেছেন। বিএনপি শাহবাগের এই গণজাগরণকে বলে এই মহাজোট সরকারের সাজানো নাটক। কিন্তু জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে যদি বিএনপি প্রথমে গণজাগরণ মঞ্চে সংহতি প্রকাশ করত তাহলে এই নাটক বুমেরাং হয়ে এই মহাজোট সরকারকে বিদ্ধ করতো এটা সহজেই অনুমান করা যায়। তারপর হয়ত তত্তাবধায়ক সরকারের তাদের যে দাবি সেটি এই শাহবাদের মঞ্চ থেকেই উচ্চারিত হতো। শাহবাগের এই গণজাগরণ এখন একটা জিনিসই বোঝে সেটা হলো আপনি কোন দলের সে বিষয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই, তবে দাবিটা হতে হবে এক। আর সেটা হলো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি।

কিন্ত আন্দোলন-সংগ্রামের এক পর্যায়ে বিএনপি তাদের অবস্থান এখন পরিষ্কার করেছে। তারা ওই জামাত-শিবিরের পক্ষে। তারা তাদের বিচার চাই না। তারা দাবি করছে শুধু জামাত-বিএনপির রাজাকারদের বিচার করে এই সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করছে। আওয়ামীলীগের রাজাকারদের বিচার করছে না। আমরা সাধারণ জনগণ বলতে চাই, যদি আওয়ামীলীগের ভেতর রাজাকার, আলবদর থাকে তাদের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ সমেত মিডিয়ার সামনে ফাস করে দেন, তারপর যদি এই মহাজোট সরকার কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে তাদের জারিজুরি দেশের মানুষের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়বে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন যে, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীর একজন রাজাকার। আপনি আপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য-প্রমাণ মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করুন।

গোলাম আজম, মুজাহিদ, নিজামী, সাইদী, সাকা চৌধুরী, কাদের মোল্লা এরা যে স্বীকৃত রাজাকার তা ডিজিটাল মিডিয়ার কল্যাণে দেশের সব মানুষই তাদের অপকর্ম সম্পর্কে জানতে পেরেছে। তাই এদের বিরুদ্ধে কোন আপোষ নেই। এই বাংলার মাটিতে তাদের বিচার হতে হবে। বিএনপি আজ তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সকল মানুষের প্রতি এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে যে, আমাদের এই সোনার বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থেকে বিপক্ষের শক্তি বেশী শক্তিশালী তথা তাদের ভোট বেশি। যত কিছুই হোক না কেন দিন শেষে সবাই ভোটের হিসাব করে। তাই বিএনপি বুঝে শুনেই জামায়াতের পক্ষ অবলম্বন করে এই হার্ডলাইনে গিয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের মুক্তিকামী সকল জনতাকে এর দাতভাঙা জবাব দিতে হবে। দেখিয়ে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের শক্তি কত বেশি।

আমার এই পোস্ট পড়ে অনেকে আমাকে আওয়ামীলীগ পন্থী হিসেবে সমালোচানা করতে পারেন। আমি কোন দলের পক্ষে নই, তবে রাজাকারদের ফাসি দাবী করলে যদি আওয়ামীলীগ পন্থী, ভাদা, ছাগু ইত্যাদি ইত্যাদি ট্যাগিং করা হয় তাতে কোন দুঃখ নাই।

শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কে শত বিভ্রান্তি ছড়ানো হলেও এই সকল বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে আমাদের দাবী আমরা আদায় করে তবে রাজপথ ছাড়বো। জয় বাংলা (এটা কোন দলের স্লোগান নয়, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান)

(বিঃ দ্রঃ আমার এই পোস্টে কোথাও কোন ধর্ম বা বর্ণ নিয়ে কোন ধরণের কটুক্তি বা অবমাননা করা হয় নাই। ব্লগাররা নাকি সব নাস্তিক এই জন্য এটি উল্লেখ করলাম)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×