somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কুশন
আলো –অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে! স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়, হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়! আমি তারে পারি না এড়াতে, সে আমার হাত রাখে হাতে; সব কাজ তুচ্ছ হয়,-পণ্ড মনে হয়। -জীবনানন্দ দাশ

সমুদ্র সমান হাহাকার

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লিলি কাঁদছে! চোখ শাড়ির আঁচল দিয়ে ঢেকে রেখেছে। মেয়েদের এক জীবনে অনেকবার কাঁদতে হয়। ঘরে বাইরে প্রতিদিনই এমন কিছু ঘটনা ঘটে- তাতে মেয়েদের কাঁদতে হয়। লিলির অনেক অদৃশ্য কান্না আমি দেখেছি। আর আমার বুক থেকে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস বের হয়েছে। সম্ভবত মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াটাই অনেক কষ্টের।

মেয়েরা পুরুষের তুলনায় অনেক উন্নত। তারা ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই করতে পারে। ইদানিং মনে হচ্ছে- আমার জীবন থেকে বিশাল কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে- আনন্দ, কমে যাচ্ছে আয়ু, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিভা। আমি দুঃখিত মুখ করে বসে থাকি। স্বপ্নের ভেতরও আমি দুঃখিত মুখ করে বট গাছের বেদীর উপর অন্ধকারে বসে থাকি। আর অন্ধকার থেকে কে যেন আমায় ডাকে বাবুই বাবুই বলে। আমি জানি, কে আমায় বাবুই বলে ডাকে- আমি তাকে খুঁজতে যাই না- চুপ করে বসে থাকি। আজকাল খুব বেশী সব কিছুতেই ভ্রম হয়ে যাচ্ছে।

চারদিকে অনেক গাছপালা থাকলেও চড়ুই পাখি মানূষের ঘরে তার বাসা বাধে। চড়ুই পাখি গুলো খুব অদ্ভুত হয়! সহজে তাদের ধরা যায় না। মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙ্গল। স্বপ্নে দেখলাম অনেক গুলো চড়ুই পাখি আমার মাথার উপর বসে কি একটা জরুরী বিষয় নিয়ে খুব আলোচনা করছে। ওদের আলোচনা শেষ হতে দেরী হলো- তাই ঘুম থেকে উঠতে দেরী হলো। যে যা বলে আমি চুপ করে তা মেনে নিই। তর্ক করি না।

লিলি একদিন বলেছিল- নিজের সম্পর্কে তোমার ধারণা এত খারাপ কেন? আত্মবিশ্বাস নেই- একটুও! মানুষ অনেক নিষ্ঠুর। আর তুমি অনেক ভালো। আমি তোমাকে নিয়ে অনেক ভাবি- কষ্ট পাই। লিলির গলা নরম হয়ে গেল, চোখ ভিজে উঠল। এই বোকা মেয়েটির জন্যই মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছা করে গা ঝাড়া দিয়ে সোজা হয়ে উঠি। একটা কনফারেন্স, সেমিনার অথবা বক্তৃতা দিয়ে- মানুষ রুপী কুকুরের মুখে লাথি মারি।

গভীর তার। ব্যালকনি থেকে বিছানায় গেলাম আর সাথে সাথে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। একটা স্বপ্ন দেখলাম। আধো অন্ধকার একটা ঘর। আমাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর চারপাশে অনেক গুলো বিষাক্ত প্রানী। তারা আমার দিকে বিকট চোখে তাকিয়ে আছে। আমি দেখলাম তাদের চোখে এক আকাশ হিংস্রতা। একটা হায়েনা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। হায়েনাটার মুখের দিকে আমি ভালো করে তাকালাম। হায়েনা টার মুখ ধীরে ধীরে বদলে গিয়ে আমার এক পরিচিত বন্ধুর মুখ হয়ে গেল। যে বন্ধুকে আমি খুব ভালো জানতাম। পেছন থেকে এগিয়ে আসছে একটা কুমির। কুমিরটার মুখের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম- আমার আর একটা বন্ধুর মুখ ভেসে উঠল। যে বন্ধু আমাকে সারাক্ষণ খুব বড় বড় নীতির কথা বলত। একটা কালো সাপ লেজ নাড়তে নাড়তে আমার দিকে আসছে- কালো সাপটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম- আমার এক বন্ধুর মুখ ভেসে উঠেছে- যে বন্ধু একটা পত্রিকা অফিসে কাজ করে। স্বপ্নের মধ্যেই আমি খুব ঘামতে লাগলাম। বিষাক্ত পশু গুলো কি করে- আমার বন্ধু হতে পারে? অথবা বন্ধু গুলো কি করে বিষাক্ত পশুতে পরিণত হতে পারে!!

আকাশ ভরা মেঘ, ঝম-ঝমিয়ে বৃষ্টি, ছোট বাচ্চাদের মুখে হাসি অথবা জোছনা রাত দেখলে আনন্দ হয়। আকাশ ভরা মেঘের কারণে চারদিক অন্ধকার হয়ে উঠে। আনন্দ নিয়ে একটা রিকশাওয়ালা তার প্রিয় গান গেয়ে ওঠে। ঝুম-ঝুম বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে রেলগাড়ি হর্ন বাজিয়ে চলে যায়। জানালা দিয়ে বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে দেয়। মনকে করে দেয় উদাস- দৌড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে প্রিয় মানূষের কাছে। পৃথিবীর মধ্যে দশটা আনন্দময় ব্যাপারের মধ্যে একটা হলো- ছোট ছোট বাচ্চাদের মুখের হাসি। অনেক ছোট বাচ্চা মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যেও হেসে উঠে। আর জোছনা রাতে খুব কম মানুষই পারে তার প্রিয় মানূষের বুকে মাথা রেখে- জোছনা উপভোগ করতে। যাই হোক, মাঝে মাঝে এক-একটা দিন আসে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বারবার শুধু আনন্দময় ব্যাপার ঘটে যায়। যেন এক সাগর সুখ উপচে পড়েছে। সকালে সূর্যটাকে ভালো লাগে, কাকের কা কা শুনতে ভালো লাগে। চিনি ছাড়া চা ভালো লাগে। অবশ্য এরকম দিন খুব কম আসে। এক-একটা মানুষ হঠাৎ বদলে দিতে পারে- জীবনের দর্শন- মনের গঠন।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×