টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল,সেই সাথে বাতাস যেন বইছিল এক বৈচিত্রহীন তালে। বর্ষার মাঝামাঝিতে এক আবির ঢাকা হলুদাভ সন্ধ্যা নামছিল আকাশের কোল বেয়ে। এক মগ কফি নিয়ে তানভীর থাই গ্লাস ঢাকা বারান্দায় চেয়ারে বসল। কফি হাতে বৃষ্টি দেখা তার অনেক পুরোনো অভ্যেস। বাতাসী ভারে মৃত্তিকার কোলে গাছের হেলে যাওয়া দেখতে তার ভাল লাগে। যেন নিজের আবেগগুলো খাঁচা থেকে সদ্য ছাড়া পাওয়া পাখির মত হয়ে যায়। পাশেই পাচ বছরের মেয়ে আফনান খেলছে। বারান্দা থেকে ছাদের চিলেকোঠা দেখা যায়। চোখ পড়তেই তার নজর আটকে যায় বাহুজোড়া এলিয়ে ঊর্ধ্বপানে চেয়ে থাকা বৃষ্টিস্নাত এক রমনীর ওপর। নাফিসা, তানভীরের স্ত্রী। বৈবাহিক জীবনের তিনটি বছর পাড়ি দিয়েছে তারা। কেন যেন তারপরও ওকে দেখে হিংসা লাগে তানভীরের। কত নিঃপাপ, কত পবিত্র! নিজেকে ছোট মনে হয় তানভীরের নিজের কাছে। নিজের অজান্তেই উঠে যায় বারান্দায়। সেখান থেকে দেখতে পায় পার্শ্বিক অনাবৃত, ভিজে জুবুথুবু হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে। নিজেরই কেমন অপ্রস্তুত মনে হয় নিজেকে। ডাকতে চেয়েও যেন ডাকতে পারেনা, অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে পরিনীতার দিকে। কত প্রানশক্তিতে উচ্ছ্বল একটা মেয়ে। তিনটি বছর একই শয্যার মাঝে অবস্থান করেও যেন নাফিসার মনের ঠাই পায়না তানভীর। কিছুটা সময় নিয়ে নিজেকে তৈরী করে সে, তারপর ডাক দেয়;
-এই ছাদে এলে আমাকে ডাকলেনা যে!
-তোমাকে ডাকলে তুমি তো আসতেই না, আমাকেও আসতে দিতেনা।
নিজেকে আবার অপ্রস্তুত মনে হয় তানভীরের, নাফিসাকে তার দ্যা দ্যা ভিঞ্চি কোডের সেই কুঠুরির মত কিংবা কয়েক প্রহর আগে ছেঁড়া ফুলের মত মনে হয়- বেশি নাড়া-চাড়া করলে যেন ঝরে যাবে। কিছু বলার আর সাহস হয় না। নিরবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নাফিসার দিকে।
-এসেই যখন পরেছ এসোনা একসাথে ভিজি!!
নাফিসার চোখে করুন আহবান। মন চাইলেও যেন পারেনা তানভীর, হীনমন্যতায় ভোগে। পত্নী প্রনয় যেন আজও পারেনা আত্মসংকোচ ঘুচিয়ে পতিত্বের হাল ধরতে।
-না! আমার ঠান্ডার সমস্যা হচ্ছে কয়দিন ধরে। তুমি এসে পর না। তোমার ঠান্ডা লাগবে।
অভিমান হয়না নাফিসার; করুনা হয় তানভীরের জন্য। পতির এই অকথ্য সীমাবধ্যতার ব্যাপারটি যেন তাকেও নাড়া দেয়। তারপরও কিছু না বোঝার ভান করে সে পড়ন্ত বর্ষাবিন্দুগুলোকে গাত্রে বরন করে নেয় আনন্দের সাথে। পরিনীতার আনন্দে যেন তানভীর সান্ত্বনা পায়। কথা না বারিয়ে চলে যায় সে ঘরের ভেতরে। বাসার এক কোনায় নাফিসা আর তানভীর মিলে তৈরী করেছে একটা ছোট লাইব্রেরী আর বাংলা গানের আর্কাইভ । সেখানে গিয়ে চেয়ারে এলিয়ে বসে ও। দ্বিধায় পরে যায়।ব্যক্তিত্ব আর বিবেকের দাবায় যেন বিবেক বারবার আগেভাগেই মন্ত্রী খেয়ে দেয়। কেমন যেন তন্দ্রায় চলে গিয়েছিল; জেগে উঠল কপালে কোমল হাতের স্পর্শ পেয়ে। দেখে নাফিসা দাঁড়িয়ে আছে। হাতে তানভীরেরই কিনে দেয়া এক জোড়া সোনার নুপুর।
-পরিয়ে দাও না?!! নাফিসার চোখে আকুতি!!
মন্ত্রমুগ্ধের মত তানভীর উঠে দাঁড়ায়। হাটু গেড়ে বসে নাফিসার সামনে।এক হাতে তুলে নেয় ওর এক পা নিজের হাটুর ওপর। পরিয়ে দেয় সোনালী পায়েল পত্নীর কোমল পায়ে। পড়ানো শেষে তাকায় নাফিসার দিকে। কোথায় যেন হারিয়ে যায় তানভীর! নিজের অজান্তেই উঠে দাঁড়ায়। এবার আর নাফিসা পালিয়ে যায় না, ধরা দেয় তানভীরের বুকে। নাফিসাকে কাছে পেয়ে যেন খানিকটা শান্তি পায় তানভীর। তানভীর অনুভব করে নাফিসা নিষচুপ, ওর নিঃশ্বাষের ভাষা শুনতে পায় তানভীর। থেকে থেকে কেপে ওঠে নাফিসা। তানভীর বুঝে নাফিসা নিরবে কাঁদছে। নিজেকে নিরুপায় মনে হয় ওর। ওর আরও বেশি কষ্ট হয় যখন ভাবে এই কান্না নাফিসার নিজের জন্য না তানভীরের জন্য। কিছুক্ষন পর আলাদা হয় দুজন। নাফিসা নিঃশব্দে চলে যায় অন্য ঘরে।
আজকের সন্ধ্যেটা ভালই কাটে তানভীরের। নাফিসার প্রতি পদক্ষেপ যেন তার হৃদয়ের মাঝে আলতো করে বেড়ে ওঠা এক প্রনয়ের জানান দেয়। অনযমনস্ক হয়ে পরে ও। মনে পরে যায় তার বিগত হয়ে যাওয়া অতীতের কথা। কত লুকোচুরি-হুড়োহুড়ির মাঝেই না কেটেছে যৌবনে প্রথম লগনের দিন গুলো। ভার্সিটিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া। মাঝে মাঝে শাহবাগের গন্ডি পেরিয়ে পুরান ঢাকার অলিগলিতে ঢু মারা। মনে পরে যায় স্বচ্ছের কথা, পায়েল পরা, নীলাক্ষী, জাফরান রঙের মেয়েটা, প্রতিদিন যে চিরকুট দিয়ে যেত তানভীরের হাতে; কোনদিন হয়ত বইয়ের ভেতর নয়ত নোট নেবার ছলে। প্রতিটা চিরকুটেই থাকত চার থেকে আট লাইনের একটি কবিতা। শব্দের পিঠে শব্দ বসিয়ে, তার মাঝে ছন্দের অলংকার দিয়ে, কথা বলার ছলে আবেগের মাত্রা টানত ছিপছিপে মেয়েটা। কিন্তু একটাই শারীরিক সীমাবদ্ধা ছিল মেয়েটার; অশ্রু নিসঃরনের(কান্নার) গ্ল্যান্ডটা অকেজো ছিল মেয়েটার। কাদতে পারত না। হয়তোবা কাঁদত কিন্তু তার অশ্রুশুন্য রোদনের দর্শক হত শুধু বাস্তবতা। চিরকুটে ছন্দের স্কন্ধ-কটি আঁকড়ে জানান দিত মনের কথা। একসময় তানভীরও অপেক্ষা করত চিরকুটের জন্য। ছন্দের জবাব ছন্দ দিয়ে দিতে মুখিয়ে থাকত প্রতিটি দিন। মিষ্টি একটা পদ্যমিতালী গড়ে উঠেছিল ওদের মাঝে। বন্ধুরা পদ্যযুগল বলে ফোঁড়ন কাটত। ওরা অবশ্য আমল দিত না এমন। শব্দ-ছন্দের ভীড়ে কমা আর সেমিকোলন দেয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকত ওরা, দাড়ি আর টানা হতনা। কেমন যেন অজানা এক সুরলহরী ছন্দের টানে নিজেদের অজান্তেই নিজেদের অনেক কাছে চলে এসেছিল দুজন ওরা নিজেরাও জানত না। সবাই সময় কাটাতে যেত পার্কে , নয়তো কোন রেস্তরায়। আর ওরা যেত আশুলিয়ায় নদী দেখতে। নয়ত সোনারগায়ে একফোটা নির্মল বাতাসের আশায়। নিজের অজান্তেই প্রনয়ের সোপানে দৃঢ় করবদ্ধ হয়ে একটার পর একটা পদক্ষেপ রাখছিল। মনে পরে স্বচ্ছের পায়েল যেন কথা বলত; শতদশা বিরহীনীর মত ইনিয়ে-বিনিয়ে কি যেন শোনাতে চাইত। কেমন একটা অদ্ভুত প্রনয়ের মাঝে জড়িয়ে পরেছিল দুজন। স্বচ্ছের কোলে মাথা রেখে তানভীর আসন্ন ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্বপ্নে বিভোর হত। আর স্বচ্ছ ওর সর্পিল কোমল আঙ্গুল দিয়ে তানভীরের কালো চুলে বিলি কেটে দিত। তানভীর যখন তাকাত দেখত স্বচ্ছের ঠোটের কোণ জুড়ে এক চিলতে হাসি বিকেলের পড়ন্ত আলোতে চিকচিক করছে। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করত-
-হাসছ কেন?
-কাদতে পারিনা তাই!
-কাদবে কেন?
-জানিনা তো! ইচ্ছে করছে।
-তোমার মন হয়ত আজ ভাল নেই। চলো আমরা অন্য কোথাও যাই।
-না। এখানেই থাকব। তুমি কাদনা প্লিজ আমি একটু দেখি। আমি তো পারিনা। তোমারটা দেখে একটু স্বান্তনা পাই।
অবাক হয়ে শুনত আনভীর স্বচ্ছের এই উদ্ভট প্রকৃতির কথা। নাম না জানা কিসের অস্তিত্ব যেন খুঁজে পেত স্বচ্ছের এই কথাগুলোর মাঝে। কোন এক অজানার গহ্বরে যেন হারিয়ে যেত কিন্তু ঠাই পেত না। তারপরও নিজের কাছে একরকম অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করত। ঠিক করেছিল কোনদিন যেহেতু স্বচ্ছের কান্না দেখতে পাবে না এমন কিছু ঘটতে দিবেনা যা ওর কান্নার কারণ হয়।
তানভীর ডেকোরেশনের কাজ ভাল জানত। ভার্সিটির যে কোন অনুষ্ঠানের ডেকোরেশনে ও কাজ করত। একবার জুনিয়রদের নবিনবরণ উপলক্ষে ব্যানার স্টেজের ব্যাকগ্রাউন্ডে লিখতে গিয়ে পা ফোস্কে পরে দিয়ে ওর হাত ভেঙ্গে যায়। সবাই খুবর মর্মাহত হয়েছিল। স্বচ্ছ পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। কাদতে না পারলেও বেদনার নীল আভায় ছেয়ে গিয়েছিল ওর চোখজোড়া। এক রকম নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে ছিল তানভীরের পাশে সেরে ওঠার আগ পরযন্ত। দুইজন মিলে স্বপ্ন দেখত আনাগত ভবিষতের। আশায় বিভোর হোত দুজন।
দিনগুলো ভালই কাটছিল। মাঝখানে বাঁধা পরল এক অনাকাঙ্খিত সংবাদে। একদিন স্বচ্ছ এসে বলল,
-এভাবে আর কত দিন? চলো বিয়েটা সেরে ফেলি।
-একটু অপেক্ষা কর। ফাইনাল ইয়ারটা শেষে একটা কাজে হাত তো দেই। বিয়ের পর কি খাওয়াব তোমাকে?
-যা পার তাই খাওয়াবে। আমার বাসার অবস্থা ভাল না। বাবা কানাডার ইমিগ্রেশন নিচ্ছেন। আমরা হয়ত খুব তাড়াতাড়ি সেখানে শীফট হব। তাই আগেই কাজটা সেরে ফেললে ভাল হয়না?
-আমার দিকটাও একটু দেখবে না! বাবা রিটায়ার করেছেন। সংসারে টানাপোড়ন। বোনটার বিয়ে দিতে হবে। কত দায়িত্ব! এই মুহূর্তে যদি আমি এমনটা করে বসি তো কি করে হবে। স্বচ্ছ সেদিন কাদেনি।
দিন কাটতে থাকে। প্রায়ই স্বচ্ছ এটা নিয়ে বোঝাত তানভীরকে। ও আমল দিত না। শেষবেলায় একদিন বলল,
-আজই তোমাকে বিয়ে করতে হবে আমরা পরশু চলে যাচ্ছি।
নিরুপায় হয়ে পরে তানভীর। কিন্তু পরিবারকে জলে ভাসিয়ে দেয়ার সাধ্য ওর নেই। ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল স্বচ্ছকে। কিছু করার ছিলনা তানভীরের। বলেছিল, ‘তোমাকে ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিলাম। ভাগ্যে থাকলে ভাগ্যই তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।’ স্বচ্ছ সেদিনও কাদেনি, বুক চাপা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চলে গিয়েছিল।
পরে স্বচ্ছরা স্বপরিবারে প্রবাসে চলে যায়। এরপর আর তানভীরের সাথে যোগাযোগ করেনি। দিন যেতে থাকে, মাস যায়; যায় সময়।
একসময় খবর পায় স্বচ্ছ নাকি মারা গেছে মস্তিস্কে রক্তক্ষরন জনিত কারনে। স্বচ্ছের পরিবারের পক্ষ থেকেই বন্ধু-বান্ধবদের জানানো হয়েছিল। তানভীর খুব কেঁদেছিল সেদিন। চিৎকার করে কেঁদেছিল। বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন খুব। স্বচ্ছও কেঁদেছিল হয়ত; হয়ত ওর কান্না আকাশের বুক হতে বর্ষা হয়ে ঝরেছিল।
এরপর জীবন থেমে থাকেনি। মৃত একজনের জন্য কতদিনই বা জীবন থেমে থাকবে? জগত সংসার হতে কারো বিদায় জীবনের গতিকে স্লথ করে দিতে পারে; থমাতে পারেনা। পারিবারিক উদ্যোগে অনেকটা জোর করেই তানভীরের বিয়ে দেয়া হয় নাফিসার সাথে। তানভীর রাজী ছিলনা; কিন্তু অমতও করেনি।ক’দিন আগের কথা। হঠাত একদিন কলিংবেল বেজে ওঠে তানভীরের ফ্লাটের দরজায়। ও বাসায় ছিলনা। নাফিসা দরজা খুলেছিল। দেখল, বয়স্কা একজন মহিলা আর গোলাপ রঙ্গা মিষ্টি একটা মেয়ে; আফনান নাম। মেয়েটিকে রেখে মহিলা চলে গিয়েছিলেন। তানভীর বাসায় আসার পর নাফিসা ওকে বারান্দায় নিয়ে যায়। তানভীর গিয়ে দেখে আফনানকে। অবাক হয়। আফনানের নিষ্পাপ নীলাভ দৃষ্টি দেখে তানভীর চমকে ওঠে। অতীতের টান অনুভূত হয়। প্রশ্নাতুর দৃষ্টিতে নাফিসার দিকে তাকাতেই নাফিসা একটা চিরকুট এগিয়ে দেয়। কম্পিত হাতে তানভীর তা খোলে। মুক্তার মত ঝকঝকে পরিচিত হাতের লিখা দেখে তানভীরের বুক চমকে ওঠে-
তানভীর,
জীবনের শেষ চিরকুটটি লিখছি তোমার কাছে। এরপর হয়ত লিখার সৌভাগ্য হবেনা। এই প্রথম ছন্দ ছাড়া লিখছি তোমাকে। কি করব বল, আমার জীবনের ছন্দ যে হারিয়ে গেছে। শব্দ আর ছন্দের সাথে কতদিন খেলা হয়না। তোমাকে একটা কথা জানাবোনা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার সময় আর বেশিদিন নেই। কানাডা যাওয়ার আগে আমি জানতে পারি আমি অন্তঃস্বত্বা। তাই তোমাকে এত বিয়ের কথা বলছিলাম। এ কথা বলিনি কারণ ভেবেছিলাম যে আমাকেই গ্রহন করতে পারছেনা সে আমার সন্তানকে কি করে গ্রহন করবে? হয়ত আমি ভূল ছিলাম। এজন্য আমি মনে মনে অনেক কেদেছি যদিও কেউ তা জানতেও পারেনি। যথাসময়ে আফনানের জন্ম হয়। আমি চেয়েছিলাম আমি ওকে আমার মত করে বড় করব। কিন্তু নিয়তি বড়ই করুণ। ওর কাছ থেকে আমাকে কেড়ে নিল। কিন্তু ওর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ওর পাশে তোমাকে দরকার। আর একটা কথা, ও কিন্তু কথা বলতে পারেনা। আমি কাদতে পারতাম না বলে তুমি এমন করে আমায় রেখেছিলে যেন আমার কখনো কান্না না আসে। ওকেও এমনি করে রেখ যেন ওর জীবনে কখনো কথা বলতে না হয়। আমাকে কখনো খুজোনা; তোমার মেয়েটা আমার চোখ নিয়েই জন্মেছে। ওর মাঝে আমাকে খুঁজে পাবে। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি বেচে থাকব তোমার ছন্দের মাঝে, আফনানের চোখের মাঝে। এটাই শেষ সান্তনা। তুমি নেই তাই জোছনা দেখা হয়না। এখন হাসপাতালের কেবিন থেকে প্রতিদিন রাতের কালো আকাশ দেখি। আমার এখন এই একটাই বন্ধু। তোমাকে যে কত মিস করি আমরা!! আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। মরে গেলেও বাসব। বিশ্বাস রেখ। ভাল থেকো।
ইতি,
তোমার পদ্যমিতা
স্বচ্ছ
চিঠিটা পড়ে তানভীর যেন পাথর হয়ে যায়। আনেক কষ্ট করে চোখ তুলে তাকায় নাফিসার দিকে। নাফিসার চোখে জল। আবেগশুন্য সজল চোখে আকাশের দিকে তাকায়। আকাশ গর্জে ওঠে। বৃষ্টি নামে। স্বচ্ছের আনন্দ মাখা অশ্রু যেন বৃষ্টিকণা হয়ে পৃথিবীর বুকে ঝরে পরে..................।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪২