দশ বছর আগেও বাংলাদেশে মোবাইল ফোন এমনভাবে সবার হাতে হাতে দেখা যেতোনা। যার হাতে মোবাইল থাকতো তার দিকে মানুষজন একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে তাকাতো। আর এখন হাতে হাতে মোবাইল তো আছেই; একেক হাতে দুটি করে মোবাইলও দেখা যায়। কারো কারো তো পকেট যে কয়টা, মোবাইলও সে কয়টা!!
একটা সময় মোবাইল শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই ছিলো। কিন্তু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ফলে মোবাইল এখন লাইফস্টাইলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর বাঙালীদের মধ্যে এই প্রযুক্তি বিপ্লব এসেছে স্মার্টফোনের হাত ধরে। মূলতঃ ২০১১-২০১২ এর দিকে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে স্মার্টফোন বাংলাদেশে পরিচিতি লাভ করে।
২০১৩ এর মাঝামাঝিতে 3G সার্ভিস চালু হবার পর স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। ২০১৪ এর শেষে মার্কেট অ্যানালাইসিস থেকে জানা যায় বিগত এক বছরে বাংলাদেশে স্মার্টফোন ব্যবহার ৮৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। বাৎসরিক বাজেটে হ্যান্ডসেটের মূল্যহ্রাসও এর পিছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
iOS, Windows, Android এবং Firefox এই সবকয়টি স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম হলেও স্মুদ অপারেশন এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ার কারনে অ্যানড্রয়েডই বেশি জনপ্রিয় বাংলাদেশে।
এছাড়া বলা বাহুল্য, বাংলাদেশীরা অনেক বেশি প্রাইস কনশাস। যার কারনে বর্তমানে নোকিয়া বা স্যামসাং এর মতন ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড থাকা সত্বেও লোকজন এখন খুব বেশি ঝুকছেন কিছু চায়না ম্যানুফ্যাকচার্ড লোকাল ব্র্যান্ড মোবাইলের দিকে।
এখানে দেখা যাচ্ছে, লোকাল ব্র্যান্ডের মধ্যে সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন নাম হচ্ছে Symphony। সিম্ফনি স্মার্টফোন মার্কেটে ছাড়ে ২০১২ সালে। তিন বছরের ব্যাবধানে সিম্ফনি বাংলাদেশের মোবাইল মার্কেটের ৪০% শেয়ার নিজের মুঠোয় নিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের কথা মাথায় রেখেই সিম্ফনি তাদের প্রোডাক্ট সবার নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে।
তাই আজ আমরা মোবাইলের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পেরেছি। বিভিন্ন অ্যাপ্সের ব্যবহার জীবনকে করেছে গতিময়। আর বাংলাদেশে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত জিরো ফেসবুকের মাধ্যমে অতি আনসোশ্যাল মানুষটিও সোশ্যালি কানেক্টেড থাকছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই যে সুলভমূল্যে পাওয়া চায়নিজ মোবাইল দিয়ে আমরা ফেসবুক চালাই, সেই চায়নাতেই কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে ফেসবুক নিষিদ্ধ!