somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুষ্টিমান বজায় রেখে রন্ধন প্রক্রিয়া

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভাতের চাল রান্নের পুর্বে অনেকবার / অনেকক্ষন ধরে ধোঁয়া ঠিক নয়
অল্প পানিতে ভাত রান্না করা উচিত।


ভাতের মাড় ফেলে দেওয়া সঠিক নয়।



খাদ্য গ্রহনের মুল উদ্দেশ্য হল সুস্থ, সবল, কর্মক্ষম এবং নিরোগ দেহে জীবন যাপন করা। যে কোন খাবার খেয়ে পেট ভরানো যায় কিন্তু তাতে দেহের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে সুস্থ থাকা যায় না। কাজেই খাদ্য ও পুষ্টি সম্বন্ধে আমাদের প্রত্যেকেরই পুর্ণ ধারণা থাকা দরকার। পুষ্টি জ্ঞানের অভাবের দরুন সুষম খাদ্য গ্রহণের প্রতিও আমরা খুব একটা সচেতন নই। ফলে যারা দুবেলা পেট পুরে খেতে পায় না তারাই যে শুধু পুষ্টিহীনতায় ভোগে তা নয়, সে সংগে যারা স্বচ্ছল তারাও অপুষ্টির শিকার হয়ে থাকে। অতএব, দেখা যাচ্ছে খাদ্য ও পুষ্টিজ্ঞআনের অভাব এদেশে ব্যাপক অপুষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ।


এ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পুষ্টিহীন তার কারণে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে শুধু ভগ্ন স্বাস্থ্যই নয় এমন কি মৃত্যুর দিকেও এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মা ও শিশুরাই প্রধানত অপুষ্টির সহজ শিকার। এ জন্যে খাদ্য ঘাটতিকে প্রধানত দায়ী করা হয়। তাই খাদ্য ঘাটতি পূরণের জন্যে শাক সবজি জাতীয় খাদ্যের প্রতি অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
খাদ্যের অভাব যে কেবল ভাত রুটি দিয়ে পুরণ করা সম্ভব নয় তা আমাদের তেমন বিবেচনায় নেই। সুতরাং, পুষ্টি উন্নয়নের জন্যে সব ধরনের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করা জরুরী।

খাদ্য, পুষ্টি ও পরিবেশ উন্নয়নে শাক সবজির গুরুত্বঃ


খাদ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে শাক সবজি চাষের গুরুত্ব খুব বেশী। পুষ্টিবিদদের মতে দেহের চাহিদা পুরণের জন্য আমাদের দৈনিক গড়ে ১৮০-২৫০ গ্রাম শাক সবজি খাওয়া উচিত।

শাক সবজি দেহের রোগ প্রতিরোধক খাদ্য হিসাবে পরিচিত। খনিজ লবণ ও ভিটামিন দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আরোগ্য লাভে সাহায্য করে। এসব উপাদানের প্রধান উৎস হল শাক ও সবজি। সুতরাং শরীরকে সুস্থ এবং রোগ মুক্ত রাখার জন্যে প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি খাওয়া উচিত। অথচ আমরা বর্তমানে যে পরিমানে শাক সবজি খাই তা চাহিদার তুলনায় বড় জোর চার ভাগের এক ভাগ। যাহোক আমদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যথেষ্ট পরিমান শাক সবজি অবশ্যই থাকতে হবে।

শাক সবজিতে ভিটামিন ও খনিজ লবণের পরিমান অন্যান্য উপাদানের তুলনায় বেশী। রান্না করার ফলে ভিটামিন সি নষ্ট হয় বলে যতদুর সম্ভব শাক সবজি কাঁচা (লেটুস পাতা, ধনিয়া পাতা ও পুদিনা পাতা ইত্যাদি) কিংবা সালাদ খাওয়া ভাল। ভিটামিন সি ঘাটতি পুরনের জন্য লেবু ভাতের সাথে খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

শাক সবজির চাহিদা পুরনের জন্যে বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় বাগান আকারে বা যেখানে যতটুকু পতিত জায়গা আছে সেখানে বেশী করে শাক সবজি চাষ করা আমাদের প্রত্যেকেরই একান্ত কর্তব্য। কারন প্রত্যেরকের পক্ষে রোজ রোজ বাজার থেকে শাক সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া বাজারে সব সময় টাটকা শাক সবজি পাওয়া যায় না। এজন্য প্রত্যেকটি পরিবারে যদি নিজস্ব শাক সবজি থাকে তাহলে এসব খাদ্যের জন্য আলাদা টাকা খরচ করার প্রয়োজন হয় না, উপরন্ত সব সময় টাটকা শাক সবজি খাওয়া ছাড়াও বাড়তি কিছু আয়ের সংস্থান করা যায়।
শাক সবজি শুধু খাদ্যই সরবরাহ করেনা উপরন্তু বৃক্ষ সম্পদ বৃদ্ধি করে পরিবেশের ভার সাম্য রক্ষা করে স্বাস্থ্যকর ও নির্মল পরিবেশ বজায় রাখে। নির্মল পরিবেশ গাছ পালার প্রভাব অপরিহার্য।


বাড়ীর আঙ্গিনায় শাক সবজি বাগান[

শাক সবজি পারিবারিক চাহিদা মেটাতে খুব একটা বেশী জমির প্রয়োজন হয় না। আমাদের বাড়ীর আনাচে কানাচে পড়ে থাকা জমি গুলো পরিকল্পিত ভাবে শাক সবজি চাষের আওতায় আনা হলে তা থেকে সারা বছর পারিবারিক চাহিদা পুরণ করা যায়। এদেশের গ্রামে গঞ্জে প্রায় দেড় কোটির উপড়ে বসত বাড়ী রয়েছে এসব বাড়ীগুলোতে শাক সবজি করতে পারলে খুব সহজেই দেশ অপুষ্টির অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে।


যাদের বাড়ীতে বাগান করার মত জায়গা রয়েছে তারা পরিকল্পিত ভাবে শাক সবজির বাগান তৈ্রী করতে পারেন। এবং যাদের বাগান করার মত জায়গা নেই তারা বাড়ীর যেখানে যতটুকু জমি পতিত রয়েছে সেখানে যে কোনো মৌসুমী শাক সবজি চাষ করতে পারেন। বাগানে বা বাড়ীর আনাচে কানাচে কোন কোন মৌসুমী শাক সবজি কিভাবে চাষ করতে হবে এবং অধিক ফলনের জন্য কি কি যত্ন নিতে হবে তা এলাকার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কৃষিজীবি ভাই কিংবা বোনদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে নিতে হবে।
সবজি বাগান শুধু দেহের চাহিদাই মেটায় না চাহিদা মত সৌ্ন্দর্যও বাড়ায়।


ছোট ছেলে মেয়েদের গাছ লাগানো এবং বাগান করার অভ্যাস এবং আগ্রহ সৃষ্টির জন্য তাদেরকে এ কাজে উৎসাহিত করতে হবে। ফলে তাদের মধ্যে ছোট বেলা থেকেই শাক সবজি উৎপাদন এবং গ্রহনের মানসিকতা গড়ে উঠবে। এভাবে পুষ্টি চাহিদা পুরণের জন্যে আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞানের মাধ্যমে বাড়ীর আঙ্গিনায় শাক সবজি চাষের প্রতি সকলেই আগ্রহী ও যত্নবান হলে সবদিক থেকেই লাভ বান হওয়া যাবে।

পুষ্টিমান বজায় রেখে রন্ধন প্রক্রিয়া- উত্তম উপায়

শাক সবজি বাজার থেকে আনার পর পরই ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে, বিশেষ করে সবুজ শাকপাতা।
শাক সবজি ঠান্ডা পানিতে আস্তে আস্তে ধুয়ে ফেলতে হবে, যতক্ষন না সন্তোষ জনকভাবে তা পরিষ্কার হয়।
এভাবে শাক সবজিকে ধুলাবালি ও রাসায়নিক বস্তু মুক্ত করা নিশ্চিত করতে হবে।
কোনো কোনো শাক সবজির স্থায়ীত্ব খুব কম । স্বল্প সময় সংরক্ষনের জন্য প্লাষ্টিকের মোড়কে অথবা বাক্সে রাখতে হবে যাতে ব্যবহারের পূর্বে এর পুষ্টি মান বজায় থাকে।
সময়ের সাথে সাথে শাক সবজির স্বাস্থ্যকর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
তাজা শাক সবজি বেছে নিয়ে পরিস্কার পানিতে ধুয়ে তারপর কাটতে হবে।
টুকরা বড় বড় এবং সমান সাইজ করে কাটতে হবে।
যতটা সম্ভব খোঁসা সহ কাটতে হবে। কাটার সাথে সাথে রান্না করতে হবে।
ছোট মূখের গর্তযুক্ত পাত্রে শাক সবজি রান্না করা উচিৎ


বাতাসে অক্সিজেন সবজির সংস্পর্শে বেশী আসে ফলে ভিটামিন নষ্ট হয়।
ঢাকনা দিয়ে রান্না করা উচিৎ
সিদ্ধ করার জন্য ক্ষার জাতীয় পদার্থ যেমন সোডা ব্যবহার করা উচিৎ নয় এতে ভিটামিন নষ্ট হয়।
ধোয়া এবং অধিক তাপে অনেক পুষ্টি উপাদানও নষ্ট হয়।
শাক সবজি সিদ্ধ করা পানি ফেলে দেয়া উচিৎ নয়।
অল্প পানিতে রান্না করা উচিৎ, এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন রক্ষা করা যায়।
ঢাকনা দিয়ে রান্না করা উচিৎ
তাজা শাক সবজি বেছে নিয়ে পরিস্কার পানিতে ধুয়ে তারপর কাটতে হবে।
কাটার পরে ধোয়া ঠিক নয়।


কাটার পর শাক সবজি অনেক্ষন পানিতে রাখা ঠিক নয়।



কাঁটার পরে অনেকক্ষন ধরে শাক ধোঁয়া ঠিক নয়
শাক সবজির খোঁসা পুরু করে কাটা ঠিক নয়।
শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে মস্তিষ্কের গঠন দ্রুততর হয়। দুই বছর পর্যন্ত মস্তিষ্কের কোষগুলি দ্রুত সংখ্যায় এবং আকারে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। একটি শিশুকে তাই দুই বছর পর্যন্ত অত্যন্ত যত্নের সাথে পর্যাপ্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার প্রদান করা উচিত।


মা ও শিশুর যত্ন সবাইকে নিতে হবে। একার পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব না। সবাই মিলে এক সাথে কাজ করলে তবেই সম্ভব হবে একটি সুস্থ্য জাতি গড়ে তোলা।



কাঁটার পরে আলু বেশিক্ষণ পানিতে রাখা ঠিক নয়


আলু পরিস্কার পানিতে ধুয়ে তারপর কাটতে হবে। কাটার পরে ধোয়া ঠিক নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×