somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধু দেশের নামটা পাল্টে ফেলো। "বাংলাদেশ" নামটা বড় বেমানান

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পরিস্থিতিতে কোনটা ছোট ব্যাপার কোনটা বড় ব্যাপার তা নির্ণয় করা কঠিন! ব্যাপার যাই হোক না কেন আমি সবসময় কষ্ট পাচ্ছি। যারা ধার্মিক তারা তাদের ধর্মকে রক্ষা করতে হাতে হাত মেলাবে এটাই স্বাভাবিক। আসলে কে ধার্মিক আর কে ধর্মকে পুঁজি করে টিকে থাকছে, ব্যাবসা ফাঁদছে, রাজা হতে চাইছে তা আমরা বুঝি। পারিবারিক সূত্রে একটা ধর্ম পেয়েছি। বড় হয়ে দেখেছি আমার কিছু বন্ধু মসজিদে যায় না, নামাজ পড়ে না। তাদের তবুও আলাদা মনে হয়নি। কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে বৌদ্ধ বা খিষ্টান তা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। মানুষ জন্মাবার সময় ধর্মের ছাপ গায়ে লাগিয়ে আসে না। যারা আজ ধর্মের নামে ভন্ডামী করছে তাদের তিরষ্কার জানানোর ভাষা জানা নেই।
আমাদের দেশে একাধিক ধর্মালবলম্বী মানুষ বাস করে। ধর্মানুভূতি বলে যদি কোন ব্যাপার থেকে থাকে তবে তা সব ধর্মের মানুষের জন্য সত্যি। এদেশে হিন্দু ধর্ম নিয়ে কোন কিছু বলা হলে নিশ্চয় সে ধর্মের মানুষের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে, তাই না? অন্যান্য ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সমান ভাবে সত্যি। লিখিত আইন না থাকলেও স্বাভাবিক নীতিবোধ থেকেই “একজন মানুষ আরেকজনের মানবিক অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোন কিছু করবেনা”, এটাই স্বাভাবিক। সংখ্যা লঘু-সংখ্যা গুরু ব্যাপার গুলো একটা সার্বভৌম রাষ্ট্রকে (সার্বভৌম না হলে আবার রাষ্ট্র কি!) অপমান করে। একটি দেশের সকল নাগরিক সমান। মানুষের ধর্ম মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করবে কেন। আমরা মধ্যযুগীয় বর্বরতা থেকে নাকি অনেক দূর সরে এসেছি??
তাহলে আজও কেন ধর্মের নামে মানুষের উপর নির্যাতন চলছে?
আজকে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। আমি শুধু একটি জঘন্য ঘটনার প্রতি আলোক পাত করছি-
“নাদিয়া শারমিনের” উপর হামলা হল কেন? কেন? কেন? কেন?
একাত্তরে নারীদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। আজ যারা নাদিয়াকে আঘাত করেছে তারা মানুষ নয়, কখনো মানুষ ছিল না। হেফাজতে ইসলাম নামধারী এইসব অমানুষদের শাস্তি কি হবে, কতটুকু হবে আমি জানি না। রাষ্ট্র হুগায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে, আবার সেই আঙ্গুল মুখে পুড়ে চুষে চুষে তামাশা দেখবে...এভাবেই চলতে থাকবে। একজন নাদিয়া অথবা দেশের সকল নারী পেশাজীবিদের জন্য এবং দেশের সকল মানুষদের জন্য এর থেকে তীব্র অপমানের বিষয় আর কিছু নেই। ভন্ডদের দিয়ে ভন্ডামী সম্ভব দেশ চালানো সম্ভব না। নাদিয়া সহ আরো যতো নারীদের উপর হামলা হল এটা আমি মেনে নিতে পারিনা, কক্ষনো না। সরকার যদি এসব জঘন্য ঘটনার বিচার না করে তাহলে বুঝব দেশকে তারা বেচে দিয়েছে। ভোট ভোট খেলায় সাধারন মানুষ রাজনীতিবিদদের (!) পুতুল নয়।
এদেশে হিন্দু থাকবে, মুসলিম থাকবে, বৌদ্ধ থাকবে, নাস্তিক থাকবে, খ্রীষ্টান থাকবে, সবাই থাকবে, সবাই মাথা তুলে বাঁচবে সমান অধিকার নিয়ে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। রাষ্ট্রের আবার ধর্ম কি?
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হতেই হবে, নাদিয়ার উপর নির্যাতনকারী অমানুষদের সর্বোচ্চ শাস্তি হতেই হবে। আমার ভাবতে গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যায় একটি দেশে একজন নারীর সাথে প্রকাশ্যে এমন নিকৃষ্ট আচরনের পরেও অন্যায়কারী অমানুষগুলি প্রকাশ্যে হেটে বেড়ায়! আমার বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী একজন নারী, এরপরেও...!!!
রাষ্ট্র কখনো নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। রাষ্ট্রের সিংহাসন গুলিতে যারা বসে আছে তাদের প্রতি কোন দাবী জানিয়ে লাভ নেই। প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব শুধুমাত্র “নিজেদের”।
একজন শারমিনের দায়িত্ব নিজেকে রক্ষা করা!
একজন বিশ্বজিতের দায়িত্ব ছিল নিজেকে নিরাপত্তা দেওয়া!
একজন রাজীবের দায়িত্ব ছিল নিজেকে বাঁচানো!
একজন ত্বকীর দায়িত্ব ছিল গুটিয়ে থাকা, লুকিয়ে থাকা, লিকিয়ে থেকে নিজেকে বাঁচানো!
একজন একজন একজন প্রতিজন মানুষের দায়িত্ব নিজের প্রান বাঁচানো। কেউ কাউকে কিচ্ছু দেবেনা। কেউ কারো জন্য কিচ্ছু করবে না। একজন মানুষ প্রান হারাবে, তাকে নিয়ে নতুন চাল শুরু হবে। একটি নারী নির্যাতনের শিকার হবে...এটা দেখে রাষ্ট্র চুপ করে থাকবে। একজন বাবা অথবা মা তার সন্তানের জন্য সারাক্ষন উদ্বিগ্ন থাকবে...তাতে কারো কিচ্ছু যায় আসবে না। মানুষগুলো সব মরে যাবে, দেশ ছেড়ে চলে যাবে, পৃথিবী ছেড়ে পালিয়ে যাবে... শুধু সরকার আর হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম টিকে থাকবে! ৭১এ দেশের জন্য জামায়াতেরা যুদ্ধ করেছে...তাদের সাথী হেফাজতেরা যুদ্ধ করেছে। এখন দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ নয়। আমরা দশ বারো কোটি মানুষ যারা বাংলাদেশকে ভালবাসি তারা আর এদেশে থাকার অধিকার রাখি না। দেশ আজ মৌলবাদীদের। দেশ আজ পাকিস্তান প্রেমীদের, দেশ আজ মহান রাজাকার দের।
পুনশ্চঃ
আমি কিচ্ছু বলিনি, কিচ্ছু দেখিনি, কিচ্ছু শুনিনি। আমার হাত পা কান চোখ নাক মুখ মেরুদন্ড কিচ্ছু নেই। আমি রাগিনি, আনন্দিত হইনি, আমার গায়ে আগুন ধরেনি, আমি নির্যাতিত হইনি। আমি জামায়াতিদের-হেফাজতিদের অমানুষ-ঘৃনার অযোগ্য-নিকৃষ্টতম প্রাণী বলিনি।
আমার মা-বোন নির্যাতিত হলেও আমি চুপ।
আমার দেশকে হুগা মারতে মারতে মারতে ঢিলা করে দিলেও আমি নির্বাক।
আমি কোনদিন এই পৃথিবীতে জন্মাইনি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×