-অ্যাই, বলতে পারবা! ঢাকা শহরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি?
-কেন?
-না, মানে এমনি বলছি।
-না, না! তুমি কারণ ছাড়া যে কিছু বলছো না, তা আমি জানি।
-আগে বলবা-তো! তারপরে বলছি কারণটা কি!
- না, বলা যাবে না!
উত্তর না পেয়ে, “টুশি” খানিকটা চুপচাপ হল। আর “শিহাব” জানে যে “টুশি” এখন যতক্ষণ তার সাথে থাকবে এই রকম চুপচাপ করেই থাকবে। যে কোন একটা জায়গার নাম বলতেই হবে। তবে সমস্যাও আছে, এই রকম হঠাৎ করে একটা প্রশ্ন করবে, তারপরে মিষ্টি মিষ্টি করে জেরা করা শুরু করবে। শেষে স্থান ত্যাগ করার আগ মুহূর্তে বলবে ,“ তাহলে তুমি এর আগেও দুইটা মেয়ের সাথে এই এই... করেছ। আমাকে তুমি আর কক্ষনও কল করবা না!”
শিহাব- “ আমার ভালোলাগা...ওমমমমম! আমার ভালোলাগা.......পেয়েছি! আমার ভালোলাগা জায়গা, আমার বাথরুম।”
টুশি তার চশমার উপর দিয়ে একটু কৌতূহলের দৃষ্টিতে বলল, “কেন?”
শিহাব বলল- কারণ এর আগে তুমি আমাকে যতবার কষ্ট দিয়েছ! ততবারই আমি বাথরুমের বসে সবগুলি ট্যাপ-এর মুখ খুলে দিয়ে কেঁদেছি!!
টুশি এবার গলে যাওয়া আইসক্রিমের মত নরম সুরে বলল, “ট্যাপ-এর সব গুলা মুখ খুলে দিয়ে ছিলে কেন?”
শিহাব (মনেমনে ভাবল আজ তুমি টুশি-বানু বোকা বনেছ!) বলল, “ অন্য কেউ যদি কান্নার আওয়াজ পায়! জানতে পারলে- লজ্জার বিষয় না! তাই ট্যাপ খুলে পানির পড়ার শব্দ আর কান্নার শব্দ এক হয়ে নতুন মাত্রার শব্দ সৃষ্টি হয়। আমার কান্না কেউ বুঝতে পারে না।”
টুশি এবার একটু শক্ত গলায় বলল, “ তার মানে তুমি খুব জোরে জোরে কেঁদেছ?”
-হ্যাঁ!
-অ্যাই , সরো সরো- একটু দুরে গিয়ে বসো!
-ক্যানো?
- আমি কি তোমাকে খুব কষ্ট দিয়ার মত কিছু করেছি?? প্রেমিক বা প্রেমিকা’রা খুব কষ্ট পায় তখনই যখন তার প্রেমিকা বা প্রেমিক অন্য কারও কাছে চলে যায় বা অনত্র বিয়ে হয়ে যায়। তার মানে তুমি তোমার আগের কারও জন্য কেঁদেছ!
-দ্যাখো, তুমি আমাকে ভুল বুঝতেছো। আমি শিহাব, তুমি ভিন্ন অন্য কারও জন্য কষ্ট পাই না।
-অ্যাই, শোন আমি উঠব! আর আমাকে কল দিলে ভাইয়া-কে বলে দিব! আর আমার বাসার সামনের ঘুরাঘুরি করবা না।
- জান, আর একটু থাক্-না! বাদাম তো এখনও অনেক গুলা আছে।
- তুমিই খাও!
টুসি চলে গেল। শিহাব বসে রইল আরও কিছুক্ষণ অন্ধকার নামার আগ পর্যন্ত। শিহাব জানে টুসি আবার কল করবে, বড় জোর তিন দিন এই অভিমান থাকবে। তারপর পজিটিভ ব্যাখ্যা দ্বার করাবে, কেন সে ঐভাবে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এই তিন দিন শিহাবের জন্য তিন যুগের সমান।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৩