ইউনিসেফের আর্থিক সহায়তায় বে-সরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুরভি “এডুকেশন ইক্যুইটি ফর আউট অব স্কুল চিলড্রেন (ইইওএসসি) প্রোজেক্ট-” নামে বাস্তবায়িত করছে। ৮ থেকে ১৪ বৎসর বয়সী স্কুল বহির্ভূত/ঝরে পড়া শিশুদের জন্য এই সেকেন্ড চান্স এডুকেশন প্রকল্পটি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় বুহত্তর মিরপুর ও বনানীর কড়াইল বস্তি এবং সাভার উপজেলার সাভার পৌরসভায় ৯ টি ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ৬০০০ স্কুল বহির্ভূত শিশুকে ২০০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে মাল্টিগ্রেড ও মাল্টিএ্যাবিলিটি এপ্রোচে ১) বয়স উপযোগী যথোপযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা ও শিখনে পরিচর্যা করা; ২) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (১ম থেকে ৫ম শ্রেনী) উপযোগী করে তৈরী করা; ৩) ভীতিহীন সুরক্ষিত শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করে প্রাথমিক শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভূক্ত নিশ্চিতকরণে কাজ করছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন র্কমসূচীর অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১.০০ টায় সাভার পৌরসভার গেন্ডা এলাকার এ্যাবাক পাবলিক স্কুলে একটি কমিউনিটি ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ত্ব করেন ইইওএসসি প্রোকল্প কোঅর্ডিনেটর মোঃ মনিরুজ্জামান মুনির তিনি তার বক্তবে বলেন, শিক্ষায় সমতা ও সবার জন্য শিক্ষা সুনিশ্চিতকল্পে কমিউনিটির সবার অংশগ্রহন এবং ভুমিকা জোরদার করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের এক সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
প্রধান অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব আয়নাল হক, তিনি বলেন, সাভার পৌরসভায় দ্রুতহারে জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু সেই তুলনায় ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য পর্যাপ্ত স্কুল নেই। একইসাথে অত্র এলাকায় অনেক নি¤œ আয়ের মানুষ বাস করে বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিক কিন্তৃ তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না তাদের সীমিত আয় দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭, ৮ ও ৯ নং ওর্য়াডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জনাব সুলতানা রাজিয়া, তিনি তার বক্তবে বলেন, শিশুদের জন্ম নিবন্ধন ও জন্ম সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জন্ম সনদ শুধুমাত্র স্কুলের ভর্তির বা চাকুরির ক্ষেত্রে প্রয়োজন লাগে না এটি শিশুর তার নিজের সুরক্ষা ও পরিচিতি হিসেবে সারাজীবন কাজে লাগে। তাই এই প্রকল্পের শিখনকেন্দ্রের যেসব শিশুদের জন্মসনদ নেই তাদের জন্মসনদ করার ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবো।
আরও বক্তব্য রাখেন, অত্র এলাকার সমাজকর্মী হাজী মোঃ সোহরাব হোসেন, এরিয়া কোঅর্ডিনেটর আতিকুর রহমান, এডুকেশন অফিসার শিউলি আক্তার এবং শিখনকেন্দ্রের শিক্ষক মোছাঃ মুক্তা খন্দকার প্রমূখ। কমিউনিটি ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামটি সঞ্চালনা করেন, সুরভি ও ইউনিসেফ বাস্তবায়িত ইইওএসসি প্রোজেক্টের কোঅর্ডিনেটর-উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ (C4D) মাকসুদুল কবীর মন্ডল।
বক্তারা বলেন, কমিউনিটির সবার অংশগ্রহনের মাধ্যমে সকল শিশুদের বিদ্যালয়ে বা শিখন কেন্দ্রে ভর্র্তি নিশ্চিত করা, বিদ্যালয় বা শিখন কেন্দ্র থেকে শিশু ঝরে পড়া রোধ করা, বিদ্যালকে শিখন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা, সকল শিশুর জন্য গুনগত শিক্ষা নিশ্চিত করা, শিক্ষা বৃত্তি, উপবৃত্তি ও টিফিন/স্কুল ফিডিং এর ব্যবস্থা করা, দরিদ্র বাবা-মার সন্তানকে শিক্ষা উপকরণ (স্কুল ড্রেস, ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি) কিনতে সহায়তা করা , শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতির জন্য কমিউনিটির সকলে মিলে হোম ভিজিট, মা সমাবেশ, অভিবাবক সভা, উঠান বৈঠক, শিক্ষামূলক র্যালি প্রভুতি কর্মসূচি জোরদার করা, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, বিনোদন, শিক্ষা সফর ও বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা, কেন্দ্রে শিশুদের নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, কর্মজীবি শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা করা, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে রক্ষা করা ও নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরী করা, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, শিশুশ্রম নিরসন করা, শিশুদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১