ইউনিসেফের সহযোগিতায় সুরভি’র আয়োজনে গত ২২ মার্চ ২০১৫ ইং সকাল ১০টায় ইসলামীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ট-ব্লক মিরপুর-৬, ঢাকায় শিক্ষায় সমতা ও শিশুশ্রম নিরসনে কমিউনিটির ভুমিকা শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন বা মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচীতে সুরভি ইইওএসসি প্রকল্পের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান এর সভাপতিত্ত্বে প্রধান অতিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মিরপুর থানা শিক্ষা অফিসার জেসমিন আরা বানু, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডের সচিব মোঃ গোলাম মোস্তফা, ইসলামীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যারয়ের প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা বেগম, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) সভাপতি হাজী আবুল হোসেন।
উক্ত ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইইওএসসি প্রোজেক্টের সমন্বয়কারী-উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ (ঈ৪উ) মাকসুদুল কবীর মন্ডল এবং সঞ্চালনা করেন সুরভি ইইওএসসি প্রকল্পের এডুকেশন অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মোহাইমেন মুকুল।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী এবং জাতীয় শিশু আইন ২০১০ এ ১৮ বছরের নীচে সকল মানব সন্তানকে শিশু বলে অবিহিত করেছেন। কারণ এই সময়ে একজন শিশুর শরীরের ভেতরের ও বাইরের সামগ্রিক গঠনের পূর্ণতা পায়না, মানসিক চিন্তার, বুদ্ধি বিবেচনার পরিপক্কতা পায়না এবং সামাজিকভাবে একজন পরিণত বয়সের মানুষের মতো সমান দায়িত্ব পালনেও সমর্থ নয়। শিশুদের শ্রমে নিয়োগ করলে, বিয়ে দেয়া হলে, পড়াশুনা বন্ধ করে দিলে, খেলাধূলা করতে না দিলে বা তার সমবয়সী অন্য শিশুদের সাথে মিশতে না দিলে শিশুর শরীর মন ও সামাজিক বুদ্ধিও বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয় এবং তার প্রভাব তার পরবর্তী জীবনে পড়ে যা শুধু শিশুর জন্যই ক্ষতিকর নয়; বরং পিতা-মাতা, সমাজ ও দেশ ক্ষতিগস্থ হয়। এই ক্ষতির দায়ভার বহন করতে হয় সকলকে জীবনভর।
ইইওএসসি প্রকল্প সমন্বয়কারী মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলেন, কমিউনিটির সবার অংশগ্রহনের মাধ্যমে সকল শিশুদের বিদ্যালয়ে বা শিখন কেন্দ্রে ভর্র্তি নিশ্চিত করা, বিদ্যালয় বা শিখন কেন্দ্র থেকে শিশু ঝরে পড়া রোধ করা, বিদ্যালকে শিখন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা, সকল শিশুর জন্য গুনগত শিক্ষা নিশ্চিত করা, শিশু বিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে এবং শিশু বিবাহেরর কুফলগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে হবে, শিশুশ্রম নিরসন করতে হবে এবং ১৪ থেকে ১৮ বছরের নিচের কর্মজীবী শিশুদের কাজের পাশাপাশি লেখাপড়ার সুযোগ দিেেত হবে। সর্বোপরি শিশু সুরক্ষায় শিশুদের প্রতি সকলের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করতে হবে।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন এ্যাডরা বাংলাদেশের শিক্ষা কর্মসূচির মোটিভেটর সিনথিয়া; সিবিও নেতা আব্দুর রহিম সর্দার; ইইওএসসি প্রকল্পের প্রোগ্রাম অরগানাইজার রুত শম্পা মল্লিক, ফারিয়া তাসনীম শেফা; সিএমসি সদস্য মোছাঃ শাহনাজ প্রমূখ।
প্রসঙ্গতঃ বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা সুরভি ইউনিসেফের সহায়তায় “এডুকেশন ইক্যুইটি ফর আউট অব স্কুল চিলড্রেন” নামে ০৮ থেকে ১৪ বৎসর বয়সী স্কুল বহির্ভূত/ঝরে পড়া শিশুদের জন্য একটি সেকেন্ড চান্স এডুকেশন প্রকল্প ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় মিরপুর ও কড়াইল এবং সাভার উপজেলার আওতায় সাভার পৌরসভায় বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় ৬০০০ স্কুল বহির্ভূত শিশুকে ২০০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে মাল্টিগ্রেড ও মাল্টি এ্যাবিলিটি এপ্রোচে প্রাথমিক শিক্ষা সহায়তা প্রদান করে প্রাথমিক শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভূক্ত নিশ্চিতকরণে কাজ করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৪