somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমকামিতার বিস্তারে পৃথিবী কি দ্রুতই ধ্বংস হয়ে যাবে?

২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমকামিতার বিস্তারে পৃথিবী কি দ্রুতই ধ্বংস হয়ে যাবে?

সমকামিতার বিস্তারে পৃথিবী কি দ্রুতই ধ্বংস হয়ে যাবে? =

এক বিদেশী সমকামী যুগলের বিবাহের ছবি ফেইসবুকে দিয়ে এক "ধর্মপ্রাণ" লিখেছেন, 'পৃথিবী ধ্বংস হতে আর কতদিন?' - অনেকেই মন্তব্যের ঘরে 'দেরি নেই', 'দ্রুত', 'অতি শীঘ্র", বা তেমন কথা বলেছেন। কিন্তু, প্রশ্ন হলো সমকামিতা কি আসলেই পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে পারে?

যে যাই বলুন, আমার তা মনে হয় না। তা যদি সত্য হতো তবে তো আমার বর্তমান আবাসস্থল কানাডা এতোকাল টিকে থাকার কথা নয়।এদেশে সমকামিতা শুধু বৈধ নয়, সমকামীদের বিবাহও বৈধ। আমি নিজের চোখে দেখেছি, সমকামী কাপল কেবল সুখে শান্তিতে সংসারই করছেন না, দায়িত্ব নিয়ে শিশু সন্তানও লালন পালন করছেন।

কাজের ফাঁকে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কিছু ছাত্রকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াই। (যাঁরা জানেন না, প্রকৌশল শাস্ত্রে আমার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আছে।) আমার দুজন ছাত্র আছে যারা সমকামী স্বামী-স্ত্রী। তারা একটি সন্তানও দত্তক নিয়েছে। ওই সন্তানকে এ যুগল আমাদের যে কারো মতই মায়ামমতা, স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করছে।

এ পরিবারটি আমার খুবই পরিচিত। তারা আমার কাছে একদিন জানতে চেয়েছিলো, আমার দেশে সমকামীদের গ্রহণযোগ্যতা কেমন? মুচকি হেসে তাদের সে প্রশ্ন এড়িয়ে গেছি। কারণ, আমি কি আর বলতে পারি, 'তলে তলে আছে, প্রকাশ্যে নয়?'
এবার আমার জন্মভূমি বাংলাদেশের দিকে ফিরে তাকাই।

বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে যে কি পরিমান সমকামিতা চর্চা হয় সে সম্পর্কে ধারণা পেতে আপনি গুগলে "মাদ্রাসায় বলাৎকার" - শব্দ দুটো দিয়ে সার্চ করে দেখুন। দেখবেন, শিশু বলাৎকার বাংলাদেশে কতখানি ডালভাত। কোন কোন মাদ্রাসা শিক্ষক বারবার বলাৎকারের সুবিধার্থে শিশুদের বিশেষ অঙ্গে ইনজেকশন পর্যন্ত পুশ করছে। বিষয়টি ভাবতেও গা শিউরে উঠে!

সরকারও আর্থিকভাবে দুর্বল শিশুদের সমস্যাগুলো তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখে বলে মনে হয়না। এ কারণেই দুর্মুখেরা বলে থাকে, বাংলাদেশে গরিব ঘরের শিশুরা তো 'গনিমতের মাল!', যত খুশি খাটাও, নির্যাতন করো, বলাৎকার চালাও; সমস্যা নেই।

এই যে "শিশু বলাৎকার", সেটাই কিন্তু সমকামিতা। কারণ, সমলিঙ্গের মানুষের প্রতি যৌন আকর্ষণ বা কর্মই সমকামিতার সংজ্ঞা। এই জঘন্য কাজটা কোন অশিক্ষিত মানুষ করছে না; তা করছে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত গালভরা ডিগ্রিধারী আলেম সমাজেরই একাংশ। নাউযুবিল্লাহ!

তবে, বাংলাদেশের সমকামিতা চর্চার সাথে কানাডার সমকামিতার বড়ো পার্থক্য, বাংলাদেশে এ বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয় বলে গোপনে করতে হয়; তাছাড়া, সমকামিদের বিবাহও অবৈধ।

অপরদিকে, কানাডায় সমকামিতার কর্মগুলো হয় পারস্পরিক সম্মতিতে, জোর জবরদস্তিতে নয়। সমকামিতা লিগেল করে না দিলে কানাডায়ও হয়তো বাংলাদেশের অবস্থা চোখে পড়তো।

আমার-আপনার মতো স্বাভাবিক মানুষেরা চাইলেও সমকামীদের মতো আচরণ করতে পারবো না। কারণ, স্রষ্টা আমাদের মনো-দৈহিক গঠনে সেভাবে সৃষ্টি করেননি। সমকামীদের জন্যও এ বিষয়টা বিপরীতভাবে সত্য। মনের উপর জোর খাটিয়ে এমন আচরণ অসম্ভব।

বিষয়টি এভাবেও ভাবা যায়, আমি-আপনি চাইলেই কি একজন হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গ-এর মানুষের মতো আচরণ করতে পারবো? নিশ্চয়ই না। (আমি জানি, আমার এক ফেইসবুক বন্ধু বাংলাদেশ হিজড়া সংঘের প্রেসিডেন্ট। আমি কিন্তু আপনাদের কটাক্ষ করছি না!)

এ ক্ষুদ্র লেখায় সমকামিতা নিয়ে বাংলাদেশের বাস্তবতা খানিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। একে যেন সমকামিতায় আমার সমর্থন বলে কেউ অপব্যাখ্যা না করেন। কারণ, ধর্মবিশ্বাস একান্তই বিশ্বাসের ব্যাপার, বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে এর বিচার বিবেচনা কাম্য নয়। তবে, এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়, সমকামীতার সাথে পৃথিবী ধ্বংস হবার কোন যৌক্তিক সম্পর্ক নেই। প্রকাশ্যে বা আড়ালে সমকামিতা চর্চার পরও কানাডা, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সটান দাঁড়িয়ে থাকা তারই সাক্ষ্য বহন করে।

ML Gani
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:০৩
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×