মোমের আলোয় কাজ করছিলেন খলিফা উমর
রাযিআল্লাহু আনহু । এমন সময় সেখানে আসলেন তার দুই
আত্মীয় । খলিফা তাড়াতাড়ি ফুঁ দিয়ে মোমবাতিটি
নিভিয়ে দিলেন । অন্য আরেকটি মোমবাতি ধরিয়ে
অতিথিদের বসতে দিয়ে তাদের খোজখবর নিলেন ।
কৌতুহল চাপতে না পেরে একজন জানতে চাইলেন,
আমাদের দেখে কেন আপনি আগের মোমবাতি
নেভালেন আর নতুন একটি জ্বালালেন ? খলিফা জবাব
দিলেন : আগের মোমবাতি ছিল রাষ্ট্রের সম্পত্তি
থেকে কেনা । তোমরা যেহেতু আমার আত্মীয়, তাই
তোমাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত অনেক আলাপ হবে ।
আমার নিজের কাজে জনগণের আমানত থেকে আমি কিছু
খরচ করতে পারি না। তাহলে আল্লাহর দরবারে আমাকে
জবাবদিহি করতে হবে । তাই নিজের টাকায় কেনা
মোমবাতিটি তোমাদের দেখে জ্বালালাম । এই জবাবে
আত্মীয়রা হতভম্ব হলেন । তারা এসেছিলেন আত্মীয়তার
খাতিরে বিশেষ কোন সুবিধা পাওয়া যায় কি না, সেই
অনুরোধ করতে । কিন্তু সামান্য মোমবাতি নিয়ে
খলিফার এত বিবেচনা ও সতর্কতা দেখে নিজেদের
প্রস্তাব জানাতে তারা আর সাহসই করলেন না।
আর আমাদের দেশে মেম্বার থেকে শুরু করে একবারে
রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা পর্যন্ত, এক কেজি চাউল
থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট,স্থাপনা, এমন কি পদ্মাসেতু
বাজেট পর্যন্ত সব তাদের পকেটে। আর চাকরীর কথা কি
বলবো,ইন্টার্ভিউতে প্রথম প্রশ্ন হয়, আপনি কার
রেফারেন্সে এসেছেন। তারপর তার শিক্ষাগত যোগ্যতা।
আর বুঝতেইই পারছেন কোনো নেতার রেফারেন্স নিতে
গেলে সেই নেতা কে চা-মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিয়ে
খুশি করতে হবে। অবশ্য তাদের চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য
কম করে হলেও ৮/১০ লক্ষ টাকা লাগে। কি জানি তারা
বাপের জন্মে কখনো চা-মিষ্টি খেয়েছে কিনা। এখন
তো সমাজের এমন অবস্থা যে বাবা-মা কে বলে রাখতে
হবে যেন পড়াশুনা করানোর পাশাপাশি ব্যাংকে
দাদাদের চা-মিষ্টি খাওয়ার টাকাটাও জমা করতে
থাকে। না হলে আর যায় হোক চাকরী হবেনা।
শুধুই ভাবি কোথায় খলিফা ওমর রাযিআল্লাহু আনহু এর
যুগ। আর কোথায় বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।
হে আল্লাহ্ তুমি পারো সব কিছু ঠিক করে দিতে।
আমাদের কে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দিওনা
মাবূদ।