somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"সুখে থাকার কিছু পদ্ধতি" (চেষ্টা করে দেখতে পারেন)

১০ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের সাথে সুখের কেমন একটা অদ্ভুত সম্পর্ক। সুখকে পাওয়ার জন্য প্রত্যেকটা মানুষ আকুল হয়ে থাকে। কিন্তু সুখের ওজন সব কপাল নিতে পারে না। মানুষ কত কিছুই না করে সুখের নাগাল পেতে। কেউ নিজের বিশাল ভুঁড়িতে হাত বুলিয়ে সুখ পান, কেউ ঘুমের সময় তোষকের নিচে কোটি টাকার বান্ডিল রাখলে সুখ পান, কেউ ফুটপাতে নিজের টুকরিটার ভিতর ঘুমাতে পারলে সুখ পান, কেউ নিজের পরনের একমাত্র জামা কোন বস্ত্রহীনকে দিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সুখ পান, কেউতো নিজের সন্তানের নামও রাখেন সুখী যাতে সারা জীবন সুখ সুখীর সাথে লেগে থাকে।
.
অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করতে দেখা যায় মানুষকে এই সুখকে খুঁজে পেতে।
এত পদ্ধতি প্রয়োগ করেও কি সবাই সুখী হতে পারে? নাকি যে সারাজীবন সুখে থাকার চেষ্টাই করল না সেই সুখী। চলুন সুখে থাকার কিছু পদ্ধতি বলি।
.
মনে করুন আপনার কোষাগারে বিপুল পরিমান অর্থ। সব অর্থ একত্রিত করে বালিশের কভার, তোষক ভর্তি করে রেখেছেন।তারপরেও মনে হচ্ছে আর কয়েকশ কোটি টাকা কোলবালিশটায় ঢুকাতে পারলে ভাল হত। এই নিয়ে আপনার মনকষ্ট, ফলে সুখ উধাও। তাহলে আপনাকেই বলছি দুই প্যাকেট চকলেট কিনুন। খুব দামী চকলেট কিনতে হবে এমন না। এক টাকা পিস করে যেই চকলেট পাওয়া যায় ওগুলোই দুই প্যাকেট কিনুন। খুব বেশী হলে ১০০ টাকা লাগবে।
.
এবার প্যাকেট দুইটা নিয়ে কাছেপিঠের কোন রেল স্টেশনে চলে যান। স্টেশনে ময়লা কাপড় বা কাপড় ছাড়া যতগুলো বাচ্চা আছে তাদেরকে একত্রিত করুন। তারপরে চকলেট দেওয়া শুরু করুন ধুলোমলিন পিচ্চি পিচ্চি বাচ্চাগুলোকে। তাদের দুষ্টামি এবং কৃতজ্ঞতার আনন্দ দেখে আপনি নিশ্চিত খুশী হবেন পক্ষান্তরে সুখ পাবেন। এই সুখ আপনি যদি আরও কয়েকশ কোটি টাকা কোলবালিশে ঢুকাতেন তাও পেতেন না। তখন মনে হত সোফার বালিশতো ফাঁকা পড়ে আছে।
.
মনে করুন আপনি একজন বডিবিল্ডার মানে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। সব সময় নিজেকে আয়নায় দেখতে পছন্দ করেন। প্রতিদিন রুটিন করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মাসেলের প্রসারনশীলতা পর্যবেক্ষণ করেন। যেকোন জায়গায় নিজের বাহুর জোর দেখাতে পছন্দ করেন। কিন্তু কোন কারনে আপনার মনে হল যে আপনার মাসেল ঠিক সালমান খানের মত ফুলছে না। এটা নিয়ে আপনি খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। বিভিন্ন জিম ইন্সট্রাকটর, ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি করছেন কিভাবে সাল্লু মার্কা বডি বানানো যায়। এই দু:শ্চিন্তায় আপনার ঘুম লাটে উঠেছে। ফলে সুখও আপনার থেকে উধাও।
.
তাহলে আপনাকে বলছি পাশে কোন পঙ্গু হাসপাতাল থাকলে এখনই চলে যান। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে প্রত্যেকটা রুগীর সাথে কথা বলুন। খুব খেয়াল করে রুগীদের কথা শুনুন। দেখবেন এক্সিডেন্টে যে রুগীটার আঙ্গুল কেটে গেছে সে রুগী তৃপ্তি সহকারে বলছে আল্লাহ বাঁচাইছে আর একটু হইলে পুরা হাতটাই গেছিল। তার চোখে মুখে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পাচ্ছে। কথা বলা শেষ হলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসুন। তারপর নিজের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লক্ষ্য করুন। এবার পঙ্গু রুগীগুলোর শরীরের সাথে নিজের শরীর তুলনা করে দেখুন। যে সাল্লু মার্কা বডি আপনাকে সুখ দিতে পারবে না সেই সুখ আপনি পাবেন নিজের শরীরে যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকার মাধ্যমে।
.
পরিশেষে একটা হাদীসের কথা বলে সমাপ্ত করি।
"বান্দার মুখ মাটি ছাড়া পূর্ণ হবে না।"
ঠিকই ধরেছেন বান্দা যত পাবে তত চাবে। যেহেতু তার চাওয়ার শেষ নেই সেহেতু তার কপালে সুখও নেই। একমাত্র সুখ সেই বান্দার কপালে থাকবে যে পাবে ও পাওয়ার সাথে সাথে কৃতজ্ঞতা আদায় করবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি এবং নিজের চাওয়ার লাগামটা নিয়ন্ত্রন করবে। সর্বোপরি যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকবে, অন্তর থেকে বলতে শিখবে আলহামদুলিল্লাহ।


সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৭
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×