somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"সুখের ছোঁয়া/ ক্ষনিকের_ডায়েরী_২১"

১৭ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত দুইমাস অনেকগুলো ঘন্টা কেটেছে অসহ্য মন খারাপে। অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন, মনে কষ্ট লাগা বিষয় ঘটেছে। সব কিছুর শেষে কিছু ঘটনায় ইমানটা আরেকটু ঝালাই করতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর অপার মহিমা আল্লাহ আবারও আমাকে দেখিয়েছেন। তখন বাড়িতে ছিলাম করোনাকালীন ছুটিতে। মা, বোন আর ওর সাথে কাটানো সময়গুলো অসাধারন ছিল। এক গ্লাস পানি পর্যন্ত মা নিজ হাতে ঢেলে খেতে দেননি। খাবারতো আমার সামনে রেডী করে রাখতেনই সেই সাথে বোনদেরকে হাঁকডাক পারতেন পানি এনে দেওয়ার জন্য। রাজার হালে থাকতে চাইলে রাজপ্রাসাদ জরুরী নয় জরুরী রাজকীয় ভালোবাসার। যে ভালোবাসা একটা পরিবারে থাকে। যে ভালোবাসা জান্নাতের একটা টুকরার মত। সে যাইহোক রোযার মাস শুরু হল । কোন একটা ঘটনায় প্রচন্ড মন খারাপ। আমি তখন শ্বশুর বাড়িতে, একদিনের জন্য গিয়েছি। রাত এগারটার সময় আমার ইমিডিয়েট ছোট বোন আমাকে ম্যাসেঞ্জারে নক দিয়ে বলল, “ভাইয়া দেখতো তামান্না(আমার পিচ্চি বোন) বৃত্তি পায়ছে , আন্টি ফোন দিয়ে বলল।“ সাথে সাথে আমি গুগল ক্রোমে গিয়ে রাজশাহী বোর্ডের ৮ম শ্রেনীর বৃত্তি তালিকার পিডিএফটা নামালাম। পিডিএফ নামিয়ে তামান্নার স্কুলের নাম খুঁজতে লাগলাম । প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো নিচের দিকে পাব কারন জেনারেলে বৃত্তির তালিকা নিচের দিকে থাকে। কিন্তু নিচে না পাওয়াতে পুনঃরায় উপরের দিক থেকে খুঁজতে লাগলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমার পিচ্চি বোন ট্যালেন্টপুলেই বৃত্তি পেয়েছে। খবরটা অনেক পুরাতন কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য এগুলোই আমার সম্পদ। আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আদরের আমার পিচ্চি বোনটা। বাবার হাতে বাকী তিন ভাইবোন আমরা প্রচুর মার খেয়েছি। কিন্তু আমি কখনও আমার পিচ্চি বোনকে মার খেতে দেখিনি। যদিও সেই দিনগুলোর কথা আজও মনে পরে। মিসও করি অনেক।

পিচ্চি বোনকে নিয়ে আমার সাথে সচারচর একটা ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কেউ যখন জিজ্ঞাস করে তোমরা কয় ভাইবোন? আমি বলি, “ আমি একা ভাই আমার আর তিনটা বোন আছে।“ এর পরের প্রশ্ন আসে বোনগুলো কি বড় সব? আমার উত্তর হয়,” বড় বোন আর ইমিডিয়েট ছোট বোন বিবাহিত আর পিচ্চিটা এবার নাইনে উঠেছে।“ তখন আমি প্রশ্নকর্তার হা করা মুখ দেখতে পাই। হয়তো ভাবে নাইনে পড়া একটা মেয়ে আবার পিচ্চি হয় কি করে? তাকে বুঝাতে পারিনা পিচ্চিটা আজীবন আমার কাছে পিচ্চিই থাকবে। পিচ্চির মা হয়ে গেলেও পিচ্চিই থাকবে।

যাইহোক বাড়ীতে অনেকগুলো দিন কাটানোর পরে অফিস জয়েন করলাম । খুব মন খারাপ লাগতে লাগল বাড়ীর জন্য। কারন প্রতি মাসে বাড়ী যাওয়া অভ্যাস আমার। কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত কঠিন পরীক্ষায় জীবনে প্রথমবারের মত ইদ এখানেই করতে হল একাকী। যাইহোক সম্ভবত তখন ২৮ রোযা। সকাল থেকে ভীষন জ্বর। শুয়েই আছি বিছানায়। করোনা নাকি সেটাও বুঝতে পারছিনা। যদিও আমার এরকমজ্বর মাঝেমাঝে হয়। ঠান্ডার সমস্যা আছে আমার। আবহাওয়া পরিবর্তন হলেই সর্দি লেগে জ্বর হয়ে যায়। ভীষন জ্বরে কাবু তখন আমি। কোনমতে সলাত সেরে ইফতার করে আসলাম। ঔষধও নিয়ে এসেছি নাপা এক্সট্রা কিন্তু হঠাৎ তখন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাকের একটা লেকচার মনে পড়ল। তিনি লেকচারে বলেছিলেন, “ আপনার যখনই কোন বিপদ আসবে তখনই সলাতে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকা’আত সলাত আদায় করুন আর সিজদাহতে গিয়ে সব খুলে বলুন। একেবারে সব খুলে বলুন।“ মনে আসতেই আমিও মাগরিবের সলাত আদায় করেই আবারও দুই রাকা’আত নফল সলাতের নিয়্যতে দাঁড়িয়ে গেলাম। সিজদাহতে বসে অনেকক্ষন কাঁদলাম আল্লাহর দরবারে। সলাত শেষে পরম এক প্রশান্তি পেলাম। আহ! সুবহানআল্লাহ এশার সলাতের পরপরই দেখলাম মাথা অনেকটা হালকা হয়ে গেছে। পরেরদিন মুখে স্বাদ না থাকলেও জ্বর একেবারেই নাই হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ।

বেঁচে থাকার জন্য একটা জিনিসইতো যথেষ্ট। আপনি জানেন একজন আপনার সাথে আছেন সবসময়। আপনি পানিতে ডুবে মরেন বা বাঘের পেটে যাওয়ার উপক্রম হন এটা আপনার আল্লাহর নির্দেশেই হচ্ছে। তিঁনি এত এত এত এত মায়া দিয়ে আপনাকে তৈরী করেছেন ,এত এত এত এত ভালোবেসেছেন এবং বাসেন তিঁনিইতো আপনার রব। আহ! আরে দুনিয়া জাহান্নাম হয়ে যাক, দুনিয়ার সবাই আপনার শ্ত্রু হয়ে যাক, দুনিয়ার সবাই আপনার সাথে খারাপ আচরন করুক দিনশেষে আপনি এটা বলে বুক টান করে নিজেকে বুঝান আরে ধুর আল্লাহ আমার সাথে আছেন । আল্লাহ তাঁর বান্দাহকে ছেড়ে যাবেন না কখনও।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৩৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×