অর্থমন্ত্রীর একটি সাক্ষাতকার ছাপা হয়েছে প্রথম আলোতে। সাক্ষাতকারটি পড়তে পড়তে বিস্মিত হয়ে ভাবছিলাম-এটি কি সত্যি সত্যি কোনো দেশের অর্থমন্ত্রীর সাক্ষাতকার? একটি রাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী শিক্ষিত লোক হবেন, তার কিছু রুচিবোধ থাকবে। কথাবার্তায় নিজ সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যেই ভাষায় কথা বলেছেন, তাতোঁকে শিক্ষিত, রুচিসম্পন্ন লোক বলে মনে হয়নি।
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে তিনি অনেকগুলো অভিযোগ তুলেছেন। এই অভিযোগগুলো সত্য হলে, সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন তোলা যায়-অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি কি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন? এক বেসিক ব্যাংক নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ‘রাজনৈতিক বিষয়ে আলাপ না করাই ভালো’ বলে এড়িয়ে গেছেন। তার মানে কি বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় রাজনৈতিক যোগসূত্র দেখানো গেলে তিনিএ ব্যাপারেও চুপ হয়ে যেতেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্জন শূণ্য হলে এর দায়ভার তো অর্থমন্ত্রীর ঘাড়েও পড়ে!
আতিউর পদত্যাগ করার পর তিনি অভদ্র ভাষায় তাঁর বিরুদ্ধে মিডিয়ায় অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু আতিউর দায়িত্বে থাকাকালীন এইগুলো নিয়ে ব্যবস্থা নিলেন না কেনো? রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সম্পর্কেও তিনি ‘অশ্লীল’ কথাবার্তা বলেছেন। অথচ রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান তাঁর অধীনেই চাকরি করেন। তাঁর বিরুদ্ধে তা হলে তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেনো?
সাক্ষাতকারটি পড়তে পড়তে আরও মনে হয়েছে-মুহিতের কেবল রুচিরই স্খলন ঘটেনি, তাঁর সক্ষমতারও স্খলন ঘটেছে। সক্ষমতার স্খলন ঘটলে তাঁকে আর দায়িত্বে রাখা সমীচীন নয়। যে বয়সের কারণে ড. ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো-সেই একই কারণেই তো মুহিতকেও বিদায় করে দেওয়া যায়!
প্রথম আলোর সাক্ষাতকারটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেয়া দরকার। কেননা, তিনি হয়তো ভাবতে পারতেন-তাঁর অর্থমন্ত্রী কতোটা রুচিহীন এবং অক্ষম হয়ে পড়েছেন!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৭