somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৌলবাদ

০২ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আহাদ (একক),তৌহিদ(একত্ববাদ);ওয়াহেদ(এক);মোয়াহ্‌হেদ(এককবাদী),ওয়াহদাত(বহুগুণ বিশিষ্ট একক);মূল(গোড়া);মৌল গোড়া(থেকে আদি)।
এক বিশ্ব প্রভু আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনই একত্ববাদ।একত্ব-বাদই মৌলবাদ।মৌলবাদে বিশ্বাসীগণ ধর্ম নির্বিশেষে একই পথের দিশারী।কিন্তু কারো উদ্দেশ্য এক আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে নিজেদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কার্যে নিয়োজিত থাকা।কেননা আল্লাহ পাক যুগে যুগে নবী প্রেরণ করে মানুষের পথের দিশা দিয়েছেন এবং সর্বশেষ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা কে সর্বশ্রেষ্ট ও সর্বশেষ নবী করে পাঠিয়ে মানব চলার পথকে পূর্ণতা দান করেছেন।এখানে এই মৌলবাদকে ধারণ করে রাখার অবকাশ নেই।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা উক্ত মৌলবাদের মূলৎপাটন করেছেন।তাঁর প্রদর্শিত সরল সঠিক পথ হল “ইসলামী শরীয়ত”।আর সঠিক ধর্মপথ হতে বিচ্ছিন্ন হয়েই কেবল “মৌলবাদ”বিস্তার লাভ করছে।সুতরাং এই মৌলবাদ প্রতিষ্ঠা করা কোন শুভ কার্যক্রম নয়।তবে,‘ওয়াহদাত’ আল্লাহ পাকের অগণিত গুণ সমন্বিত মৌলবাদ ইসলাম সমর্থিত।
প্রথমোক্ত মৌলবাদীগণ বহু পূর্ব হতেই তাদের কালো থাবা বিস্তার করে রয়েছে।তারা যুগে যুগে বহু নবী ও রাসূলগণকেও শহীদ করেছে।দেখা গেছে ইসলামের আবির্ভাব লগ্নেও বহু প্রভাবশালী মৌলবাদী ইসলাম বিস্তারে বাধা প্রদান করেছে।উক্ত মৌলবাদীগণ আওবাদের অপকর্ম চালানোর সুযোগ লাভের জন্য বিভিন্ন ধর্মান্তরালে ও মতান্তরালে যুগে যুগে অবস্থান গ্রহণ করেছে।ইসলাম ধর্মের মূল ধারায় তারা কখনই মিশে যেতে পারেনি।
বর্তমান যুগেও আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ধর্মান্তরালে একটি প্রভাবশালী মৌলবাদী শক্তির অস্তিত্ব দেখতে পাই।এদের কেই কেই আবার রাজনীতির ছত্র ছায়ায়,কেউ কেউ ধর্মনীতির ছত্রছায়ায় থেকে সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।আবার বাহিরে বাহিরে ধর্মগুরু সেজে বা পীর-ফকীর সেজেও বহু মৌলবাদী মানুষকে তরীকতের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দোযখের রাস্তায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে।অবশ্য দ্বিতীয় প্রকার মৌলবাদ অর্থাৎ মূল ইসলাম সমর্থিত আল্লাহর (বহুগুণ বিশিষ্ট অর্থবহ)একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বহুত্ব বাদের অবসান সকলেরই কাম্য হওয়া উচিত এ প্রকার মৌলবাদেই ছিলেন রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর বংশধরগণ।সুতরাং তৌহিদ ও ওয়াহদাত ইসলামের মাধ্যমে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রকার মৌলবাদে বিশ্বাসী হয়ে স্বয়ং রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা দ্বীনে ইবরাহীমের নীতিমালার অনুসরনে ঈমান প্রতিষ্ঠার প্রথম উপকরণ হিসেবে উহাকে গ্রহণ করেছেন।এই প্রকার মৌলবাদই ঈমানের সূচনা ঘটায়।আর এই সূচনা হতেই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর উপর বিশ্বাস স্থাপনের মধ্য দিয়েই উহা পরিপূর্ণতা প্রাপ্ত হয়,আর ঈমানের পরিপূর্ণতাই ইসলাম।ইসলাম গ্রহনের প্রয়োজনীয়তাও এ কারনেই।কেননা,রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা কে সৃষ্টি করার উসিলায় বিশ্ব জগত সৃষ্টি করাও যে আল্লাহর গুণের প্রকাশ।
“শুধু মৌলবাদই ঈমানের জন্য যথেষ্ট নয়”
ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথমটি হল ঈমান বা বিশ্বাস।এই ঈমানের প্রথম কালেমা হল;কালেমা তাইয়্যেবা।অর্থাৎ“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর্‌ রাসূলুল্লাহ”।
অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই,হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা আল্লাহর মনোনীত বান্দা ও রাসূল।যদি কোন ব্যক্তি কালেমাটির প্রথম অংশে শুধু বিশ্বাস স্থাপন করে,তবে সে ঈমানদার মুসলমান হতে পারবেনা।সে হবে শুধু মৌলবাদী।
মৌলবাদীগণ সর্বকালে সর্বযুগেই মা’বুদ হিসেবে একমাত্র বিশ্বপ্রভু আল্লাহকে বিভিন্ন নামের মাধ্যমে স্বীকার করে এসেছে।বিভিন্ন ভাষার কারনেই শুধু এই নামটি কিছুটা বিভিন্নতা দেখা যায়।যেমনঃ আল্লাহ,আল্লা,অল্ল,এলি,প্রভৃতি।আল্লাহ পাকের গুনবাচক নামকে কেউ নির্দিষ্ট করেছে কেউ করেনি।হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর মাধ্যমে আল্লাহ পাক মানুষের ,মেনে চলার জন্য ইসলাম ধর্ম দান করেছেন।
ইসলামে আল্লাহ পাকের অগণন গুনের সমষ্টি ঘটেছে।অতএব,মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর প্রদর্শিত পথই কেবল মানুষের জন্য পালনীয়।অন্য কোন পথ নয় এবং মৌলবাদও নয়।
মৌলবাদ দ্বারা বহুবার বহু বড় বড় বিভ্রান্তকারী দুনিয়ার মানুষের ঐক্য গড়ার চেষ্টা করেছে সত্য,কিন্তু এ পথে স্বীকৃতি আল্লাহ পাক স্বয়ং দেননি।কেননা মানব মন্ডলীর চলার পথের মানবমন্ডলীর মধ্য থেকেই আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নবী-রাসূলগণ করে গেছেন।
বিভ্রান্তকারীগণের শ্লোগানে দেখা যায়,দ্বীনে এলাহী,দ্বীনি ভাই,একেশ্বরবাদী,তৌহিদী জনতা,তৌহিদ পন্থী,দারুত্ব তৌহিদী, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”,আল্লাহর দ্বীন,কুরআনের শাসন ইত্যাদি বহু প্রকার শব্দ ও যুক্ত শব্দ ব্যবহার দ্বারা মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
এর মধ্যে একটি শ্লোগান যেটি হচ্ছে “দ্বীনে এলাহী” যা কিনা বাদশাহ আকবর কর্তৃক প্রচারিত হয়েছিল।
ইত্যাকার হাজারো মৌলবাদী শ্লোগান রয়েছে।এগুলো সবই সরলপ্রাণ মুসলমানকে বিভ্রান্ত করার হাতিয়ার স্বরুপ মাত্র।কেননা এরা মানুষকে তাদের উদ্দেশ্য পরিস্কারভাবে বুঝিয়ে দেয় না।
ইসলামী জিন্দেগী বড়ই সুমহান,বড়ই আফজল(সর্বোতকৃষ্ট)।মানুষের চলার জন্য,মানুষের দোজাহানের সফলতার জন্য ইসলামই একমাত্র সরলপথ।ইসলামের নামে বা অন্য যে কোন নামেই হোক,এ সকল বিভ্রান্তকারী দল হতে সাবধান হওয়া সকল মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য।আল্লাহ পাক মানুষকে আক্বল দিয়েছেন,বিবেক দিয়েছেন,তার দ্বারা সঠিক পন্থা বেছে নেয়া খুবই জরুরী।অন্যথায় নিজের কাজের দোষে নিজেই ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য তৈরী থাকতে হবে।অতএব শুধু মৌলবাদই ঈমানের যথেষ্ট নয়।আহাদ(একক) এবং ওয়াহাদাত(বহুগুণ বিশিষ্ট একক) উভয়প্রকার সমন্বিত ঈমান-বিশ্বাসে বলীয়ান হওয়া সকলেরই কর্তব্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×