somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্যার ব্রীজবেন

১২ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রীজবেন এ মোটামুটি বেশ ভালোই বাংলাদেশি লোকজন আছেন তবে সামু ব্লগ পড়েন কয়জন আমি জানি না তবে আপনি বা আপনাদের কেউ যদি ব্রীজবেন বা কুইন্সল্যান্ডে থাকেন তবে একটু কষ্ট করে নিচের লিঙ্ক এ
http://www.ewn.com.au/ নিজের নাম ই-মেইল এড্রেস আর ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্টার করে ফেলুন।
আপনি রেডিও টিভির এর ওয়ার্নিং যদি কোনো কারনে মিস করেন তাহলেও কোনো সমস্যা নাই তারা আপনার এলাকার ওয়েদার এর অবস্থা বুঝে মেসেজ পাঠাবে।

এই মুহুর্তে আরেকটা প্রয়োজনীয় লিঙ্ক হলো
http://www.brisbane.qld.gov.au/
এখানে ব্রীজবেন এর কোন কোন রাস্তা বন্যার জন্য বন্ধ থাকবে সেই ব্যাপারে তথ্য দেয়া আছে।
সেই সাথে আনুমানিক কোন কোন সাবার্ব এ বন্যা হতে পারে সেই এলাকার নিকটস্থ ইভায়াকুয়েশন সেন্টার কোথায় কাউন্সিল থেকে ফ্রি স্যান্ড ব্যাগ দিচ্ছে সেটা কোথায় পাবেন সেই ব্যাপারে একটা ধারনা পাবেন।
আর আপনার এলাকার এস ই এস এর নাম্বার ত জানেনই আশাকরি ১৩২৫০০।

এইবার নিজের কথায় আসি।
এইবারের বন্যা আক্রান্ত এলাকার মধ্যে ডলবি , চিনচিলা , টু-উম-বা এলাকার অধিবাসি ছিলাম প্রায় পাচ বছরের কিছু বেশি সময়। একটা এলাকা আপন হতে আমার কাছে খুব বেশি একটা সময় লাগে না সেই তুলনায় পাচ বছরে ডলবি আমার কাছে আপনেরও বেশি হয়ে গেছে।
ডলবি তে আমি যেই সময়ে যাই সেই সময় এর মোট লোকসংখ্যা ছিলো ৬ হাজার য়ার মূল আয় আসতো ফার্মিং থেকে প্রচুর গম যব মুগ ডাল হয় এই এলাকায়।
আমার ভালো লাগার পেছনে অন্যতম কারন ছিলো এর একদম সমতল এলাকা ফসলের সময় চারিদিকে সবুজের সমারোহ আবার সেই গম পাকলে অনেকটা বাদামী রঙ এর সমারোহ আর এর বাতাসে অনেকটাই বাংলাদেশের গ্রাম গ্রাম গন্ধ লেগে থাকতো সব সময়।
আমি যতবারই শপিং সেরে ব্রীজবেন থেকে ডলবিতে যেতাম আমার মনে হতো যেনো আমি বাংলাদেশের কোনো একটা গ্রামে ঢুকছি।
এই মায়ার টানেই আমি ডলবির এস ই এস এ যোগ দিয়েছিলাম ভলান্টিয়ার হিসেবে আর সেই সুবাদে অস্ট্রেলিয়া আর তার মাটির কাছের মানুষগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখার জানার সুযোগ হয়েছিলো।
শহুরে যেই রাশভারী মুডি রেসিস্ট সাদা অস্ট্রেলিয়ানকে দুনিয়ার সবাই দেখে ঠিক তার বিপরীত চরিত্রের লোকজনে ভরা অস্ট্রেলিয়ার কান্ট্রি সাইড বা গ্রামের লোকজন।
অবিকল বাংলাদেশের গ্রামের লোকজনের মতই তারাও একজনের সুখে সুখি হয় এক জনের দুঃখে দুঃখী হয় আবার বাংলাদেশের গ্রামের কূটনা চেয়ারম্যান মেম্বার এর মত কিছু কুটনা লোকজনও আছে।
বাংলাদেশের গ্রামে অপরিচিত লোকজন দেখলে স্থানীয়রা যেমন কুশলাদী জিজ্ঞেস করে কোথায় যাবেন কি খাবেন জাতীয় প্রশ্ন করে অস্ট্রেলিয়ার গ্রামের অবস্থাও অনেকটাই একই রকম।
আজকেও আমি রোমা থেকে আসলাম যা ব্রিজবেন থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দুরের এক শহর।
আমি কাজ করি সেখান থেকেও প্রায় ১২০-১৫০ কিলোমিটার দুরে।
আমার ফ্লাইট ছিলো দুপুর বারোটায় সকাল দশটায় শহরে পৌছে ভাবলাম একটু কফি খাই সেই হিসেবে রোমার কফি ক্লাবের সামনে যেয়ে এক কাপ কফি নিয়ে যখন আনা ব্লাই আর জুলিয়া এর বন্যা বিষয়ক প্রেস ব্রিফিং দেখছিলাম তখন পাশ থেকে একজন টুক টাক এটা সেটা মন্তব্য করে জিজ্ঞেস করলো বাড়ি কই তোমার?
অনেকটা বাংলাদেশী টানে
আপনার বাড়ী কোথায় ভাই।
হয়ারস হোম ফর ইউ মায়াট।
তারপরে বন্যায় পড়েছি কিনা পরিবার নিরাপদ আছে কিনা।
আরো নানা ধরনের প্রশ্ন
এই যে একটা আন্তরিকতা এই জিনিসটার প্রচন্ড অভাব বোধ করি আমি ব্রিজবেনে এসে।
আজকে প্লেন থেকে নেমে বাসায় আসতে যেয়ে দেখি ট্রেন লাইন এক এক করে বন্ধ হয়ে গেলো আমার চোখের সামনে।
ট্রেনে ইয়েরংপিল্লি পর্যন্ত আসতে আসতে যা দেখলাম তাতে করে খুব বেশি একটা ভরসা পেলাম না।
বাসায় ফিরেই ব্যাগ টা ফেলে ছুটলাম বাজারের উদ্দেশ্যে গিয়ে দেখি কোলস , উলি রিতিমত ঝক ঝকা তক তকা ফক ফকা আটার সেকশনে গিয়ে দেখি সাফা কির কিরা।
দুধ এমনকি পাউডারের দুধও নাই।
ডিম নামে যে কোন বস্তু আছে সেইটাও মনে হলো উলির লোকজন ভুলে গেছে।
ঘরে ফিরে লনের দিকে তাকিয়ে মনটা আরেক চোট খারাপ হলো ।
দেশে বিদেশে যেই লোকগুলো আমাকে একটা সময় তাদের আদর স্নেহে বেধে রেখেছিলো আজকে কি অবলীলায় তাদের ফেলে রেখে আমি সামনের দিনের প্রহর গুনছি।
Such is life




৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×