somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতীয়দের অর্ধেকই প্রাকৃতিক কাজ সারে উন্মুক্ত স্থানে

২০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম থেকে সংগ্রিহি
১২০ কোটি অধিবাসীর ভারতে অর্ধেক মানুষই খোলা আকাশের নীচে মলত্যাগ করে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, ভারতের মোট বসতবাড়ির অর্ধেকেই কোনো শৌচাগার নেই। অথচ দেশটিতে এর থেকে বেশি মানুষের হাতেই রয়েছে মোবাইল ফোন।

ভারতের মোট ২৪ কোটি ৪৬ লাখ বসতবাড়ির মধ্যে শৌচাগার আছে ৪৬.৯ শতাংশ বাড়িতে। বাকি ৪৯.৮ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচেই কর্মটি সম্পন্ন করেন। ৩.২ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা ব্যবহার করেন পাবলিক টয়লেট। ভারতের শুমারি বিভাগের এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১১’র সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায় যে ভারতের ৬৩.২ শতাংশ বাড়িতেই টেলিফোন সংযোগ আছে। অর্থাৎ যে বাড়িতে টয়লেট নেই সেই বাড়িতেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন জরিপের এই তথ্য একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে সমাজব্যবস্থার বিশেষ করে ভারতীয় সমাজের জটিল প্রকৃতি ও অসঙ্গতিপূর্ণ বৈপরীত্যকেই উন্মোচন করছে।

অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফলভোগী ভারতের কোটি কোটি মানুষ যেখানে নিত্যনতুন প্রযুক্তির পণ্যসামগ্রী ক্রয় করার সামর্থ্য রাখে সেখানে ন্যুনতম মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশটির অর্ধেক মানুষেরই এমনকি টয়লেটে যাওয়ারও সঙ্গতি নেই।

জরিপে দেখা যায়, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খন্ড রাজ্যের ৭৭ শতাংশ বাড়িতেই টয়লেট নেই। উরিষ্যায় এই হার ৭৬.৬ শতাংশ এবং বিহারে ৭৫.৮ শতাংশ। এই তিনটি রাজ্যই ভারতের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল যেখানে বেশিরভাগ মানুষই দৈনিক এক ডলারেরও কম আয়ে জীবন ধারণ করে।

ভারতের শুমারি কমিশনার এবং রেজিস্ট্রার জেনারেল সি চন্দ্রমউলি গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের সময় বলেন, ‘খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ অব্যাহত থাকা ভারতের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের ব্যাপার। দেশের অর্ধেক মানুষই এই কাজে বাধ্য হচ্ছে।’

প্রচলিত সংস্কৃতি ও সংস্কার এবং উপযুক্ত শিক্ষার অভাবই এ ধরণের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের জন্য দায়ী বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আরো অনেক রাস্তা পাড়ি দিতে হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

জরিপে এর পাশাপাশি ভারতের পরিবার ব্যবস্থা সম্বন্ধেও আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। ভারতীয় পরিবারগুলোর ৭০ শতাংশই এখন এক দম্পতি বিশিষ্ট। এই ফলাফল ভারতের পারিবারিক এবং আর্থসামাজিক অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন নির্দেশ করে যেখানে পূর্বে যৌথ পরিবারকেই  ভারতীয় ঐতিহ্যের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

এছাড়া বিনোদন ও তথ্যের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের সমাজ জীবনে কি ধরণের পরিবর্তন ঘটেছে তার একটি চিত্রও উঠে আসে জরিপের তথ্যে।

জরিপে দেখা গেছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫৩.২ শতাংশই বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। এছাড়া ৪৭.২ শতাংশের বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। তবে এখনও কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও পিছিয়ে আছে। মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.১ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধাসহ কম্পিউটার ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে আসে।

এই জরিপ আসলে সবার সামনে একটি তিক্ত সত্য উন্মোচিত করে। দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে যেখানে ভারতে সৃষ্টি হওয়া উঠতি মধ্যবিত্ত ও ধনিক শ্রেণি নাগরিক জীবনের সাম্প্রতিকতম সুবিধাগুলো সহজেই গ্রহণ করতে পারে সেখানে উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হয়ে দেশটির বেশির ভাগ মানুষই এখনও তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারে না।

বাজার অর্থনীতির এই যুগে এ সত্য শুধু ভারতের জন্যই প্রযোজ্য নয়, বরং তৃতীয় বিশ্বের স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল সব দেশের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।

সম্পদের সুষম ব্যবহার এবং সামাজিক সমতা এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি উপায় হতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১১:৩৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×