‘বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান’ চার খণ্ড পড়ে ভীষণ লজ্জা পেয়েছিলাম। বইগুলো পড়ে মনে হয়েছিল, লেখক একজন বড় মাপের আবর্জনা। লেখার ধরন দেখাচ্ছি- ওহমের সূত্র জনৈক মুসলমান বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন। অতপরঃ সে আবিষ্কার আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ছিল। জাদুঘরটি আগুণে পুড়িয়ে দেয়া হলে তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। অনেক পরে মিঃ ওহম ওই সূত্র আবিষ্কার করেন।..
.. প্রশ্ন জাগবেই, আপনি জানলেন কেমনে ওহমের সূত্রই ওই লাইব্রেরিতে ছিল? আর জানলে আগে কেউ বলেনি কেন? এভাবে অন্যের অবদান ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে গতি হয় না। আমাদের পদার্থবিদ্যায় এমএসসি করতে গিয়ে কোন মুসলমানের আবিষ্কার করা কিছু পড়তে হয়নি। ইসলামিক স্বর্ণযুদের বিজ্ঞানীরা অনেক অবদান রাখছিলেন। তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করার পরে মুসলিম-বিশ্ব জুড়েই রয়েছে মানহীন ও বিজ্ঞানবিরোধী শিক্ষা। তারা বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানমনষ্কতাবিমূখ। এ অবস্থায় তাদের বিজ্ঞানে অবদান থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। আগেতো অর্জন করতে হবে, তারপর প্রত্যাশা করতে হবে। শুধু কি বিজ্ঞানী? একজন বিশ্বমানের সাহিত্যিক, দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়ক, অর্থনীতিবীদ মুসলিম দেশগুলোতে আমরা দেখি না। শুধু মনে মনে সন্দেশ খেলে লাভ নেই, কিনে খাওয়ার অথবা বানিয়ে খাওয়ার সামর্থ্য অর্জনটাই বড় কথা।
ডা. মরিস বুকাইলি রচিত ‘বাইবেল কোরআন বিজ্ঞান’ বইটি পড়েছিলাম সেই ছাত্রজীবনে। বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে আমি বুজেছি তিনি ডাক্তার হতে পারেন, বিজ্ঞান বুঝেননি। পরে পড়লাম তার ‘আল কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান’। মরিস মুসলমান হননি কেন? এটা একটা বড় প্রশ্ন। যিনি ‘বাইবেল কোরআন বিজ্ঞান’ লিখবেন তিনি মুসলমান না হন কি করে? তাহলে কি এটাও তাঁর বাণিজ্য? তিনি সৌদি রাজপরিবারের চিকিৎসক ছিলেন, মিশরের আনোয়ার সাদাতের পরিবারও তার চিকিৎসা নিতেন। তাঁর প্রথম বইটি খুবই আলোচিত হয় এবং মুসলিম দেশগুলোর বহু ভাষায় অনুদিত হয়। আমি আগেও ভেবেছি, এ বই তাহলে তার লেখার উদ্দেশ্য কি? বই বিক্রিই শুধু? হিন্দুদের অবস্থাও কাছাকাছিই। বছরখানেক আগে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার একজন শিক্ষকের সাথে পরিচয় হয়েছিল- তিনি কালীর সাধনা করেন!! এর মানে হল, পদার্থবিদ্যার সাধনা করার সামর্থ্য তার নেই। আমি তার সাথে অনেক বিতর্ক করলাম। তিনি কোন যুক্তি মানবেন না, বস্তু বুঝবেন না- শুধু অলৌকিকতা বিশ্বাস করবেন। তিনি বললেন, কালিও শক্তি, পদার্থও শক্তি, এক হলো না! কি করার? তবে আশাও আছে? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় বন্ধু আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ভাই জানিয়েছিলেন, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে, বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানে আগ্রহী শিক্ষার্থী অনেক বেড়েছে।