somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চার অকর্মন্য একসাথে(হাস্য রসাত্নক গল্প)

২৬ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ আজাদ আরমান আসাদ আকাশ তারা চার বন্ধু।সবসময় একসাথে থাকে।সবকাজ একসাথে করে।তাদের সর্বশেষ পরীক্ষা মাধ্যমিক ফেল ও তারা একই ইয়ারে একসাথে করেছে।চারজন একসঙ্গে ও বিতাড়িত হয়েছে ঘর থেকে।

চারবন্ধুর আজকে একসঙ্গে ভীষন ক্ষিধা লেগেছে।চারজনের পকেট ছেড়া একই সঙ্গে।চারজনের পকেটে একটা সিকি ও নাই।চার সিকি মিলে একটাকা হলে ও দেখা যেত কি কেনা যায়।তার উপায় নাই দেখে চারজন চারজনকে গালিগালাজ শুরু করল।

ফকিরের গোষ্ঠিগুলার সাথে বন্ধুত্ব হইছে পরস্পর পরস্পরকে এই বলে গালিগালাজ শুরু করল।

আজকে বৈশাখ মাসের দশতারিখ।মাথার উপর কড়া রৌদ।সবার মাথা তেতে আছে উত্তাপে।পাকস্থলী তেতে শুকিয়ে গিয়েছে খাদ্যের অভাবে।

চারজন উপবাসী।সিরিয়াস মুখ করে ভাবছে কি করা যায়।

সায়দাবাদ বাসষ্ট্যান্ড এ বসা চারজন।

এইসময় আরমানের প্রস্তাব দোস্তরা চল ছিনতাই করি বীরের ভঙ্গিতে তার উদাত্ত আহবান।

উঁহ ছিছকা ছুরির সাহস নাই উনি করব ডাকাতি।ফোড়ন কেটে বলে উঠে আসাদ আরেক অকর্মন্য।

ব্যাপারী বাপের পকেট টা যদি কাটতে পারতিস তাহলে বুঝতাম তুই বাপের বেটা ।যা যা এই মুখ আর দেখাসনা।ডোবাতে ডুবা মর তুই।

তুই মর বেটা।দুইজনের হাতাহাতি লেগে গেল।

শেষে চারজনের বৈঠকে এই সিদ্বান্ত হল তাদের সামনে এক গোবেচারা পরিবার দেখা যাচ্ছে মা বাবা তাদের দুই মেয়ে।চারজনের হাতে বিশাল চার বোচকা আর বাবা আর মায়ের অন্য হাতে খাচা যাতে আছে গোটা কয়েক মুরগী না মোরগ ঠিক বুঝতে পারলনা আর দুইটা পিঠার পাতিল হবে সম্ভবত।

এমন সময় একটা বাস তাদের দিকে আসতে লাগল।চারজন ঈশারায় বলল এখনই বোচকাগুলি নিব লাফ দিয়ে বাসে উঠে পড়ব।

যেই ভাবা সেই কাজ।চারজনে দৌড়ে এসে চার অসহায়ের ঝোলা ধরে টান দিল।

হায় হায় হায় হায় রে বলে বৃদ্ধ লোকটি তাদের পিছনে দৌড়ানোর চেষ্টা করল।ততক্ষনে চার ফাজিল বাসে চড়ে বসল।

এর মধ্যে আজাদের হাতের মাটির পাতিল মাটিতে পড়ে ভেঙ্গে গেল যেটাকে পিঠার পাতিল মনে করে খাওয়ার জন্য ছিনতাই করেছিল।

পাতিল ভেঙ্গে বের হয়ে আসল ইয়া বড় বড় শিং মাছ।অসময়ে এই উৎপাতের জন্য তারা বেশ বিরক্ত।এক দশাশই শিং গড়িয়ে এসে আজাদের পায়ে কাটা দিয়ে গুতা মেরে দিল।

মাগো বাবাগো বলে আজাদ লাফিয়ে চিৎকার করতে লাগল।এই অকর্মন্য কে বাচাতে কেও ই ছুটে আসলনা। সবাই চাচা আপন প্রান বাচা গতিতে কেও সিটের উপর পা তুলে বসে রইল কেও বা বাসের ষ্ট্যান্ড ধরে ঝুলে পড়ল।কেননা শিং মাছ গুলি সারা বাসের ভিতরে পানি বিনে সাতার কাটতে শুরু করল।

সারা বাস যাত্রীরা বাচার আর কোন রাস্তা খুজে পেলনা।সবাই একযোগে আল্লাহ র নাম জপতে লাগল।

২মূহূর্তের মধ্যে দজ্ঞযজ্ঞ বেধে গেল সারা বাসে।মুরগী গুলি কক করে সারা বাসে উড়ে বেড়াছে।কোন কোন মুরগী আত্মহত্যার ভঙ্গিতে জানালা দিয়ে লাফ মারার চেষ্টা করছিল।তাতে সফলকাম হতে পারেনি বেচারী মুরগীগুলি।দুইটি মুরগী জানালার গ্লাসে বাড়ি খেয়ে একটি কন্ডাকটারের কাধে চড়ে বসল আর অন্যটি উড়ে এসে হুইলের উপর এসে বসল।

আরে বাপরে বলে ড্রাইভার এক্সিলেটারে চাপ দিয়ে জোরে ব্রেক কষে গাড়ী থামিয়ে দিল।এবার মুরগী লাফ দিয়ে পড়ল ড্রাইভরের কোলে।

এটারে সরা সরা যা যা বলে হাত দিয়ে মারার ভঙ্গি করে বাস ড্রাইভার মুরগী তাড়ানোর চেষ্টা করছে।

মুরগী কি আর বাংলা কথা বোঝে।সে তার কক স্বরে তার প্রতিবাদ জাননোর চেষ্টা করছে।মুরগী টা একবার বাড়ী খাচ্ছে মিররে।বাড়ী খাওয়ার পর পড়ছে ড্রাইভারের কোলে।ড্রাইভার বেচারা চেষ্টা করছে ঘাঢ় ধাক্কা দিয়ে মুরগী টারে ফেলতে ।ফাজিল মুরগী শক্ত করে শার্ট কামড়ে ধরে আছে।মনে হচ্ছে দুইজনে কুংফু কারাতে প্র্যাকটিস করছে।কেও কাওরে ধরতে পারছেনা।

রাগে ড্রাইভারের তোতলানী শুরু হয়ে গেল ।গালিগালাজের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল কন্ডাকটার আর যাত্রী লক্ষ করে।

ওওওওওইইই তোগো রার মুরগা সেই বেটা আর মুরগা সহ লাথি মাইরা বাস থাইকা ফালা।কন্ডাকটারের উদ্দেশ্যে দাত খিচিয়ে বলল।

এদিকে কন্ডাকটার বেচারা ঘুরতেছে লাটিমের মত মুরগী খপ করে ধরার জন্য।

তাকায়ে দেখে ড্রাইভার নিশ্চুপ সন্মোহিত হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।ড্রাইভার রহমত এমনভাবে শিংগীর চোখে র দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে শিংগী এখন সাপ হয়ে ছোবল দিবে।

রহমত মিঞা আস্তে আস্তে তার টাওয়েল বিছানো গদি ছেড়ে উঠে দাড়াল।আস্তে আস্তে যত নিঃশব্দে সম্ভব বের হওয়ার চেষ্টা করল।কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা টের পেয়ে শিংগীটা আস্তে শিংটা পায়ের পাতায় ঢুকিয়ে দিল।

আধাঘন্টা পরে চার অকর্মর্ন্য বন্ধু তাদের বোচকা মুরগী শিংগী সহ গারবেজের পুটলীর মত রাস্তায় নিক্ষিপ্ত হল।

রাস্তায় আছড়ে পড়ার পরে চারজন ই ভ্যাবলা হয়ে গেল।কিছুক্ষন তদের ব্রেইন কাজ করছিলনা। কিভাবে এই রাস্তায় এসেছে কেন পড়েছে মনে করতে পারছিলনা।

চারজন ওইভাবে মাটিতে দম ধরে পড়ে রইল।

উঠতে গিয়ে আসাদের চোখাচোখি হয়ে গেল সামনের একমেয়ের সাথে তার বাবাসহ যাদের জিনিস নিয়ে তারা চম্পট দিয়েছিল।

বাবা মেয়েটা চিৎকার দিয়ে বলল সকালের চোরা গুলা।

এই ধর ধর চোর বলে প্রায় শখানেক মানুষ তাদের দিকে ছুটে আসতে লাগল।
চারজন দিকবিদিকশূন্য হয়ে রুদ্ধশ্বাসে দৌড়াতে লাগল।তাদের পিছনে মারমুখী জনতা।

পরবর্তীতে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪২
৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×