somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)
নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার 'কলম'।

ভ্রমণ আখ্যান "পরবাসে পরিযায়ী"

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরবাসে পরিযায়ী মূলত আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী উপজীব্য বই।আমার কাছে এই পৃথিবীটা একটি বৃহৎ পর্যটন স্থান। একটি নশ্বর শরীরকে অবলম্বন করে আমাদের অস্তিত্ব বা আত্মার এই ভবে কিছু সময়ের জন্য আগমন। প্রকৃতির ধ্রুব কঠিন বাস্তব নিয়মের মধ্যে প্রাণীজগতের আমরা সবাই আবর্তিত।এই দেহ ছেড়ে আত্মার প্রস্থান কার কখন তা কেউ জানেনা। দেহে আত্মার অবস্থানকালে পৃথিবীকে ঘিরে থাকে আমাদের নানা রঙ্গিন স্বপ্ন ও পরিকল্পনা। কিন্তু, প্রকৃতির ডাক আসলে সবকিছু ফেলে হুট করেই প্রিয় দেহটিকে ছেড়ে আমাদের মূল গন্তব্যের দিকে যাত্রা করতে হয়। এই পৃথিবীতে অবস্থানের সময় কার কতটুক তা আমরা কেউ জানিনা। তাই, স্বল্প সময়ের অনিশ্চিত সময় সীমার মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রাণ প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে জীবেনর সুখ সন্ধান করা আমার অন্যতম নেশা। নতুন স্থান, সেখানকার বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি,মানুষের জীবনযাপেনর বৈচিত্রতা ,সংস্কৃতি সব সময় আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে।
সেই আকর্ষণে প্রবাসের ব্যস্ততার মাঝে সুযোগ হলেই ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ি ।সঙ্গে থাকে মুহূর্ত ধরে রাখার আমার প্রিয় ক্যামেরা।ঘুরে বেড়ানোর বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা লিখে বর্ণনা করা আমার প্রিয় সখগুলোর মধ্যে একটি।পরবাসে পরিযায়ী মূলত আমার সেই অভিজ্ঞতার এক ডায়েরী।

ভ্রমণ সম্পর্কে আমার নিজস্ব একটি মূল্যায়ন আমার বইয়ের পাতা থেকে তুলে ধরছি ,

« আমরা পৃথিবীর বেশীর ভাগ মানুষ এই বিশ্বের কোন এক প্রান্তে জন্মগ্রহণ করে ঐ প্রান্ত থেকেই বিদায় নেই।কিন্তু, আমাদের এই ধরিত্রী যে কত বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যে ভরপুর তার কিঞ্চিত অংশও দুচোখ মেলে দেখার সৌভাগ্য হয়না।পৃথিবীর কোথাও সমভূমিতে ফসলী মাঠের বাতাসে নেচে চলা,কোথাও আকাশমুখী পাহাড়ের দাঁড়িয়ে থাকা,কোথাও বৃক্ষরাজিহীন উত্তপ্ত ধূধূ মরু প্রান্তর,কোথাও আগুনের লাভা উদগীরণকারী আগ্নেয়গিরি,কোথাও সবুজে সবুজময় প্রাণ প্রকৃতিতে ভরপুর বনভূমি,কোথাও অবিরাম ঝরে পড়া স্বচ্ছ জলের ঝর্নাধারা, কোথাও তুষার ধবল বরফে ঢাকা অঞ্চল,আবার কোথাও ধুধু জলরাশির নীলচে সমুদ্র। এই বৈচিত্র্যতার সবকিছু যে মানুষ দেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে পারলো,আমার মনে সেই মানুষটিই পৃথিবীর সবচেয়ে সৌভাগ্যবান।যে মানুষ সারা জীবন অর্থ উপার্জন করে শুধু ব্যাঙ্কের জমা অর্থের পরিমাণের অংক দেখে জীবন কাঁটালো কিন্তু দুচোখ মেলে পৃথিবীর এই বৈচিত্র্যতা দেখার সময় বের করতে পারলো না, তার থেকে হতভাগা কেউ হতে পারে বলে আমার মনে হয় না »

এটি ভ্রমণ কাহিনীর একটি সচিত্র গ্রন্থ। ভ্রমণ কাহিনীর সঙ্গে ছবিগুলো বইয়ের পাতায় চার রঙয়ে স্থান পেয়েছে। যা পাঠকে ভ্রমণ স্থানের বর্ণনা পড়তে পড়তে যে কল্পনার সৃষ্টি হবে সেখান থেকে কিছুক্ষণের জন্য বাস্তবতায় নামিয়ে আনবে।
বইটিতে মোট ষোলটি ভ্রমণ কাহিনী রয়েছে। প্রতিটি ভ্রমন কাহিনীতে ঐ অঞ্চলের বিশেষত্ব,সংক্ষিপ্ত ইতিহাস,ঐতিহাসিক ব্যক্তিবর্গের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, ,ঐতিহ্য, খাবার, মানুষের জীবনাচারণ এবং আমার নিজস্ব মূল্যায়ন সংমিশ্রিত হয়েছে।যা পাঠকে নতুন কোন অঞ্চল সম্পর্কে জানার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে, এটা আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। বইটি বাংলাদেশ, স্পেন, এবং বিশেষ করে ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানে আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতার উপর লেখা।

বইয়ের পাতায় বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগরের সৌন্দর্যের বর্ণনা রয়েছে। সেইসাথে রয়েছে সাগরপারে গড়ে ওঠা শহর ও মানুষের কথা। রয়েছে ফ্রান্সের বিভিন্ন পর্যটন শহর ও গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর ইতিবৃত্তান্ত।

নন্ত শহরের লোয়ার নদীর পারে দাঁড়িয়ে আমার স্মৃতির পটে ভেসে ওঠা ছেলে বেলার গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা পদ্মার সুতো নদীকে কেন্দ্র করে সোনালী স্মৃতিকথা কিছু সময়ের জন্য অনেকেই আশির দশকের বাংলার গ্রামীণ জীবনের ফিরিয়ে নেবে।যে নদীকে হত্যা করা হয়েছে ।রাজবাড়ীর নতুন প্রজন্ম পরবাসে পরিযায়ীর মাধ্যমে জানতে পারবে একটি বিলীন হওয়া নদীর সেকালের চিত্র এবং ইতিহাস।

যাদের পর্বতে ঘুরে বেড়ানোর নেশা রয়েছে, তারা আমার « বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো » শিরোনামের পাঁচ পর্বের লেখার ভেতর দিয়ে এক ভিন্ন রকম পাঠ আনন্দ লাভ করবে।পর্বগুলোতে ইউরোপের আল্পস পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মোঁ ব্লঁ, সারা বিশ্বের পর্যটকদের স্বপ্নের নগরী শামনি,বরফের চাদরে ঢাকা শামনি গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে সরু লারভ l’Arve নদীর বরফ শীতল জলের তির-তির করে বয়ে চলার দৃশ্যের বর্ণনা রয়েছে।সেই সাথে ভূমি থেকে ২৫২৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত লো ব্রেভো (Le Brévent) চূড়া থেকে উড়ন্ত পাখির দৃষ্টির মত ভূমি দেখার দেখার ভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং ভূমি,আকাশ ও আদিগন্ত পাহাড় চূড়ার দিকে তাকিয়ে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মাঝে নিজের অবস্থায়ের অনুভূতির বর্ণনা অনেকের ভাবানার ঘোরাক যোগাবে।

যারা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন,প্রকৃতি ভালোবাসেন,প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে জীবনের আনন্দ খোঁজেন, যারা পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্যই আমার বই « পরবাসে পরিযায়ী »।
মুহাম্মদ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×