আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এই ২০২০ সালে এসেও বাল্য বিবাহ, যৌতুক প্রথা, মানুষের জমির আইল টানা, ঝগড়া হলেই চির দুশমনি শুরু হওয়া, প্রতিবেশীকে ঠকিয়ে খাওয়া থেকে শুরু করে আরো যা যা ঘটে, এর পেছনে আমাদের গ্রামের সব মসজিদে শুক্রবারে যেটা কিতাবটা দেখে খুতবা দেয়া হয় সেই 'বার চান্দের খুৎবাহ' নামক বই খানা অনেকাংশে দায়ী।
কারন এই বইখানা আমাদের ইমামদের একটি নির্ধারিত আলোচনার মধ্যে বন্ধি করে রেখেছে। প্রতি বছর ঘুরে ফিরে পাব্লিক শুধু আরাবী কিছু বাক্যের গঠনই শুনে যায়। হুজুরের মুখের এক্সপ্রেশনে মাধ্যমে 'এখন জান্নাতের হুর কিংবা জাহান্নাম নিয়ে কিছু বলতেছেন' এর বাহিরে আর কিছুই বুঝে না পাব্লিক।
আমার আধ্যাত্মিক শিক্ষক ছারছিনার মরহুম প্রিন্সিপাল আলহাজ্জ মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ আবদুল কাদির হুজুর যখন এটি লিখেছিলেন তখন হয়তো ৩০-৪০ বছরের আগামীকে চিন্তা করে লিখেন নাই। তিনি সেই সময়ে ইমামদের কাজকে কিছুটা সহজ করে দেয়ার জন্য এটা লিখেছিলেন। কিন্তু সেটা যে এভাবে অবুঝ মানুষদের কাছে আরেকটা আসমানী কিতাবের মর্যাদা পাবে, এটা উনিও বুঝেন নাই। মানুষ যে এটাকে, খুৎবার মূল বিষয় দৈনন্দিন জীবন, দেশ, রাজনীতি বা মানুষের সামাজিক মূল্যবোধ এগুলো থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে এটাও বুঝেন নাই।।
এটা না হলে ইমামেরা যদি এত বছর যাবত প্রতি শুক্রবার একটু একটু করেও বুঝাতেন যে, অন্যের আইল ভেঙ্গে নিজেরটা বড় করতে হয় না, কেউ কালো বলে তাকে ছোট করা গুনাহ, অন্যের গিবত করা উচিত না, যৌতুক হারাম, মেয়ের বাবা বলে তাকে ছোট করতে হয় না ইত্যাদি বাংলায় সব বুঝাতেন, তাহলে এত দিনে কিছুটা হলেও সমাজে পরিবর্তন আসত।
যুবক ইমামেগন-ই পারেন এখন এই বন্ধি থেকে বেড়িয়ে আসতে।।