somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

সমতার স্বপ্ন: বাস্তবতার আয়নায়

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিছু প্রশ্ন:

১. আমাদের সবার জীবনের মূল্য কি সমান?
২. আমাদের সবাইকে সবার কি সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত?
৩. সবার কি সমান পরিমাণ বাঁচার অধিকার আছে?
৪. আমাদের শ্রম এবং তার ফলাফল কি সমান?
৫. আমরা সবাই কি সমান পরিমাণ সুযোগ পাই?

নারী-পুরুষের সমতার কথা আপনার মাথায় হয়তো চলে এসেছে কারণ এসবই তো বাজারে বেশি চলছে। কিন্তু আজ আমি প্রতিটি মানুষের সমতার কথা বলছি। আমি প্রতিটি মানুষকে এক কাতারে ফেলে হিসাব করতে চাইছি। ‘নৈতিক (Moral Equality)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমাদের সবাইকে সমান ভাবে দেখা উচিত। ‘দার্শনিক (Philosophical Equality)’ দৃষ্টিভঙ্গি তে, ‘Context’ অনুযায়ী পাল্টায়। ‘আইনের (Legal Equality)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, “আইন সবার জন্য সমান।” গণতান্ত্রিক দেশে আইন সবার জন্য সমান না হলে সে দেশে দূর্বল গণতন্ত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়।

‘সুযোগের সাম্যতার (Equality of Opportunity)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, সফলতা পাওয়ার জন্য আমাদের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত। কিন্তু সত্যিই কি সফলতা পাওয়ার জন্য আমরা সমান সুযোগ পাই? ‘সমতা বনাম পরিমাণের (Equality Vs Equity)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, কিছু মানুষ একটু বেশি সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। কিছু মানুষ অন্যদের চেয়ে একটু বড়।

যেমন ধরুণ, একটি দেয়ালের একপাশে তিনজন মানুষ আছে, অন্যপাশে আছে এক বাগান। এখন ঐ বাগান দেখতে হলে সবাইকে যদি এক উচ্চতার চেয়ার দেওয়া হয় তাহলে হতে পারে ৩ জনের মধ্যে শুধু একজন বাগানটি দেখতে পাবেন কারণ তার উচ্চতা বেশি। সুতরাং উচ্চতা বুঝে আপনাকে তিন ধরণের চেয়ার বা বক্স দিতে হবে। তাই নয় কি?

কিছু মানুষ সরকারী হাসপাতালে সেবা নেন আবার কিছু মানুষ প্রাইভেট হাসপাতালে সেবা নেন। কিছু মানুষ সরকারী স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন আবার কিছু মানুষ প্রাইভেট স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। সরকারী সেবার মান এবং প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সেবার মান কি একই রকম? যদি একই রকম না হয় তাহলে আমরা সবাইকে সমান অধিকার দিতে পারছি?

‘সাংস্কৃতিক (Cultural Relativism)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, কোন সমাজ বা দেশের সংস্কৃতি অন্য কোন সমাজ বা দেশের সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতে পারে এবং এই যে ‘সমতা’ শব্দ সেটাও সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতি ভিন্ন হতে বাধ্য। সুতরাং আপনি যখন ‘সমতা’ বলছেন তখনই বিষয়টি আপেক্ষিক হয়ে যাচ্ছে।

‘আইনের সমতার (Legal Equality)’ দৃষ্টিভঙ্গিতে, আইন তো সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। কিন্তু সবাই কি একাধিক আইনজীবী নিজের পকেটে রাখতে পারেন? টাকা না থাকায় কিছু মানুষ আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য ‘ব্লাস্ট’, ‘জাস’, ‘আইনজীবী সমিতি’, ‘আইন ক্লিনিক’, ‘বেসরকারি আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান’ -এ কেন দৌড়াদৌড়ি করেন? এতে করে, “Justice becomes nullified…” হয় না? ‘ন্যায়’ এর সংজ্ঞা পরিবর্তন হয় না? সাদা কে কালো আর কালো কে সাদা করার এই লড়াইয়ে কেউ কেউ কেন সবসময় কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকেন? বা আমাদের কেন এরকম মনে হয় বলুন তো?

কিছু সমালোচক বলছেন, সূক্ষ্ম চিন্তায় সবাই সমান নন। সবাইকে সমান বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব নয়। ব্যক্তি তার অর্জন বা ফলাফল বা পুরষ্কার পান তার কর্মের জন্য। তারা আবার এটিকে নাম দিয়েছেন ‘মেধাতন্ত্র (Meritocracy)’। ‘সেবা’ একজন মানুষের তার সমস্যার জটিলতার উপর নির্ভর করবে, যে, তিনি সরকারী হাসপাতালে যাবেন নাকি প্রাইভেট হাসপাতালে। ঠিক তেমন করে, একজন ছাত্র/ছাত্রী ওটুকুই বই পাওয়ার যোগ্য বা তথ্য পাওয়ার যোগ্য যেটুকুতে সে আগ্রহী বা সামর্থ্য রাখে। প্রতিটি মানুষের মানসিক/শারীরিক/সামাজিক ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় টেইলরিং করে তাকে প্রাপ্য ‘সুযোগ (Opportunity)’ দেওয়া হবে।

এমনকি শান্তির ধর্ম ইসলামে ‘সমতা’ এর কথা বলে কিছু দ্বান্দ্বিকতার উপমা দিয়েছে। আচ্ছা, বলুন দেখি, ঈমাম সাহেব এবং মুসল্লীদের একজন কি সমান? একজন মুফতি আর একজন সাধারণ মানুষ কি সমান? সুন্নি মুসলমানরা সমান মনে করেন, শিয়া মুসলিমরা সমান মনে করেন না। আবার সামাজিক প্রেক্ষাপটে সুন্নি এবং শিয়া দুই ভাগই সমান মনে করেন না। কিন্তু আল্লাহ্ সবাইকে সমান চোখে দেখেন। সবাইকে নিয়ে সমান ভাবেন। ফের, বাঙালীরা (হিন্দু ও মুসলিম) নারী ও পুরুষ কে অনেক আলাদা এবং কোনোভাবেই সমান মনে করেন না। কি অদ্ভুত তাই না?

বেঁচে থাকার শর্তে, একজন খুনী, সন্ত্রাস, ধর্ষক, দুর্নীতিবাজ এদের কি কোনরুপ বাঁচার অধিকার আছে? যদি নাই থাকে, তাহলে সেটাও বা কে ঠিক করবে? কোন আদালত? যদি বড় আইনজীবী তার আত্মপক্ষ সমর্থন করেন? যদি ‘Social Contract Theory’ কিছু অন্যায়কে ন্যায় বলে? যদি তিনি পুলিশের হাতে ধরা না-ই পড়েন তো? তারচেয়েও বড় কথা, আমার সমতার বিষয়টি না হয় পরিষ্কার হতে পারলাম না কিন্তু আমার বাঁচা বা মরার অধিকারের বিষয়টি কে নির্ধারণ করবে?

ছবি: Bing Enterprise
Also Read It On: সমতার স্বপ্ন: বাস্তবতার আয়নায়
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৩৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×