somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লালন ফকিরের গান নিয়ে সাদাসিধে কথা

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্ব

লালন ফকির। এই নাম কারো অজানা নয় এখন। আমার কাছে লালন ফকির পুরোপুরি চেনা না। অর্ধ চেনা। তাঁর পুরো অবয়ব আমি আমার চেতনার রঙে দেখতে পারিনা, দেখার চোখ আমার অর্ধকানা। কিভাবে লালনকে দেখবো - অর্ধকানা চোখে - তাই ভাবি। আমার ভাবনার সব জায়গা জুড়ে লালন নাই কেনো? এইটা লালন ফকিরের কোন কারসাজি নাকি? ভাবি, আমি এই নিয়ে। তাঁর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে ঠুলিপরা চশমারা দিস্তার পর দিস্তা কাগজ শেষ করছে, আমার করুণা হয় তাদের জন্য। অর্ধকানা যদিও, তবু ঠুলিপরা চশমার ভিতর দিয়ে লালনকে দেখা সম্ভব নয়। এই আমি ভাবি।

তাঁর গানই আমার কাছে মুখ্য। তাঁর গানের ভিতর দিয়ে তাকে অবলোকন করা জরুরি। বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের ইতিহাসে তাকে স্থাপন করতে হবে তাঁর গানে জলমগ্ন হয়ে। গানের ভিতর দিয়ে জীবনকে কি দেখা যায়, সমাজকে কি অবলোকন করা যায়? সমাজের মানুষকে কি পড়তে পারা যায়? আমি লালনের গান নিয়ে যখন ভাবি তখন মনে হয় লালনের গানের ভিতর দিয়ে এসব করা যায়। খুব সহজ নয় তা। কিন্তু তা করা যায়। এজন্য সে মুসলমান না হিন্দু, কোন পরিবারে, কোন পরিবেশে তাঁর জন্ম তা জানার কোন দরকার হয়না।

লালন ফকিরের প্রতিভা ছিল প্রকৃতির মতো। সবুজ। ঘাসের ডগায় বৃষ্টির পানিতে ভিজে ওঠা রোদের মতো তাঁর প্রতিভার স্ফূরণ তাঁর গানে গানে আমরা পাই। সে যে গান বেঁধেছেন তার বিষয়-মাহাত্ম অনন্য, ভাষার সাবলীলতা সকল মানুষের অন্তরে সুরের এক মহাজাগরণ তোলে, তাঁর প্রকাশভঙ্গির সুড়ঙ্গে আমাদের জীবনবোধের অন্ধকার চিরে চিরে যেন আমাদের প্রাকৃতরূপকে উপলব্ধি করতে পারি। আমার তাই মনে হয়। তাঁর গান সকল শ্রেণির মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারে এর কারণ লালন ফকিরের ভাষা আমাদের নিকটের ঘ্রাণে লেপটে আছে।

আমার প্রিয় একটি গান তুলে দিচ্ছি

এ গোকুলে শ্যামের প্রেমে কেবা না মজেছে সখি।
কারও কথা কেউ বলে না, আমি একা হই কলঙ্কী।।
অনেকেতে প্রেম করে
এমন দশা ঘটে কারে
গঞ্জনা দেয় ঘরে পরে
শ্যামের পদে দিয়ে আঁখি।।
তলে তলে তল গোজা খায়
লোকের কাছে সতী বলায়
এমন সৎ অনেক পাওয়া যায়
সদয় যে হয় সেই পাতকী।।
অনুরাগী রসিক হলে
সে কি ডরায় কুল নাশিলে
লালন বলে, ফুটকি খেলে
ঘোমটা দেয় আর চায় আড়চোখী।।

এই গানটা বহু জায়গায় গেয়েছি। আমার মতো করে। গাওয়ার সময় আমি টের পেয়েছি যে আমার শরীরের ভিতর এক অনন্য হাওয়ার ঝাপটা এসে লাগছে। আমি সেই ঝাপটায় মিশে যাচ্ছি। জীবনের এক গহীন জঙ্গলে যেন আমি মিনতির সকল অর্ঘ্যের সামনে খুলে খুলে পড়ছি...

হাততালির শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছি না...

চলবে...


১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×