সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেছেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে এক বৎসর শান্তিনিকেতনে আমি ছিলুম এক ঘরের নিচের তলায়। সেখান থেকে মুখ বাড়ালেই দেখতে পেতুম, গুরুদেব তার জানালার পাশে বসে লেখাপড়া করছেন। সকাল চারটার সময় দু’ঘণ্টা উপাসনা করতেন। তারপর ছটার সময় স্কুলের ছেলেদের মত লেখাপড়া করতেন। সাতটা, আটটা, নটা তারপর দশ মিনিটের ফাঁকে জলখাবার।
আবার কাজ- দশটা, এগারোটা, বারোটা। তারপর খেয়েদেয়ে আধঘণ্টা বিশ্রাম। আবার লেখাপড়া; একটা, দুটো, তিনটে, চারটা, পাঁচটা- কাজ, কাজ, কাজ। পাঁচটা থেকে সাতটা ছেলেমেয়েদের গান শেখাতেন- বা দিনুবাবুর আসরে বসে গান শুনতেন, অথবা গল্প-সল্প করতেন। তারপর খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার লেখাপড়া, মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান- আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত! কী অমানুষিক কাজ করার ক্ষমতা। আর কী অপরিসীম জ্ঞানতৃষ্ণা!...
শান্তিনিকেতনের লাইব্রেরিতে অবসর সময়ে ক্যাটালগ তৈরি করতুম। তখন প্রতিদিন দেখতুম পাঠান্তে নতুন পুরাতন বই তিনি লাইব্রেরিতে ফেরত পাঠাতেন। রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, দর্শন, কাব্য, কত বলব। এমন বিষয় নেই যাতে তার অনুসন্ধিৎসা ছিল না।
এদিক দিয়ে তিনি ছিলেন আজীবন জ্ঞান-সাধক।…’
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৬