somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনটি ফেসবুকীয় ঘটনা: এবং...

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফ্রেন্ডলিস্টের একটি মেয়ে একদিন হঠাৎ ২০/২৫টা ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ফেললো। রুমের দরজা বন্ধ করে সে তখন আমার সাথে চ্যাট করছিলো। মেসেজেই বললো কথাটা। ফান করছে এমনটা ভাবার মত ছিলোনা মেসেজগুলো। বয়ফ্রেন্ডঘটিত সমস্যা। ফ্যামিলি জোর করে বিয়ে দিতে চাচ্ছিলো মে বি। আমি বুঝাতে লাগলাম এমনটা করা ঠিক হবে নাহ। কিছুক্ষণ পরেই অফ লাইনে চলে গেলো সে। মেয়ে ঢাকা শহরে থাকে আর আমি আছি ফেনী জেলার অদূরবর্তী একটি গ্রামে। এখন আমার কী করা উচিত? তার বান্ধবীকে নক দিয়ে মেসেজে জানালাম ব্যাপারটা। পরে দরজা ভেঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। এ যাত্রায় বেঁচে গেলো সে। কিন্তু রাতে তার বান্ধবী আমাকে ওর বয়ফ্রেন্ড ভেবে চ্যাটে ইচ্ছামত বকা দিতে লাগলো। পরে যখন জানালাম যে আমি সে নই, তখন সে স্যরি বলে ক্ষান্ত হলো।

২.
একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীর বেশ কয়েকজন ফ্রেন্ডস ও ফ্যামিলি মেম্বার (ভাই,কাজিন) আমার ফ্রেন্ডলিস্টে ছিলো/আছে। ওদের সাথে ভালোই লাইক,কমেন্টস ও চ্যাটিং চলতো। তো একদিন একটি অচেনা আইডি থেকে আমাকে নক দিয়ে ওই শিল্পীর ভাইয়ের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগলো। অচেনা আইডির মানুষটি আমাকে ওদের ফ্যামিলি মেম্বার ভেবেছিলো। পরে আমার আইডি থেকে নাম্বার নিয়ে আমাকে কল দিয়ে বসলো ওই ব্যাক্তি। শোনাতে লাগলো তার ইতিহাস। লোকটি জানালো যে, ওই কন্ঠশিল্পীর ভাইয়ের জন্য যে মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে সেই মেয়েটিকে উনি আগেই বিয়ে করেছেন। কিন্তু মেয়েটির ফ্যামিলি জোর করে তাঁকে এই ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমি লোকটিকে জানালাম যে ভাই দেখুন, আমি ওই ফ্যামিলির কেউ না। আর আমি ফেনীতে থাকি। সো, আপনাকে আমি কোন হেল্প করতে পারছি না। লোকটি তারপরও রাত বিরাতে ফোন করে আমার সাথে মায়াকান্না জুড়ে দিতে লাগলো। ওই কন্ঠশিল্পীর ভাইটি নেশাখোর, গাঞ্জাখোর, আরও হাবিজাবি কত কি । ঢাকা শহরে তার জন্য পাত্রী খুঁজে পাচ্ছে না। তাই খাগড়াছড়ির একটি প্রত্যন্ত গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করাতে চাচ্ছে। ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে লাগলো।

এই কাহিনীরর শেষ আমার জানা নেই। বিয়ে হয়েছিলো কি না তাও জানিনা। লোকটিরও আর কোন খবর নেই।

৩.
কয়েকদিন আগে ফ্রেন্ডলিস্টের এক মেয়ের প্রোফাইল পিকচারে কমেন্ট করেছিলাম। ব্যস, সারছে কাম। এক লোক মেসেজ দিলো ওই মেয়ে তাকে ভালোবাসে। তিনিও ওই মেয়েকে ভালোবাসেন। ওনাদের নাকি শুধু বিয়েটা হওয়ার বাকী ছিলো। এখন কোন কারণে ওনাদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। লোকটি ভাবলো, বর্তমানে আমার সাথেই ওই মেয়ের রিলেশন। আমাকে এত্তগুলা কথা শোনালো। আমার সম্পর্কে খোঁজ খবরও নিলো। আমার বাড়ি কোথায়? কি করি? না করি? সব খোঁজ খবর নেয়া শেষ। বললো, "খুব মজা নিচ্ছো আমার কলিজায় পা দদিয়ে? আমিতো ছেড়ে দিবো না।" উনাকে জানালাম, ভাই আপনি যেমনটি ভাবছেন সেরকম কিছুই নয়। আপনার ভুল হচ্ছে। উনিও এবার স্যরি বললেন। তবে মনে হচ্ছে না ইনি বিশ্বাস করেছেন।

আমার সাথেই ক্যান এমন হয়? আফসোস লাগে, ইশ সত্যি সত্যি যদি এইরকম কেউ থাকতো আমার। আহারে,,,।


১.
প্রথম ঘটনায় ফিরে যাই। ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়া ওই মেয়ের ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু নাহ, সে থেমে থাকেনি। সেই ছেলেটার সাথে তার ব্রেকাপ হয়েছে। ফ্যামিলি থেকেও আর বিয়ের জন্য বলেনি কখনো। ফ্যামিলির মেম্বারদের সাথে তার আগেও মতের মিল হতো না। এই ঘটনার পর দূরত্ব আরো বেড়ে গেল।একটা সময় মেয়েটা ফ্যামিলির থেকে দুরে সরে গেল। এক বন্ধুর সহায়তায় পালিয়ে লাহোর চলে গেল। তার তখন হাতে মাত্র ৫০টাকা ছিল। এরপর জানলাম ওখানকার একটা ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতেছে। কিছুদিন পরে শুনি সে ইটালিতে। আরও কিছুদিন পর জানালো জার্মানিতে ফ্যাশন ডিজাইনিং এর উপর একটা মেলায় এটেন্ড করতে গিয়েছে। সেখান থেকে আবুধাবিও যাবে। একটা সময় তার নিজের জীবনের উপর বিরক্ত হয়ে মরতে চাওয়া সেই মেয়েটি আজ তার ড্রীম জব খুঁজে পেয়েছে। অনেক স্ট্রাগল করে আজ এই পর্যায়ে এসেছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে এসে ঘুরে গিয়েছে একবার।

এই ঘটনাটি কিন্তু অনেকের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য। যারা হতাশাগ্রস্ত, বিষন্নতায় ভুগছেন। স্বনির্ভর হতে চান? তবে চেষ্টা করুন, সংগ্রাম করুন। সাফল্য আসবেই।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×