সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। স্বাগতম আপনাদের সবাইকে সাপ্তাহিক ব্লগ সংবাদ "ব্লগ সমাচার এই যে" তে। সাথে আছি আমি নাফিস ইফতেখার।
আসুন প্রথমেই জেনে নেই প্রধান প্রধান শিরোনাম।
মগবাজারে বেতনের দাবীতে ছাগু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ
সোয়াইন ফ্লু এর ছোঁয়া ব্লগেও
এছাড়াও আছে সামহোয়্যারের মোডরেশন অনিয়ম নিয়ে একটি এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন
এবারে বিস্তারিত -
গত শুক্রবার বাদ জুমা মগবাজারে ব্লগের ছাগু সম্প্রদায় একজোট হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দীর্ঘদিনের ভাতা থেকে বঞ্চনা থেকে এ ক্ষোভের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘ ৩৬ ঘন্টা কেটে গেলেও বিক্ষোভ এখনো থামেনি। ঘটনাস্থলে এ মূহুর্তে অবস্থান করছেন আমাদের রিপোর্টার প্রখর রৌদ্র। আমরা এখন সরাসরি চলে যাচ্ছি তার কাছে।
হ্যালো প্রখর.......প্রখর আপনি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?
হ্যাঁ নাফিস, আমি আপনাকে শুনতে পাচ্ছি।
প্রখর মগবাজারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমাদের কে জানান।
নাফিস আপনি জানেন যে গতকাল দুপুর থেকেই সামহোয়্যার ইনের ছাগুরা তাদের দীর্ঘদিনের বেতন সমস্যার সূত্র ধরে মগবাজার জামাত অফিসের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে। আপনি নিশ্চয়ই ফোনে তাদের তীব্র ম্যৎকার ধ্বণি শুনতে পাচ্ছেন?
জ্বী শুনতে পাচ্ছি প্রখর, ঘটনার সূত্র সম্বন্ধে আমাদেরকে কিছু বলুন।
নাফিস, এরা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও জামাতী পোস্ট দিয়ে জামায়াতের কাছ থেকে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু গত জানুয়ারী থেকে এদের নিয়মিত এই ভাতা বন্ধ হয়ে যায় এবং তারপর থেকেই মূলতঃ এই ক্ষোভের শুরু।
ঘটনাস্থলে কারো সাথে আপনার কথা হয়েছে কি? নতুন কোন খবর জানতে পেরেছেন কি?
একটু আগেই আমার সাথে কথা বলছিলেন বাংলা ব্লগের বিখ্যাত ছাগুচীফ উরফে তিন্কোনা। তিনি জানিয়েছেন তিনি নিজেও গত ৪ মাস ধরে এই অনিয়মের শিকার। তিনি অবিলম্বেই এই সমস্যার সুরুহা চান।
ঘটনা এখন কোনদিকে যেতে পারে বলে আপনার ধারণা?
আসলে সবকিছু এতো তাড়াতাড়ি ঘটছে বলা মুশকিল। তবে বিক্ষোভকারী কিছু ছাগুর সাথে আমরা কথা বলে জানতে পেরেছি যে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ব্লগে ছাগু পোস্ট না দেয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছেন। তাতেও কাজ না হলে তারা আমারণ কাঁঠালপাতা অনশনে যেতে পারেন.....নাফিস.....
প্রখর আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা পরবর্তীতে আবার আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।
চলে যাচ্ছি পরবর্তী সংবাদে।
সোয়াইন ফ্লু এখন কাঁপাচ্ছে পুরো বিশ্ব। সামহোয়্যার ইনেও লেগেছে সোয়াইন ফ্লু এর ছোঁয়া। গত সপ্তাহে ব্লগে দেখা গিয়েছে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে অনেক পোস্ট। তার কোনটি সোয়াইন ফ্লু এর লক্ষণ নিয়ে কোনটা বা সংক্রমণ নিয়ে। তবে যে পরিমাণে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে পোস্ট আসছে তাতে করে শেষপর্যন্ত এটাই ব্লগে নতুন একটা রোগ হিসেবে দেখা দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ ব্লগাররা মনে করছেন।
এবারে সামহোয়্যার ইনের মোডারেশন নিয়ে আমাদের রিপোর্টার হাহাপগে চৌধুরীর বিশেষ রিপোর্ট।
সৃষ্টির আদি থেকেই সামহোয়্যারের ইনের মোডারেশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসছে। বিতর্কিত ও পক্ষপাতিত্বমূলক মোডারেশনের তকমাটা একবারে প্রথমে গায়ে লেগেও গেলেও কিছু ভালো সিদ্ধান্ত যে আমরা পাইনি, তা নয়। তবে গত সপ্তাহে মোডারেশনের দু'টি অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে যা পূর্বের প্রায় প্রতিটি অনিয়মকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রথম ঘটনাটি হলো ব্লগার বন্ধু কই কৈ এর একটি পোস্টে। পোস্টটিতে তিনি ইংলিশ গানের লিংক চেয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। দেখুন স্ক্রিনশট:
এবং পোস্ট দেয়ার ২ মিনিটের মধ্যেই তিনি উপহার পান এটি ও সাথে সাথে হয়ে যান জেনারেল:
০৪ ঠা মে, ২০০৯ রাত ১১:০৩ dear blogger,
we are very sorry that we had to remove one of your post from the front page. please note: this action just to keep a diversity of topics in the front page according to rule:
2h. if your post is used as an advertisement rather than information about a product or service.
২জ. কোন পণ্য কিংবা সেবা বিষয়ে তথ্যভিত্তিক পোস্ট না দিয়ে তার বিজ্ঞাপণমূলক পোস্ট সরিয়ে দেয়া হতে পারে।
3e. if it provides links or explicitly invites to view objectionable content on another site.
৩ঙ. অন্য কোন সাইটের কিংবা ব্লগের আপত্তিকর কন্টেন্ট দেখার লিংক সম্বলিত পোস্ট।
thank you in advance you for your understanding.
regards,
somewherein blog team.
দ্বিতীয় ঘটনাটি ব্লগার ক-খ-গ এর একটি পোস্ট নিয়ে। পোস্টটির লিংক: View this link এই পোস্টটিতে তিনি নিতান্তই ফান করে বিদ্রুপের ভাষায় কয়েকজন পরিচিত ব্লগার ব্যান চেয়েছিলেন। ব্লগাররা প্রায়ই কথায় কথায় এমন অমুক-তমুকের ব্যান চাই বলে ঠাট্টা করে থাকেন। পোস্টে কয়েকজন ব্লগার ফান করে বলেছিলেন রিপোর্ট করা হলো। তবে সত্যি সত্যি একজন ঐ পোস্টে রিপোর্ট করেছিলেন - ব্লগার সিউল রায়হান। কিন্তু সেটাও নিতান্তই ভুল করে। পরে তিনি পোস্টটি ফান পোস্ট বুঝতে পেরে এ জন্য ক্ষমাও চান। কিন্তু প্রশ্ন হলো মোডারেটরদের নিয়ে? এটুকু ফান বোঝার ক্ষমতাও কি তাদের নেই? একজন না বুঝে বা জেনে একটা রিপোর্ট করতেই পারেন কিন্তু সেটা কি আদৌ তারা খতিয়ে দেখেন না? উল্লেখ্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্লগার কঁাকন এর ঠিক একই ধরনের আরেকটি পোস্ট মোডারেটররা প্রথম পাতা সরিয়েছিলেন। এ বছরেরই জানুয়ারীতে সম্পূর্ণভাবে মুছে দেয়া হয়েছিলো নাফিস ইফতেখারের "হড়ড়ড়ড় ওয়ালপেপার" শিরোনামের পোস্টটি যেখানে মাত্র ৩৮টি ওয়ালপেপার বাদে আর কিছু ছিলো না। পরবর্তীতে পোস্টদাতার তীব্র প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়ে কর্তৃপক্ষ পোস্টটি ফিরিয়ে দেন। ব্লগে এ ধরনের নজির আছে আরো অনেক। এ ধরনের ঘটনা নতুন ব্লগারদেরকে নিরুৎসাহিত করে, প্রবীণ ব্লগারদের দীর্ঘশ্বাসকে আরো বড় করে, সাধারণ ব্লগারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। অনেক ব্লগার এখন গান/সফটওয়্যার তো দূরে থাক একটা টেক্সট ফাইলের লিংক চাইতেও ভয় পাচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা দেখলে আসলেই মনে প্রশ্ন জাগে - ব্লগ আসলে চালায় কারা।
পাঠক আপনার সাথেও কি ঘটেছে এমনই কোন অনিয়ম? অথবা আপনার সতীর্থ কোন ব্লগার শিকার মোডারেশনের নামে মোডাপেষণের? তাহলে আমাদেরকে সংশ্লিষ্ট লিংকসহ ই-মেইল করুন এই এ্যাড্রেসে: [email protected]
আমাদের টিম তুলে ধরবে সেইসব অনিয়মের কথা।
হাহাপগে চৌধুরী......ব্লগ সমাচার এই যে ডেস্ক......
এবারে আবহাওয়ার সংবাদ।
প্রকৃতির তীব্র গরমের প্রভাব পড়েছে ব্লগেও। ব্লগে গত ১ সপ্তাহে সকাল থেকে বিকেলের সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০-৪০% পর্যন্ত কম ব্লগারকে অনলাইনে দেখা গিয়েছে। প্রথম পাতায় পোস্ট রোটেশনের হারও ছিলো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক অনেক কম। নোটিশবোর্ড এ সপ্তাহে কোন পোস্ট দেয়নি, অনলাইনে দেখা যায়নি ব্লগাধিপতি আর ব্লগেশ্বরদেরকে। এদিকে তীব্র গরমকে মোডারেশনের অনিয়মে জন্য দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞ ব্লগাররা। ছাগুদেরকে এ সপ্তাহে দেখা গিয়েছে আস্তিক-নাস্তিক তর্কে ব্লগ সরগরম করে রাখতে। দৈনিক আমার দেশে প্রকাশিত, ডেনমার্কে মহানবী (সঃ) কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন আঁকা কাটুনিস্টের আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ভ্রান্ত ও দুর্বল সংবাদটি ছিলো তাদের এই এই ম্যৎকারের উৎস। রেসিডেন্টদের ব্লগে আনাগোনা দেখা গেলেও কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তারা ঘটায়নি।
আগামী সপ্তাহে ব্লগে অনেকটা এমনই পরিবেশ বজায় থাকার সম্ভাবনাই বেশি। ব্লগাধিপতি বা ব্লগেশ্বরকে অনলাইনে দেখা গেলেও যেতে পারে তবে নাটকীয় কিছু ঘটার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। ছাগু তৎপরতা এ সপ্তাহের চেয়ে কম দেখা যেতে পারে।
এবারে চলে যাচ্ছি, "নতুন যারা কেমন তারা" পর্বে।
এ সপ্তাহে ব্লগে যাদেরকে নতুন ব্লগারদের তালিকায় দেখা যাচ্ছে তারা হলেন:
* মাহবুব রশিদ
* কাব্যিক
* নতুনের পথে অনন্ত যাত্রা
* ঝর্ণা চৌধূরী
* খম.হাসান
* মোঃ আহসান উদ্দিন
* শ্যামা
* পরবাসি
* নবজাত
* শেখ
* হাসতে হাসতে পরে গেলাম
* মাসুদ রানা ০০৭
* ব্রহ্মদৈত্য
* ড. মঈনুল আহ্সান
* যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বই মিথ্যা বলিব না
* মোনালিসা আক্তার
* ফিরদ
* রোখসানা
* চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির, সেইখানে পরাজয়ে ডরে না বীর। মানেন তো!
* ইমন ইসলাম
এদের মধ্যে (খাড়ান একটা নিঃশ্বাস লই) চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির, সেইখানে পরাজয়ে ডরে না বীর। মানেন তো! ভাইকে জিজ্ঞেস করতে চাই - ভাই আপনি কি রেজিস্ট্রেশনের সময় বর্ণনা আর নিকের ঘর উল্টা-পাল্টা করে ফেলিছিলেন?
ঝর্ণা চৌধুরীকে কমেন্টে সবচেয়ে সক্রিয় দেখা গিয়েছে। তবে তার "স্বামীর ভালবাসা জয় করিবার ৫৭ তরিকা" পোস্টটি স্বামীর ভালোবাসা জয় করতে সক্ষম হলেও (বা না হলেও) ব্লগারদের মন জয় করতে পারেনি এবং ১৮টি মাইনাস লাভ করে।
এবারে আমাদের "কস কিরে মমিন" পর্ব।
এ পর্বে আমরা দেখাই ব্লগে ঘটা এমন কোন একটি ঘটনা যা দেখে আমরা বিস্ময়ে শুধু একটি কথাই বলতে পারি - "কস কিরে মমিন"।
আর এ সপ্তাহের বিজয়ী হলো ব্লগার বন্ধু কই কৈ এর পোস্ট প্রথম পাতা থেকে সরে যাওয়া ও তার জেনারেল হওয়ার ঘটনাটি।
তো পাঠক, এই ছিলো আমাদের আজকের আয়োজন। আশা করি আগামী সপ্তাহে আপনাদের সামনে আবার নিয়ে হাজির হবো "ব্লগ সমাচার এই যে" এর নতুন একটি পর্ব। ততোক্ষণ পর্যন্ত - শুভ ব্লগিং। শুভরাত্রি।