somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবাস মাইলস! সাবাস ফসিলস!

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা বাংলাদেশিরা নিজেদেরকে বাঙ্গালী হিসেবে প্রমাণ করতে সব সময় একটু বেশি সোচ্চার! এপার বাংলা আর ওপার বাংলা বলে একটা শব্দ প্রায়ই সংস্কৃতি কর্মীদের মুখে শুনে থাকি। কিন্তু এই দু’টো শব্দ শুনলেই গাঁ টা জ্বালা করে উঠে। এটা শুধু বাংলা নয়, এটা বাংলাদেশ। এটা আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আমাদের দেশের সংস্কৃতি কর্মীরা নির্লজ্জের মত সব সময় দুই বাংলাকে এক করার কথা বলে থাকেন। তেমন কিছুদিন আগে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সফর সঙ্গি হয়ে আসা প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, এই কাটা তারের বেড়া আমাদেরকে আলাদা করতে পারবে না। আমার মনে হয় এই সীমান্ত না থাকাই উচিত। দুই বাংলা মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া উচিত। আমরা বাঙ্গালী বাঙ্গালী ভাই ভাই।

কিন্তু তারা যদি সত্যিকারের বাঙ্গালী হতো তবেই এই কথা বলা যক্তিসংগত হতো। তারা প্রত্যেকেই আন্দোপ্রান্ত একজন ভারতীয় অথবা ইন্ডিয়ান। তার প্রমাণ বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রসেনজিতের করা সেই নেক্কারজনক স্ট্যাটাস। কোন ভাই তার ভাইকে নিয়ে এমন স্ট্যাটাস লিখতে পারে? আমাদের দেশের এক শ্রেণির মানুষ বাঙ্গালী বলতে গদগদ হয়ে পড়েন। তারা মুখ তিন ইঞ্চি ফুলিয়ে বলেন, আমরা বাঙ্গালী আমরা বীরের জাতি। আরে মিয়া, বাঙ্গালী বীরের জাতি এই কথা কোথায় পাইছো? বাঙ্গালী হলো ভীরুর জাতি। আর আমরা বাংলাদেশিরা বীরের জাতি। পশ্চিশবঙ্গের বাঙ্গালরা আমাদের অংশ নয়। কারণ তারা বাঙ্গালী চেতনাবোধে বিশ্বাসী নয় তারা ভারতীয় চেতনাবোধে বিশ্বাসী।

এবার আসি মূল পয়েন্টে, এতোদিনের পুরনো কথাগুলো আজ আবারো বলার প্রয়োজন বোধ করছি মাইলস এবং ফসিলস কে নিয়ে জমে ওঠা নতুন বিতর্ক। মাইলস একজন বাংলাদেশি হিসেবে সঠিক কাজটাই করেছে। আর ভিন্নদিকে ফসিলসরাও ভারতীয় হিসেবে সঠিক কাজটা করেছে। কেউই কিন্তু ভুল করেনি। আর ফসিলস তাদের এই কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দিয়েছে, তারা বাঙ্গালীর আগেও একজন ভারতীয়। আর তাদের এই চেতনাবোধকে আমি সম্মান জানাই। আর আমাদের মধ্যে যারা নিজেদেরকে বাংলাদেশি ভাবার আগে বাঙ্গালী ভাবেন তাদের মুখে লাত্থি জানাই। দেখ! শেখ! নিজের দেশকে কিভাবে বড় করে তুলতে হয় শিখ!

হতভাগা বাংলাদেশি তোমাদের আরো কিছু শিখতে হবে। ঈদ আসলেই বাংলাদেশে ২৯ টি টিভি চ্যানেলে লাইভ কনসার্টের ধুম পড়ে যায়। আর সেই সব কনসার্টের মূল আকর্ষণ রূপে উপস্থাপন করা হয়, কলকাতার অঞ্জন দত্ত অথবা ব্যান্ডদল ভূমি কিংবা ব্যান্ডদল ফসিলস। হ্যা বিশ্বাস করেন, আমরা বাংলাদেশিরাই নিজেদের শিল্পীদেরকে উপেক্ষা করে কলকাতার শিল্পীদের নিয়ে মেতে থাকি। আর দর্শকরাও যে কতটা নির্লজ্জ তা তো আপনারাই দেখতে পান! গত ঈদের একটি অনুষ্ঠানে অঞ্জন দত্ত গান গাইতে আসলেন। লাইভ কনসার্টে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য কল দিলেন, নাট্য অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। ফোন দিয়ে গদগদ করে দাদ...... দাদা.......... বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে। কথায় বলে না, বাড়ির গরু উঠানের ঘাস খায় না। আমরা বাংলাদেশিরা নিজেদের শিল্পীদের ভাত দিতে পারি না আবার কলকাতার ছাগলদের নিয়ে মেতে থাকি।

আরো কিছু মজার কথা আপনাদের বলি! এই ফসিলস কিন্তু গান গাওয়া শুরু করে মাইলসকে দেখেই । গত বছর ফষিলসও কনসার্ট করতে বাংলাদেশে আসে। ফোন লাইভ কনসার্টে সাফিন আহমেদ টেলিফোন করেন। তখন ফসিলস কি তাকে বাবা বলবে নাকি আব্বু বলবে এমন একটা অবস্থা! আর সেই ফসিলস আর মাইলকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে। কলকাতার মানুষ যখনো ব্যান্ড কি তাই জানতো না, তখন আমাদের আজম খান বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে কনসার্ট করে বেড়াতো। কলকাতার মানুষরা যখন গিটার ধরতেও জানতো না। তখন আমাদের লাকী আকন্দ ‘আমায় ডেকো না’ গানটির মত কালজ্বয়ী গান উপহার দিয়েছে। কলকাতার মোছাড়ু ব্যান্ড শিল্পীরা যখন গাও গাওয়া শুরু করল, তখন তাদের আইডল হল জেমস,আইয়ুব বাচ্চু প্রমুখরা। আর আমরা কিনা আমাদের শিল্পীদেরই মূল্যায়ন করতে জানি না। যে ভারতে বাংলাদেশের একটি টিভি চ্যানেলও দেখা যায় না, সেই ভারতের ৪৫ টি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে হরহামেসা চলছে। তাহলে এর দ্বারাই কি প্রমাণিত হয় না, আমরা মেরুদন্ডহীন! আমরা জাতীয়তাহীন। এখনো ‍সুযোগ আছে সোচ্চার হও। নিজেদের সামর্থনুযায়ী মাথা উঁচু করে করে দাড়াই। আসুন নিজেদের সম্পদকে ভালোবাসতে শিখি। কিন্তু বাঙ্গালী হয়ে নয় বাংলাদেশি হয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×