somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

শব্দের রহস্য: Ultrasound ও Infrasound — যখন হাতি ও তিমি কথা বলে মাইলের পর মাইল দূরে!

২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শব্দের রহস্য: Ultrasound ও Infrasound — যখন হাতি ও তিমি কথা বলে মাইলের পর মাইল দূরে!

আমরা প্রতিদিন অসংখ্য শব্দ শুনি—বাতাসের সোঁ সোঁ আওয়াজ, মানুষের কণ্ঠ, পাখির ডাক, গানের সুর। কিন্তু এমনও অনেক শব্দ আছে যা আমরা শুনতেই পারি না, অথচ প্রকৃতি এবং প্রাণিজগতে সেই শব্দের মাধ্যমেই চলছে যোগাযোগ, দিকনির্দেশনা ও তথ্য আদান-প্রদান। এই অদৃশ্য জগতের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো Ultrasound এবং Infrasound।

Ultrasound কী?

Ultrasound হচ্ছে এমন শব্দ, যার কম্পাঙ্ক (frequency) মানুষের শোনার সীমার উপরের দিকে, অর্থাৎ ২০,০০০ হার্‌জ (Hz) বা তার বেশি।
মানুষের কানে এটি শোনা যায় না, কিন্তু অনেক প্রাণী এটি ব্যবহার করতে পারে।

উদাহরণ:

বাদুড় (Bat) অন্ধকারে পথ নির্ধারণের জন্য Ultrasound ব্যবহার করে।

ডলফিন পানির নিচে শিকার খুঁজে পেতে এই শব্দের সাহায্যে অবস্থান নির্ধারণ করে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান (Ultrasound imaging) মানুষের শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখতে ব্যবহৃত হয়, যেমন—গর্ভের শিশুর অবস্থা দেখা, হার্ট বা লিভারের সমস্যা নির্ণয় ইত্যাদি।

সংক্ষেপে:

> ২০,০০০ Hz-এর উপরের শব্দ = Ultrasound = মানুষের কানে অশ্রাব্য কিন্তু প্রযুক্তি ও প্রকৃতিতে অত্যন্ত কার্যকর।

Infrasound কী?

অন্যদিকে, Infrasound হচ্ছে এমন শব্দ যার কম্পাঙ্ক মানুষের শোনার সীমার নিচের দিকে, অর্থাৎ ২০ হার্‌জ (Hz) বা তার কম।
এই শব্দও মানুষের কানে শোনা যায় না, কিন্তু প্রকৃতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উদাহরণ:

হাতি ও তিমি (Elephants & Whales) একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগে Infrasound ব্যবহার করে।

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প, বজ্রপাত ইত্যাদি প্রাকৃতিক ঘটনাতেও Infrasound তৈরি হয়।

হাতি ও তিমির গোপন ভাষা: ইনফ্রাসাউন্ডের বিস্ময়

আপনি কি জানেন, একটি হাতি তার সঙ্গীদের সঙ্গে ১০–১৫ কিলোমিটার দূর থেকেও যোগাযোগ করতে পারে?
হাতির ইনফ্রাসাউন্ড সাধারণত ১৪–১৬ Hz কম্পাঙ্কের হয়, যা বাতাসের মাধ্যমে সহজেই দূরে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের এই শব্দ মানুষের কানে শোনা না গেলেও, অন্য হাতিরা সেই কম্পন অনুভব করতে পারে।

আর তিমিদের কথা?

তিমি হলো ইনফ্রাসাউন্ড ব্যবহারের এক বিস্ময়কর উদাহরণ। বিশেষ করে Blue Whale ও Fin Whale সমুদ্রের পানিতে ১০–৩০ Hz কম্পাঙ্কের শব্দ পাঠায়, যা ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে থাকা অন্য তিমি পর্যন্ত পৌঁছে যায়! পানির নিচে শব্দ দ্রুত ও দীর্ঘ দূরত্বে চলাচল করতে পারে, তাই তারা হাজার মাইল দূরের সঙ্গীকেও ডেকে নিতে সক্ষম।তুলনামূলক সারসংক্ষেপ:

প্রাণী শব্দের ধরন কম্পাঙ্ক যোগাযোগের দূরত্ব

হাতি Infrasound ১৪–১৬ Hz ১০–১৫ কিমি
তিমি Infrasound ১০–৩০ Hz ৫,০০০ কিমি পর্যন্ত

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে Ultrasound ও Infrasound-এর ব্যবহার

শব্দের ধরন ব্যবহার ক্ষেত্র

Ultrasound চিকিৎসা নির্ণয়, শিল্পে ত্রুটি নির্ণয়, সাবমেরিন সনাক্তকরণ
Infrasound ভূমিকম্প পূর্বাভাস, আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ, প্রাণীর আচরণ বিশ্লেষণ

শেষ কথা

শব্দ শুধু শোনা যায় না — অনুভবও করা যায়। মানুষের কানে অশ্রাব্য এই Ultrasound ও Infrasound প্রকৃতি, প্রাণীজগৎ এবং প্রযুক্তিতে এক অনন্য সেতুবন্ধন তৈরি করেছে।
হাতির নীরব সংকেত কিংবা তিমির গভীর সমুদ্রের ডাকে যেন এক অদৃশ্য জগতের বার্তা — “প্রকৃতি কথা বলে, শুধু শুনে নিতে জানতে হয়।”
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৫০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×