somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

#প্রাণ_রসায়নঃ১।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

# তানজীনা ইয়াসমিন

খোদার তিরিশটা দিন তার একটা কোনো “হিষ্টুরী” থাকে । থাকতেই হবে। তার এই মেগা সিরিয়ালের প্রথম পর্ব রুহীদের বাড়িতে তার আগমনের সাথেই শুরু।

- খালাম্মা , আমি কইলাম বাসা বাড়িতে কাম করা মানুষ না। আমি ছিলাম ইস্কুল মাস্টারের ইস্ত্রী । একটা হিষ্টুরীর লাইগা আইজকা আমার এমুন দিন ।

রুহীর মেজাজ তিতা হয়ে গেল । খালাম্মা ডাকার কি হলো ? পান খাওয়া মাঝ বয়সী বুয়া ! এদিকে রুহীর বয়স তিরিশ হলো কেবল। না হয় একটু স্বাস্থ্যবতীই সে, ছেলে পুলেও ত এখনো হয়নি।
- দেখেন বুয়া আমাদের এখানে আপনার কোনো অসন্মান হবেনা । কাজ পেলেই আমার হলো । কিন্তু আমাকে আপা ডাকবেন ।
- জে আফা , আমারেও বুয়া ডাইকেন না, পিলিজ লাগে। কেউ মোবাইল দিলে যদি আফনে বুয়া কইয়া ডাক দেন আমার মান সম্মান সব শ্যাষ।
রুহী হতভম্ব! এই বেটি তো বিরাট পেইন! রুহীও নিরূপায় ।
- তো কি ডাকবো?
- নাম ধইরাই ডাকবেন । নাইলে রিপনের মা।
- তোমার একটাই ছেলে ?
- হ আফা, সংসার ত করতেই পারলাম না, আমার সোয়ামী ত …।

সেই থেকে শুরু। যা কিছুই ঘটুক গরুকে নদীতে ফেলে হলেও “ নদী কূল কূল রবে বহিতেছে “ করে নদীর রচনা লেখার মত তার স্বামীর উপাখ্যান। আরব্য রজনীর মত নেভার এন্ডিং গল্প ।

সেদিন রুহীর মেজাজ একেবারে তিরিক্ষি । বুয়া আসবে বলে নাকে মুখে অফিসের কাজ সেড়ে বাসায় এসে বসে আছে , বুয়া কাজ সেড়ে গেলে রাতের বিয়ের দাওয়াতে যেতে হবে। এইদিকে বুয়ার দেখা নাই। দুই ঘন্টা পর আগমন।

- আজকে শোনেন আফা কি হইছে! শিশু হাসপাতাল গেছি ভাবীরে নিয়ে .।
- তোমার আবার ভাবী আসলো কোথ্বেকে ? তোমার না ঢাকা শহরে কেউ নাই!
- আফা আফনে কথার ভিত্রে ফুটা পাইলেই হাত ঢুকান! আরে মুখ বলা ভাবী আর কি, আমি এইখানে তো সব চিনি , তাই আমারেই সবাই ধরে । আমারে খুব সবাই ভালো পায় ! ডাক্তার নার্সও সব চিন পরিচিত । খাতির করে । সবাইরে তো আর করেনা ।

রুহীর মুখ তেতো হয়ে যায়। ওরে আমার হিলারী ক্লিনটন ! সবাই তারে খাতির করে ! তাড়া লাগায়।
- আচ্ছা কাজে যাও কাজে যাও , তোমার জন্য আজকে আমার বিয়ে বাড়িতেও দেরী হয়ে গেলো ।

বুয়া কাজ শুরু করে , কিন্তু জবান বন্ধ হয়না । “হিষ্টুরী “ না বললে পেট ফুলে তো মরেই যাবে ?
মোবাইল চোর কি করে তার গরীব ভাবীর ১৪,০০০ টাকার মোবাইল পিচ্চি একটাকে দিয়ে চক্ষের নিমিষে ভাবীর ব্যাগ থেকে ছোঁ মেরে পাচার করলো, কি করে বেধড়ক মারের মুখেও কিচ্ছু স্বীকার করলো না সেই কাহিনীসহ মোবাইল চোর এবং নেশাখোর চেনার ১০১ টি অব্যর্থ উপায় ।

- তুইলে আছাড়া মারলাম ছেমড়িরে, কোনো রা নাই! ১৫/ ১৬ বছর বয়স , হাতের একটা রগ খালী নাই সিরিঞ্জের ফুটায় । এইডি হিরোইঞ্চি ডাইলখোর , এদের গায়ে মাইর লাগে না । দুইদিন পর পর থানায় নেয়, ছাইড়েও দেয়। গায়ে নাই ১ ছটাক মাংস!
রুহী হতভম্ব। রিপনের মা খুবই বেটে খাটো , ১৫/১৬ বছরের কাউকে সে কিভাবে আছাড় দেয়!
- তুমি আছাড় দিয়ে নিজে বাঁচলা কেমনে?
ফিকফিক হাসে রিপনের মা।
- আফা, আইজ রোগে শোকে তাপে আমি এমুন । নাইলে আমার শইল্যে যে বল আছিল ! রিপনের বাপে মারতে মারতে পায়ের গিরা নলি সব নড়বড়া কইরা দিছে।
- ও , আচ্ছা আচ্ছা , তুমি কাজ সাড়ো , আমি গসুলে গেলাম।

শাওয়ারের নীচে চুপ করে বসে মাথা ঠান্ডা করতে চেষ্টা করে । এটাই তার কাছে মন ঘোরানোর উপায়। ঘুরে ফিরে রিপনের মায়ের কথা মনে আসে।
ছলা কলা করে বিয়ে করে তার সব টাকা পয়সা হাতিয়ে নেশা ভাং করা লোকটা তারই বিধবা ভাবীর সাথে তার পিঠ পিছে প্রেম করে ঘর বেঁধেছে - এমন স্বামীর কথা যেকোন অজুহাতে রিপনের মা কেন তোলে? সেটা রিপনের কথা জিগেস করলে রিপনের কোন কোন জিনিস তার বাপেরটা পেয়েছে বলতে হোক, কি আজকের এই মার খাবার ইতিহাসে হোক । কেন সে এই মানুষটার কথা ঘুরে ফিরে বলতে এত ভালো লাগে?
ধরলাম তার ভালোবাসা সেই মানুষটাই ছিল, কিন্তু এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা , বেঈমানী কিছুই কি সেই ভালোবাসাকে ম্লান করতে পারেনি? এটা কি ভালোবাসা ? নাকি সে বলতে চায় তারও কেউ ছিল? এদের জীবনগুলি এমন কেন? এখন ত এরা কত স্বাবলম্বী , তাও এদের স্বামীগুলোর দুইদিন পর বৌ ছেড়ে আরেকজনের কাছে চলে যাওয়ার কোনো পরিবর্তন নাই কেন? সত্যিকার ভালোবাসা কি আসলেই একপাক্ষিক ?
আর তাদের এমন নিস্তরংগ ঝামেলাহীন জীবনে তাহলে ভালোবাসা নেই কেন? প্রেম করেই তো বিয়ে হলো । কেন তার তমালের নামে অভিযোগ ছাড়া কোন মিষ্টি কথা আজ আর আসে না? অথ্চ এমন কোন ত্রুটি তো তমালের নেই! তার সহিষ্ণুতার অভাব ? ক্লান্ত অস্থির মন?

হেয়ার ড্রায়ারে চুল শুকিয়ে রেডি হতে হতে বুয়ার কাজ শেষ। সে বিদায় নিয়ে চলে যায় । কিন্তু রুহীর মনে সে ভীষনভাবেই থেকে যায়। রুহীর শাড়ী গয়না পরতে ভালো লাগছে না । বিয়েতে যেতে কিছুতেই মন সড়ছে না। না গেলে কি খুব খারাপ হবে? কি অজুহাত দেয়া যায় ? তমাল রোজই দেরী করে আসে । আজ সেই অজুহাত চালিয়ে দিলে কেমন হয়?

তমাল যথারীতি ১০টায় ফেরে , কারণ রুহী বিয়ের তাড়া দিয়ে তাকে ফোন দেয়নি । রুহীর বাসার পোশাকে কড়া সাজগোছ দেখে তমাল থতমত । রুহী বিয়ের সাজ মোছেনি , কিন্তু শাড়ীও পরেনি।
তার এই মুহুর্তের রুটীন ডায়লগ হলো ,
- কোথায় ছিলে? থেকে গেলেই তো পারো , আসো কেন? প্রতিদিন অফিসে তালা মারার কাজটাও কি তোমার ? নাইট গার্ডের কাজটাও তো তাহলে নিয়ে নিলে পারো , আসা যাওয়ার খরচও বাঁচে !
আজ রুহী একেবারে নিশ্চুপ।
তমাল ঝড়ের আগের থমথমে অবস্থা আঁচ করে অগ্রীম সরি সরি শুরু করে । নিশ্চয়ই আজ বড় কিছু হয়েছে ! রুহী নিঃশব্দে তমালের হাত থেকে ব্যাগ টেনে দরজা বন্ধ করে । ব্যাগ টেনে নেয়াটা সিম্বলিক। সরাসরি হাত ধরতে অস্বস্তি লাগে, তাই ব্যাগ ধরে টানা। রুহী টেবিলে খাবার দেয়।
- আচ্ছা আমি করছি ..।
তমাল কাজে হাত লাগানোর একটা ভাব ধরে , যদিও এসব তার কম্ম না।
- লাগবে না , হয়ে গেছে । বসো ।
শীতল কন্ঠস্বর। তমাল দ্রুত হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসে যায় । কয়েকবার রুহীর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বুকে দম নিয়ে বলে ফেলে,
- রুহী সরি । আর কোনোদিন হবেনা । এরপর থেকে অফিসে থেকে স্ট্রেইট বাড়ি , কোন আড্ডা ফাড্ডা না।
রুহী তমালের এলোমেলো চুল আর কলার নেড়ে চেড়ে ঠিক করে দেয় ,
- কেন আড্ডা আর জমে না? তোমার তো ভালো লাগে সমাজ দর্শন পলিটিকস, লাগে না?
তমাল বুঝতে পারছে না উত্তরটা ঠিক কি হলে এই যাত্রা পাড় পাবে । রুহী কি ভয়ংকর কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ? রুহীর প্রশ্নের সঠিক উত্তর “হ্যা “ , কিন্তু পরিস্থিতির দাবী হলো “ না” । সে হ্যা না`র মাঝামাঝি একটা দ্বিধান্বিত চিন্তিত চেহারা ধরে রাখে ।

রুহীর খুবই হাসি পেলো । এই শাস্তি প্রাপ্য ছিল তমালের , পেয়ে গেছে । এখন মওকুফ করা যায় । সে নেশা করে বা নিষিদ্ধ আনন্দ নিয়ে দেরী করে ফেরে না। দর্শন তার প্রিয় বিষয়, জীবনের চাহিদার কাছে সমঝোতা করে কর্পোরেট চাকুরে , কিন্ত সমাজ পরিবর্তনের মঞ্চে জীবন পাড় করতে পারলে সে বেঁচে যেত । তার হাসফাঁস দমবন্ধ সমঝোতার জীবনে এই আড্ডাটাই একমাত্র ভেন্টিলেটর ।

- আজ তোমার বন্ধুর বোন , মিলির বিয়ে ছিল।
তমাল বজ্রাহত ! সময় নেয় ধাতস্থ হতে।
- তুমি …তুমি একটা ফোনও করলে না!
- হু করলাম না , একটু ঝাড়ি খাও । বন্ধু তোমার , তার তো জানার কথা তুমি কেমন ।
- রুহী! এইভাবে তুমি হার্ট করতে পারলা ?
- হ্যা পারলাম । রোজ রোজ ঝগড়া করতে ভাল্লাগেনা । তাই কাটাকুটি । পারতপক্ষে আর ঝগড়া করবো না।
- তো ?
- প্রেম করবো !
- কার সাথে?
রুহী তমালের মাথায় চাটি চালায় ।
- কার সাথে মানে কি? আমার একটা বর আছে না ? উইথ লাইফ টাইম গেরান্টি ?
তমাল এবার পুরোপুরিই বিভ্রান্ত !
- কি হয়েছে বলো তো রুহী ?
- মোবাইল চুরী হয়েছে
- নতুনটা ? কিভাবে ?কোথেকে ..
- আমার না তো , বুয়ার ভাবীর ।
- এ? মানে?
- মানে কিছু না । জানো তো, এক মহাজ্ঞানী বলে গেছেন ১ম শ্রেণি কথা বলে সমাজ দর্শন নিয়ে , ২য় শ্রেণি বলে রাজনীতি নিয়ে আর তয় শ্রেণি বলে মানুষকে নিয়ে -মানে পরচর্চা। আমরা ৩য় শ্রেণিকে নিয়ে কথা বলবো না। আমার ১ম শ্রেণির বর তার প্রিয় কাজ দর্শন চর্চা করতে করতে আমার পাশে দাড়িয়ে আমার রান্না বান্না দেখে যাবে। পারলে হাত লাগাবে। ভালোবাসা জমে ক্ষীর । চলবে?

তমালের বিভ্রান্তি কাটেনি, কিন্তু থিতিয়ে যাওয়া প্রেম জাগানোর এমন উদ্ভট প্রস্তাব মন্দ লাগছে না। বহুব্রীহির কাদের চরিত্রের ডায়লগেও তো এমনই দর্শন ছিল,
” ভালোবাসা হইলো গিয়া একটা শরমের ব্যাপার, কিন্তু এর দরকার আছে !”
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×