ইয়াসমিন আক্তার। বয়স ২০-২২ বছর। লেখাপড়া করেন স্থানীয় একটি কলেজে, অনার্স থার্ড ইয়ারে। প্রেম করেন স্মরণকালের চাঞ্চল্যকর ব্যাংক লুটকারী সোহেলের সঙ্গে।
এই প্রেম এবং আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই সোহেলের সন্ধান মিলেছে ঘটনার দুই দিন পর। এর আগে পুলিশ ব্যাংকের পিয়ন আবু বকরসহ মোট ১২ জনকে আটক এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আবু বকরের ফোনকল লিস্ট ধরে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার আগের দিন বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে সোহেলের সঙ্গে।
এজন্য পুলিশ আবু বকরকে আলাদা করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে, সোহেলকে সে চেনে। কিন্তু সোহেল এই মুহূর্তে কোথায় আছে তা বলতে পারেনি। তবে সোহেলের একজন প্রেমিকা আছে, এ খবর প্রথম পুলিশের কাছে প্রকাশ করে দেয় আবু বকর।
আবু বকরের তথ্যমতে, পুলিশ আটক করে সোহেলের প্রেমিকা ইয়াসমিনকে। পরে ইয়াসমিনের ফোনকল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার সঙ্গে সোহেলের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। এই তথ্য পাওয়ার পর হাসি ফোটে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের মুখে। তারা তখন শুরু করেন মোবাইল ট্র্যাকিং।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এই ব্যাংক লুটের ঘটনা উদ্ঘাটন সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাইজিংবিডিকে জানান, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে অপরাধীদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পুলিশ তার তদন্তের কৌশল হিসেবে এই প্রক্রিয়াটিকে বেছে নিয়েছিল। তাতে সফলও হওয়া গেছে।
নুরুজ্জামান আরো বলেন, গ্রেফতারের পরপরই সোহেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বাসের ছাদে করে টাকা ভর্তি পাঁচটি বস্তা ঢাকায় নিয়ে আসে সে। কিন্তু পুলিশ তার এই কথা এখনো পুরোপুরি বিশ্বাস করছে না। কারণ পাঁচ বস্তা টাকা একজনের পক্ষে বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসা সহজ নয়। এজন্য পুলিশের ধারণা, তার সঙ্গে আরো কেউ ছিল অথবা সে কোনো গাড়ি ভাড়া করে টাকাগুলো ঢাকায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে আরো তদন্ত করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে জানান ডিআইজি।
রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা গেছে, টাকার বস্তাগুলো একটি ভাড়াকরা ট্রাকে ঢাকায় নিয়ে আসে সোহেল। র্যাবের হেফাজতে সে আরো স্বীকার করেছে, আটরশিতে চালের বস্তা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ট্রাক ভাড়া করে। এর আগে শনিবার বিকেলেই সুড়ঙ্গ দিয়ে টাকার বস্তাগুলো বের করে আনে সোহেল।
হাবিব ওরফে সোহেল কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংক ডাকাতির প্রধান আসামি। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর শ্যামপুর বালুর মাঠের ৮ নম্বর রোডের তনি ভিলার তৃতীয় তলা থেকে র্যাবের সদস্যরা টাকা ও এক সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করেন।
http://www.risingbd.com/