somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নিবর্হণ নির্ঘোষ
আমি এক প্রব্রজ্যা , আয়ু ভ্রমণ শেষে আমাকে পরম সত্যের কাছে ভ্রমণবৃত্তান্ত পেশ করতেই হবে । তাই এই দুর্দশায় পর্যদুস্ত পৃথিবীতে আমি ভ্রমণ করি আমার অহম দিয়ে । পরম সত্যের সৃষ্টি আমি , আমি তাই পরম সত্যের সৃষ্ট সত্য !!

ইখওয়ান আল সাফা : রহস্যময় এক দার্শনিক গোষ্ঠী !!

১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইখওয়ান আল সাফা


আরবের আব্বাসীয় শাসনামলে মুসলিমদের মধ্যে দর্শন আর বিজ্ঞান কতটা প্রাধান্য পেয়েছিল তা ইতিহাস ঘাঁটলেই আমরা জানতে পাই । সেই সময়ের গ্রীক দর্শনের সংস্পর্শে অনেক মনীষীর উদ্ভব দেখা যায় যাদের নাম আজও ইতিহাসে সমুজ্জ্বল ! তবে তারা গোষ্ঠীভুক্ত ছিলেন এমনটা জানা যায় না । হ্যাঁ মুতাজিলা নামের একটি গোষ্ঠীর নাম জানা গেলেও তারা ধর্মীয় নীতি নির্ধারণের গোষ্ঠী নামেই বেশি পরিচিত । তারা বেশি সমালোচিত ও বিতর্কিত ধর্মীয় আচারের বৌদ্ধিক ব্যাখ্যা দানে । যুক্তিবিদ্যাকে অনুসরণ করে ধর্মকে ব্যাখ্যা করাই ছিল এদের কাজ । ধর্মের সব কিছুকে এরা যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করতে চাইত আর যুক্তির বাইরে কিছু নেই বলে তারা বিশ্বাস করত ।


স্বতন্ত্র্য অনেক দার্শনিক দেখতে পাওয়া গেলেও সে সময়ে একটি দার্শনিক গোষ্ঠী ছিল যারা নিজেদের একদম নেপথ্যে রেখেই তাদের দর্শন আর মত প্রকাশ করেছিল । তাদের গতিবিধি এতটাই গুপ্ত ছিল যে তাঁদের উদ্দেশ্য, তাঁদের কর্ম আর তাঁদের পরিণতি কী হয়েছিল তা জানা যায়নি । তাদের সম্পর্কে সমসাময়িক যা জানা যায় তা নগন্য । তাঁদের রচিত ৫২ খণ্ডের প্রবন্ধগুচ্ছ বাদে আর কিছুই নেই যে তাঁদের চিহ্ন বহন করে এবং তাদের সম্পর্কে অতিরিক্ত কিছু বলে । আজও জ্ঞান সমাজে তারা এক রহস্য হিসেবেই পরিচিত । আর আজও তারা বেশ কৌতুহলোদ্দীপক বলে বিবেচিত হয় ইতিহাস অনুসন্ধানীদের কাছে ।


আর তারা হলেন , ইখওয়ান আল সাফা । যারা পাশ্চাত্যে Brethren Of Purity বা শুদ্ধতার সংঘ নামে বেশি পরিচিত ।


ইখওয়ান আল সাফা
ইখওয়ান আল সাফা , পুরো নাম ইখওয়ান আল সাফা ওয়া খুল্লান আল-ওয়াফা ওয়া আহল আল-হামদ ওয়া আবনা আল মাজদ্ । এই নামের উৎপত্তি নিয়ে বেশ কয়েকটি মতবাদ আছে । হাঙ্গেরিয়ান ইসলাম-পণ্ডিত ইগনাক গোল্ডযিহারের মতে এই নামটা তারা নিয়েছিল ভারতীয় একটি উপকথা থেকে । গল্পটি ছিল কালিলাহ ওয়া দিমনা নামক গ্রন্থের ( ভারতে যা পঞ্চতন্ত্র নামে পরিচিত ) । গ্রন্থটি ইসলামের প্রচারের পূর্বে পাহলভি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল পরে আরবি ভাষায় অনুবাদ করেন ইবনে আল মুকাফ্ফা । গল্পটি হলো এক বারবারিয়ান ঘুঘু আর তার বন্ধুদের নিয়ে যাদের গল্পে বলা হয়েছে ইখওয়ান আল সাফা বা শুদ্ধতার সংঘ । গল্পের এই নাম থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই নাম রেখেছে বলে মনে করেন ইগনাক গোল্ডযিহার । আবার এদিকে নিকলসন ও লেভী ইবনে কিফতির বরাতে মত দিয়েছেন যে তারা মনে করত যে এই গোষ্ঠীর সময়ে তাঁদের ( ইখওয়ান আল সাফা )মতে শরীআহ ধূললণ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল অজ্ঞতা আর ভ্রষ্টতার কারণে , তাঁরা ছিলেন শুদ্ধতার সারথি তাই তাঁদের এই নাম । আবার তিবায়ির মতে তাঁদের এই নামের পেছনে কাজ করছে সূফিবাদের প্রতি প্রবণতা , কারণ সাফা আর সূফি শব্দদয়ের ধাতু প্রায় একই !!


কালিলাহ ওয়া দিমনা গ্রন্থের একটি পাতা


ইখওয়ান আল সাফার সদস্যরা নিজেদের পরিচয় সব সময় গোপন রেখেছিল যদিও তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম আবু হায়ান আর আব্দুল জব্বার নামক দুই সমসাময়িক ব্যক্তি তাদের গ্রন্থে প্রকাশ করেন। তারা সকলেই বসরায় বসবাস করতেন । তাদের এক প্রবীণ সদস্য জায়িদ বিন রিফার বাড়িতে তারা ১২ দিন পর পর একবার মিলিত হতেন । আর তাঁদের সভায় তারা অধিবিদ্যা আর গুপ্ত বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করতেন । এছাড়াও আলাদাভাবে আরও সভা হত যেখানে যুবকদের দীক্ষা দেবার জন্য সভা অনুষ্ঠিত হত । মাঝে মাঝে সভায় আমন্ত্রিতদের গান নাচ , মদ্যপান সহ আরও অনেক কিছু উপভোগ করতে দেয়া হত , যাতে ইখওয়ান আল সাফাদের পরোক্ষ প্ররোচনা ছিল ।


তারা সদস্য সংগ্রহ করত নিজেদের মধ্যে গোপনে যোগাযোগ করে । ঢালাওভাবে তারা সদস্য সংগ্রহ করতেন না । তাদের সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংগ্রহকারীদের বলা হত সবচেয়ে বেশি মনযোগ দিতে যুবকদের প্রতি । কারণ বয়স্ক সদস্য বেশি হলে এদের দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় না । বার্ধক্যের কারণে এরা সব ধরনের আন্দোলন বা গুপ্ত কাজ করতে পারবে না । আবার যুবকদের সহজে অনুপ্রাণিত করা যায় এবং এদের দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কাজও করা যায় তাছাড়া এরা বেশি দীক্ষিত হয় বলে উদ্দেশ্য জীবিত থাকে দীর্ঘ সময় ধরে ।


এদের দলের সদস্যদের চার শ্রেণীতে বিভক্ত করে রাখা হত । শ্রেণী বিভাগটা হত বয়সের দ্বারা । একদম নিম্ন শ্রেণী ছিল যারা ১৫ বছরের বেশি তবে ৩০ বছরের কম । এর ওপরের শ্রেণী ছিল যারা ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে । দ্বিতীয় শ্রেণী ছিল ৪০ থেকে ৫০ বছরের সদস্যরা । আর একদম প্রথম শ্রেণীরা ছিলেন ৫০ বছরের বা তার চেয়ে বেশি বয়সের সদস্যরা । এরা ছিল এই গোষ্ঠীর পরিচালক । কারও কারও মতে এদের যিশু বা বুদ্ধের মত সম্মানিত বলে মনে করা হত !


গোষ্ঠীর প্রথম দিকে সবার ব্রহ্মচার্য পালন করার রীতি ছিল কিন্তু পরেরদিকে এই অসম্ভব রীতিকে বিলুপ্ত করা হয় ।

এদের মতবাদ , মন্তব্য এবং আলোচনা লিপিবদ্ধ করে ৫২ টি খন্ডে প্রকাশ করেন তারা , যা গ্রন্থ বিক্রেতার কাছে পৌঁছানো হত একদম গোপনীয়তার সাথে অথবা বলা যায় গ্রন্থবিক্রেতারাই তাঁদের পরিচয়টা গোপন রাখত । এই ৫২ টি খন্ডকে বলা হয় রাসাইল বা পত্র অথবা বলা যায় প্রবন্ধগুচ্ছ । খণ্ডগুলো রচনার ক্ষেত্রে তারা কোরাণ , প্লেটো ,পিথাগোরাস , এরিস্টটল ও প্লুটোনিয়াসের গ্রন্থ থেকে সাহায্য নিয়েছিল বা অনুপ্রাণিত হয়েছিল । ৫২ টি খণ্ড জুড়ে আলোকপাত করা হয়েছে:

* বিজ্ঞানের শ্রেণীকরণ ( গণিত , পদার্থবিদ্যা )
* প্রকুতি ও বিজ্ঞান
* অধিবিদ্যা
* মনস্তত্ত্ব
* জ্ঞানের তত্ত্ব
* ধর্ম
* রাজনীতি
* শিক্ষা
* এবং নীতিবিদ্যা নিয়ে ।


রাসাইল

সময়কাল:

ইখওয়ান আল সাফা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা জানা যায় না । তাদের অবস্থিত সময়কাল কত তাও জানা যায় না নিশ্চিত করে । কারণ তেমন লিখিত কিছুই নেই যার থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তারা নির্দিষ্ট সেই বছর থেকে অমুক বছর পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চালিয়েছিল । তবে পি.কে হিট্টি তার “আরব জাতির ইতিহাস” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে সালটা ৯৭০ । ওদিকে আবার মোঃ আব্দুল হালিম তার গ্রন্থ “মুসলিম দর্শন: চেতনা ও প্রবাহ” – এ উল্লেখ করেছেন যে সময়কালটা ছিল ৯৮০ সালে । এছাড়াও সিরিয়ার আরব একাডেমির ডক্টরেট সদস্য ওমর ফারুকের মতে তাদের ৯৮৩ সালে উদ্ভব হয় । নির্দিষ্টভাবে কোন অনুমানকে একপাক্ষিক মেনে নেয়া যায় না , সব মতেই কিছুটা বিভ্রান্ত আছেই । আর এসব বিভ্রান্তি এড়াতে নির্দিষ্ট কোন বছরকে অনুমানা না করে বিশেষজ্ঞরা এটা মেনে নেন যে তাঁদের সময়কাল হলো দশম শতকের শেষার্ধে , মানে ৯৫০ থেকে ১০০০ সালের মধ্যের কোন এক সময়ে তারা তাদের লিখা রচনা করেছিলেন । আর এটাই মেনে নেন অনেকে ।


উৎসগত জটিলতা :

ইখওয়ান আল সাফাদের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় আবু হায়ান আল তাওহিদি থেকে । তৎকালিন এক উজির ইবনে সাদান , যার কার্যাকালের সময় ছিল ৯৮০ থেকে ৯৮৬ সাল পর্যন্ত । তাওহিদির সাতে তার আলাপচারিতার কথা তার ( তাওহিদি ) রচিত গ্রন্থ “ কিতাব আল ইমতা ওয়াল মুআনাসা ”- তে বর্ণিত আছে । উজির ইবনে সাদান তাকে জিজ্ঞেস করেন যে সরকারি সচিব জায়িদ ইবনে রিফার সম্পর্কে তাওহিদির মত কী ? উজির ইবনে সাদানের কাছে তাঁকে তীব্র অহমিকায় ডুবে থাকা দাম্ভিক মানুষ বলে মনে হয় । তাওহিদি বলেন যে জায়িদ ইবনে রাফা হলেন বেশ বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী মানুষ । জায়িদ কেবল একজন জ্ঞানী মানুষ নন তিনি বেশ প্রতাপশালীও বটে , কারণ জায়িদের সুপারিশের কারণে ইবনে সাদান তার উজিরের পদ পেয়েছেন ।


এসব জানার পর উজির ইবনে সাদান তাকে জায়িদের মাজহাব সম্পর্কে জানতে চাইলে তাওহিদি বর্ণনা করেন যে , তাকে সাধারণভাবে কোন মাযহাব পন্থি বলে চিহ্নিত করা যায় না । তার মনের ভেতরে কী আছে তা কেউ জানে না । বুঝতে পারে না তার হালচাল । সে থাকে বসরায় অনেক কাল ধরে বসবাস করে আসছেন । সেখানে তার একটি গোষ্ঠী আছে যারা সব ধরনের বিজ্ঞান ও জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতি নিবেদিত প্রাণ । তাঁদের মধ্যে আছেন আবু সুলায়মান মোহাম্মাদ ইবনে মাশার আল বাসতি যিনি আল মাকদিসি নামে বেশি পরিচিত । এছাড়াও আছেন আবুল হাসান আলী ইবনে হারুণ আল জানজানি , আবু আহমেদ আল নাহরাজুরি , আল আওফি এবং প্রমুখ । তারা নিজেদের মধ্যে নিজেদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করে এই দাবি করে যে তারা আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার যোগ্য এবং তারাই বেহেশত জয় করবে । তারা নিজেদের মতবাদ ৫২ টি প্রবন্ধে রচিত করেছেন এবং এর নাম দিয়েছেন , “ রাসাইল আল ইখওয়ান আল সাফা ” ।



তাওহিদির এই বক্তব্য বাদেও তার ওস্তাদ ও বন্ধু আবু সুলায় মান আল মানতিকির থেকেও অনেকটা জানা যায় । মানতিকি রচিত সিওয়ান আল হিকমাহ নামক গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে ৫২টি প্রন্ধ যা রাসাইল ইখওয়ান আল সাফা নামে পরিচিত তা আসলে কোন গোষ্ঠী লিখেনি লিখেছেন একজন বিজ্ঞবান মানুষ যার নাম আবু সুলায়মান মোহাম্মাদ ইবনে মাশার আল বাসতি ওরফে আল মাকদিসি । তিনি গোষ্ঠী নিয়ে কিছুই বলেননি কেবল রাসাইল নিয়েই আলোচনা করেছেন । তার রচনা থেকে গোষ্ঠী সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না । সম্ভবত তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে ইখওয়ান আল সাফা বলে কোন গোষ্ঠী নেই ।


তৃতীয় এবং শেষ যে রচনা থেকে এই গোষ্ঠী সম্পর্কে জানা যায় তা হলো একজন মুতাজিলা কাজী আবদউল জব্বারের গ্রন্থ “ তহবিত দালা’ইল ওয়া নুবুয়্যাহ্ ” । তিনি তার এই গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে ইসমাঈলি শিয়াদের একটি গুপ্ত গোষ্ঠী আছে যাদের মধ্যে প্রধান হলেন কাজী আবুল হাসান আলী ইবনে হারুণ আল জানজানি আর তার অনুসারিদের মধ্যে তিনি যাঁদের নাম উল্লেখ করেন তারা হলেন , সচিব জায়িদ ইবনে রিফা , আবু আহমেদ আল নাহরাজুরি , আল আওফি এবং সচিব ও জ্যোতির্বিদ আবু মোহাম্মদ ইবনে আবুল বাঘল । তারা সবাই বসরায় বসবাস করে এবং নিজেদের গুপ্ত রেখে তারা এই প্রচার করতে চায় যে ইসলামের নবী মোহাম্মদ সাঃ আসলে একজন ধরিবাজ এবং তার এই ধর্ম এখন শেষের পর্যায়ে চলে এসেছে , এই ধর্ম বিলুপ্ত হবেই হবে ( তার এই মতটি সত্য নয় বলে মনে হয় কারণ ইখওয়ান আল সাফার রচিত প্রবন্ধ তা প্রমাণ করে না )। তিনি নির্দ্ধিধায় এই বলে তাঁদের স্বীকৃতি দেন যে তারা হল ইসলামের শত্রু । ইখওয়ান আল সাফাকে নিয়ে তিনি বিষোদগার করলেও , তাদের রচিত সেই ৫২ টি প্রবন্ধ নিয়ে তিনি কোন আলোচনা করেননি ।


এই তিনটি উৎস বাদে সমসাময়িক আর কোন উৎস থেকে তাদের নিয়ে আর কোন কিছু জানা যায় না । তিনটি উৎসের তথ্যের মধ্যে কোন না কোন দিক থেকে তাদের তথ্যের অমিল আছে । তিনটি উৎসই তাঁদের নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছে । আর এজন্যই তাঁদের উদ্দেশ্য আর গতিবিধি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটে না ইতিহাস অনুসন্ধানীদের মধ্যে । উৎসগত তথ্যের এই ভিন্নতার জন্য তারা আরও বেশি রহস্যময় হয়ে আছে জ্ঞান সমাজে !


ইখওয়ান আল সাফাদের রাজনীতি ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি

ইখওয়ান আল সাফাদের রচিত প্রবন্ধগুচ্ছতে সমসাময়িক বিজ্ঞান আর দর্শন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । তার সাথে সেই সময়ের রাজনীতি ( ঠিক রাজনীতি বলা যায় না , বরং বলা যায় শাসক কেমন হবে সেই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ) এবং তাদের ধর্মের প্রতি মনোভাব উঠে এসেছে ।

রাজনীতির প্রতি সরাসরি এদের কোন মনোভাব ছিল না । আবার বলা যায় এরা রাজনীতি নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসতে চাইছিল না । এর পেছনে হতে পারে গ্রীকদেশীয় হালচালের সাথে আরবের রাজনীতির সমন্বয় করতে না পারার অক্ষমতা । রাজনীতি নিয়ে তাদের সরাসরি বক্তব্য না পাওয়া গেলেও কেমন মানুষকে শাসক হতে হবে সেই নিয়ে তাঁদের মত আছে । তাঁদের মতে যে ব্যক্তি শাসক হবেন তাঁকে আগে নিজের জৈবিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করবার ক্ষমতা থাকতে হবে । কারণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানে না যে সে কখনওই অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । তাই শাসককে হতে হবে জিতেন্দ্রীয় ।


যিনি শাসক হবেন তিনি তার সন্তান এবং ভাইদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করবেন এবং তাঁদের প্রতি এমন নীতি বজায় রাখবেন যে তাদের মধ্যে যেন তার প্রস্থান ব্যতীত কোনবিশৃঙ্খলা দেখা না দেয় । এছাড়াও তিনি তাঁর কর্মচারী , কর্মকর্তা ও দাসদের প্রতি সদয় হবেন । তবে এমন হবেন না যে যাতে করে তাঁর দুর্বলতা তাদের সামনে প্রকাশিত হয় । তিনি এমনভাবে বন্ধু বাছাই করবেন যে তারা যেন তার প্রতি আনুগত্য রাখে এবং তিনি তাঁদের প্রতি এমন আচরণ করবেন যে তারা যেন তার গোপনীয়তা না জানে । এছাড়াও তার আত্মীয়রা যদি তার প্রতি আনুগত্য না রাখে তবে তাদের প্রকাশ্যে ত্যাজ্য করা উচিত । তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে ।


রাজনীতি নিয়ে তাদের মত না থাকলেও রাজনীতির অন্যতম অংশ শাসককে নিয়ে তাদের মত । শাসন কেমন হবে তা নিয়ে বক্তব্য হলো শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে ধর্ম ও রাজার মাধ্যেমে । জ্ঞানীদের কর্তৃক শাসন অসম্ভব , কারণ জ্ঞানীদের কর্তৃক শাসন করতে হলেও একজন রাজা থাকা আবশ্যক । মানে রাজাহীন কোন শাসন প্রথাকে তারা সমর্থন করত না । তবে একজন রাজাকে কেমন হতে হবে তা নিয়ে তারা বলেছেন রাসাইলে ।


ধর্ম নিয়ে তাঁদের অভিমত হলো ধর্ম একটি প্রয়োজনীয় বিষয় । সামাজিক প্রথা , শাসনের নীতি, মানুষের প্রচলিত রীতি পালনে এবং আত্মার পরিশুদ্ধের জন্য ধর্মের গুরুত্ব অস্বীকার্য নয় তাঁদের মতে ! তাঁদের মতে ধর্মীয় আচার তৈরী হয় সেই সময়ের জ্ঞানী মানুষ কর্তৃক এবং তা তারা করে জাতির কল্যাণে । কিন্তু তারা বলেন যে ধর্মের যেসব অধিবিদ্যাগত বিষয় বর্ণিত আছে পবিত্র গ্রন্থে, যেমন- আদম , শয়তান ,ফেরেশতা , হাশর , জান্নাত , জাহান্নাম , তিন এর জ্ঞান এসবকে উপলব্ধি করতে হবে রূপকভাবে । আর যেহেতু আপামর সাধারণ মানুষেরা এসব বুঝতে পুরোপুরি বুঝতে অক্ষম তাই তারা এক্ষেত্রে এসবকে উপলব্ধি করবে আক্ষরিক ও পার্থিবভাবে ।

ইখওয়ান আল সাফারা কোন নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি সন্তুষ্ট ছিল না বলে জানা যায় । মানে কোন একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে অনুসরণ করতে কোন মন্তব্য করেনি । তাঁদের মতে সব ধর্মের মধ্যে কিছু না কিছু সত্য নিহিত আছে । আর মানুষকে তার ধর্ম পালনে এবং ধর্ম বাছাইতে স্বাধীনতা দেয়া উচিত বলে তারা মনে করে । এমনকি মানুষের ধর্ম ত্যাগেও স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে মনে করেন তারা । ধর্মের মধ্যে কোন বাধ্যবাধকতা আছে বলে তারা মনে করতেন না । বরং তারা মনে করতেন ধর্ম হলো এমন জিনিস যা হৃদয়ের সাথে সম্পৃক্ত । বাধ্যবাধকতা তো ধর্মীয় আইন দিয়ে গঠিত হয় ! ধর্মীয় আইন মূলত কিছু সামাজিক নীতি যা সমাজের কল্যাণে পালন করা হয় !

কোন ধর্ম নিয়ে তাঁদের সুপারিশ না থাকলেও ইসলাম নিয়ে তাদের মতের ক্ষেত্রে বলা যায় তারা ইসলামের প্রশংসা করেছেন । ইসলাম নিয়ে তাঁদের মতামত হলো , এটি বর্তমান সকল ধর্মের চাইতে অনেকটাই শ্রেয় । ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরান সকল পূ্র্বের ধর্মগ্রন্থগুলোকে ত্যাগ করেছিল । এবং এর মধ্যে যা কিছু কোরাণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা গ্রহণ করেছে এবং যা বৈসাদৃশ্য তা বর্জন করেছে । নবী মোহাম্মদ সাঃ হলেন সকল নবীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ নবী । ইশ্বর তার অনুসারীদের কল্যাণের জন্য এই ধর্ম প্রবর্তন করেছে যাতে করে তারা পার্থিব ও পরকালে শান্তি পায় !! ( ঠিক এই খানেই আব্দুল জব্বারের মত টিকে না কারণ তাঁদের প্রবন্ধ তাঁদের মতের সাক্ষ্য দেয় । এবং প্রমাণের দিক থেকে তাঁদের রাসাইল সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য । তাই আব্দুল জব্বারের ইখওয়ান আল সাফার প্রতি যে বিষোদাগার করেছেন তা সত্য বলে মনে হয় না । )


ইখওয়ান আল সাফাদের উদ্দেশ্য

ঠিক কোন উদ্দেশ্যে এরা এমন গোষ্ঠী গড়ে তুলল তা নিয়ে রহস্য একেবারেই কাটেনি । সবার অন্তরালে থেকে দর্শন, বিজ্ঞান, গণিত নিয়ে গবেষণা করবার জন্যই কী এরা নিজেদের গড়ে তুলেছিল ? তাহলে তারা সদস্য সংগ্রহ করত কেন ? কেবল জ্ঞানাগ্রহী কিছু মানুষ নিয়ে গোষ্ঠী গড়ে তুললেই তো হত । এবং নিভৃতে নিজেদের গবেষণা চালাতে পারতেন যেমনটা অন্য আরব মনীষীরা করতেন । কিন্তু কেন নিজেদের গোপনীয়তার চাদরে আবৃত করে তাঁদের কার্যক্রম চালাতে হলো ? এর পেছনে কী নিরাপত্তার ভয় ছিল ? তারা কী তাদের এই গবেষণা চালাবার পেছনে কোন হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল ?


তাঁদের সময়কালটা ছিল আব্বাসীয় শাসনামলের । সেই সময়ে মুতাজিলারা যেভাবে গ্রীকদেশীয় দর্শনের চর্চা করেছিল তাতে মনে হয় না তাঁদের জ্ঞানযাত্রায় তেমন কোন হুমকির সম্মুখীন তারা হয়েছে । কেননা গ্রীক দর্শন সেসময় প্রচলিত ছিল । আর ইখওয়ান আল সাফারাও গ্রীক দর্শন থেকে অনেকটাই অনুপ্রাণিত ছিল । তাঁদের রচিত রাসাইল-এও এর নিদর্শন পাওয়া যায় ।

তবে কী এরা হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল এই কারণে যে তারা গ্রীক দর্শনের অনুসারী হলেও সেই সময়ের অনেকের সাথে তাঁদের কোন না কোন দিক থেকে ভিন্নমত ছিল ! হ্যাঁ এটা একটা কারণ হতেই পারে । বেশ কিছু ইতিহাসবিদদের মধ্যে তারা ইসমাঈলী শিয়া মতবাদে অনুসারী ছিল । তাদের এই মতবাদের কারণে তারা হয়তো নিজেদের অনিরাপদ মনে করেছিল মুতাজিলাদের মাঝে কিংবা সেই সময়ের আব্বাসীয় শাসকের ।

কিন্তু এখানেও গোঁড়াভাবে এই মতকে প্রাধান্য দেয়া যায় না । কারণ তাওহিদি আর ইবনে সাদানের কথোপকথন থেকে আমরা দেখতে পাই ইখওয়ান আল সাফার একজন শক্তিমান সদস্য জায়িদ বিন রিফা , যিনি সচিব এবং সেই সময়ের বেশ প্রতাপশালী ব্যক্তি ছিলেন । তার সাথে যাঁদের নাম তাওহিদি ও আব্দুল জব্বার বর্ণনা করেছেন তারা সবাই বেশ প্রভাবশালী ছিল সেই সশয়ে । তো তাঁদের ওপর তাঁদের বিশ্বাসের কারণে ছড়ি ঘোরাবে এমন কাউকে বা কোন গোষ্ঠীকে কল্পনা করাটা বেশ কষ্টকর । তাছাড়া তাওহিদির বক্তব্য থেকে আমরা জানতে পাই তিনি প্রচলিত কোন মাযহাব বা ধর্মগোষ্ঠীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না এবং রাসাইলের বক্তব্যগুলো থেকে ইসমাঈলী সংযোগের আভাস পাওয়া গেলেও সরাসরি যেহেতু সেইসব তারা প্রচার করেনি তাই ইসমাঈলীয়দের সাথে তাঁদের সংযোগটাকে খুব একটা পাত্তা দেয়া যায় না ।


তাঁদের এই নেপথ্যে থাকবার রহস্যটা নিরেট রহস্যই থেকে যাচ্ছে এ পর্যন্ত ।


ইখওয়ান আল সাফাদের সদস্য সংগ্রহের রীতির ব্যাপারে আগে বলেছি । তাঁদের সদস্য সংগ্রহ চলত খুব গোপনে এবং তাঁরা সদ্যস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিত তরুণদের । যদি জ্ঞানানুসন্ধানই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য হত তবে এরকমের সদস্য সংগ্রহ করবার কী প্রয়োজন ? তাঁদের সদস্য সংগ্রহের এই রীতি কী আমাদের এই আঁচ করতে প্রভাবিত করে না কেবল জ্ঞানানুসন্ধান তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না ! তাঁদের কী অভিসন্ধি ছিল অন্য কিছু ? তারা কী বড় কোন বিপ্লব ঘটাতে চেয়েছিল ?


তাওহিদির থেকে জানা যায় ইখওয়ান আল সাফার বক্তব্য ( যা তাঁদের রাসাইলে বর্ণনা করা আছে ) হল , “ শরীআহ্ অজ্ঞতা আর ভুলের কারণে ক্রমান্বয়ে ধূললন্ঠিত হয়ে যাচ্ছে । কেবল দর্শন ( ফালসাফা ) বাদে আর এমন কোন উপায় নেই যার মাধ্যমে ধুয়ে মুছে আজ আমরা এই শরীআহ্কে পবিত্র করতে পারি । ” তাঁদের এই অভিমত থেকে বোঝা যায় যে তারা আসলে সেই সময়ের প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে ছিল । তারা একটা পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল । ঢেলে সাজাতে চেয়েছিল পুরো একটি সমাজকে । এর পরিধি ছিল পুরো আইন থেকে শুরু করে মানুষের প্রচলিত ধ্যান ধারণা এবং বিশ্বাসকে পরিবর্তন করাবার প্রচেষ্টা । রাসাইলে বর্ণিত তাঁদের অধিবিদ্যা , সৃষ্টির প্রতি অভিমত এবং ধর্ম নিয়ে যা যা বর্ণিত আছে সবটুকুকে যদি এক কেন্দ্রে এনে পর্যালোচনা করা হয় তবে বলতে হবে কেবল জ্ঞান অর্জন ও তার প্রচার তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না । তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোন এক আন্দোলন যার ধাক্কায় পুরো পরিবর্তিত হবে সেই সময়ের আরব সমাজ !!

হয়তো এই কারণে তারা নেপথ্যে থেকে তাঁদের কাজ করে গেছে ।


পরিশিষ্ট
ইখওয়ানদের শেষ নিয়ে তেমন কিছু জানা যায় না । তার এখনও তাদের গোষ্ঠীর অনুশীলন চালু রেখেছৈ কি না তা যেমন জানা যায় না তেমনি তারা কী তাঁদের গোষ্ঠীর অবসান করেছিলেন এমন কিছুও সঠিকভাবে জানা যায় না । তবে অনেকে ধারণা করেন যে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিজেদের অধ্যবসায়গত জটিলতার কারণে তারা আর তাঁদের গোষ্ঠী চালু রাখতে পারেনি । তবে এটা কেবলই একটি অনুমান তবে এই অনুমান থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় না । যে রহস্যময়তা নিয়ে তারা যাত্রা শুরু করেছিল তা পুঁজি করেই তারা হারিয়ে গেলেন ইতিহাসের পাতা থেকে আর ইতিহাস অনুসন্ধানীদের রেখে গেলেন এক রহস্যের উপত্যকায় !!

রচনাকারী: নিবর্হণ নির্ঘোষ

ফিচার ক্যাটাগরি: ইতিহাস

বিঃদ্রঃ
সামুতে এর আগেও ইখওয়ান আল সাফাকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন এক ব্লগার । তিনি সেই পোস্ট করেছিলেন আজ থেকে ৭ বছর আগে এবং এরপর তিনি আর কোন পোস্ট করেননি । ইখওয়ান আল সাফার মত তিনিও এক রহস্য অন্তত আমার কাছে ।



তথ্য সহায়ক
*Ikhwan al-Safa- GODEFROID DE CALLATAŸ
*Rasa’il Ikhwan al-Safa-Omar Farrukh
*Ikhwan al Safa- M. Radius Anwar
*স্পিরিট অব ইসলাম – সৈয়দ আমীর আলী
* আরব জাতির ইতিহাস – পি.কে হিট্টি
* মুসলিম দর্শন ও চেতনা প্রবাহ- মোঃ আব্দুল হালিম
*https://www.al-islam.org/history-muslim-philosophy-volume-1-book-3/chapter-15-ikhwan-al-safa
*https://plato.stanford.edu/entries/ikhwan-al-safa/
*https://www.ismaili.net/histoire/history04/history428.html
*https://iep.utm.edu/ikhwan-al-safa/
*Wikipedia
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৪
২৫টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×