somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পটি কি আসলেই ‘মোগলি’র?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিশুটিকে ডাকা হচ্ছিল ‘মোগলি’ নামে। এরপর ‘দুর্গা’, ‘পূজা’ নাম দেওয়া হয় ওর। তবে ওর ধর্ম বা পরিচয় সম্পর্কে কিছু না জানা যাওয়ায় এবার ওর নাম দেওয়া হলো ‘এহসাস’।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গত ২৫ জানুয়ারি ভারতের উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ এলাকার একটি বন থেকে একটি শিশু উদ্ধার করে পুলিশ। উপপরিদর্শক (এসআই) সুরেশ যাদব মতিপুর রেঞ্জের বন্য প্রাণীদের অভয়ারণ্য কাটারনিয়াঘাটে টহল দিচ্ছিলেন। সেখানেই খুঁজে পান শিশুটিকে। বানরের দলের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যেই ছিল সে। শিশুটিকে উদ্ধারের সময় বানরগুলো কিচিরমিচির করছিল। শিশুটিও চেঁচাচ্ছিল। অনেক চেষ্টার পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রথমে বয়স বছর আটেকের মনে হলেও পরে হাসপাতালে পরীক্ষার মাধ্যমে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটির বয়স ১১ হতে পারে।

যখন ছোট্ট মেয়েটিকে পাওয়া যায়, তখন ওর গায়ে কোনো কাপড় ছিল না। লম্বা জটা চুল, বড় বড় নখ ছিল। কারও ভাষা বোঝে না। মানুষ দেখলে ভয় পায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথমে সে পলিথিন খেত। এমনকি হাসপাতালের যে বিছানায় তাকে শুতে দেওয়া হয়েছিল, ওখানকার একটি কম্বল কামড়েছে সে। বাথরুম ব্যবহার করতে জানত না। কথা বলত না, তবে অস্পষ্ট শব্দ করত। চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে মেয়েটির। পায়ে ভর দিয়ে হাঁটা শিখছে সে।

গতকাল শনিবার লখনৌতে নতুন ঠিকানা পেল এহসাস। নির্ভান নামের একটি শিশু আশ্রমে জায়গা হয়েছে তার। নির্ভানের প্রেসিডেন্ট সুরেশ ধাপোলা বলেন, ‘আমরা জানি না ও কোন ধর্মের। আমরা এমন একটা নাম দিতে চেয়েছি, যা কোনো ধর্মের পরিচয় বহন করবে না।’

অনেকেই মেয়েটিকে রুডিয়ার্ড কিপলিংয়ের অমর উপন্যাস ‘জাঙ্গল বুক’-এর প্রধান চরিত্র মোগলির সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে অনেক বিষয় খতিয়ে দেখে বোঝা যাচ্ছে, বাচ্চাটির জীবনের গল্প মোগলির মতো নয়। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।

যে চিকিৎসকেরা শিশুটির দেখছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, ও মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমনটা মনে করেন উত্তর প্রদেশের প্রধান বন কর্মকর্তা জে পি সিংও। তাঁর ধারণা, যারা শিশুটিকে দেখাশোনা করত, তারাই তাকে বনে ফেলে দিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশের ওই বন খুব বেশি গভীর নয়। এখানে বছরের পর বছর কেউ থাকলে তা রেঞ্জারদের নজরে পড়তই। আমার মনে হয়, পরিবারের সদস্যরা জানতেন শিশুটি কথা বলতে পারে না। আর তাই তাঁরা তাকে রাস্তার পাশের ওই বনে ফেলে রেখে গেছেন।
মুল : Click This Link

বানরের সঙ্গে খুব বেশি দিন মেয়েটি ছিল না বলেই বিশ্বাস করেন জে পি সিং। তিনি বলেন, বনটিতে সব সময় সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে রেঞ্জাররা পর্যবেক্ষণ করেন। এটা খুবই অস্বাভাবিক যে সে ওখানে অনেক দিন ধরে থাকছে অথচ কোনো চিহ্ন থাকবে না।

তবে বাহরাইচ জেলার প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা অঙ্কুর লাল বলেন, বাচ্চাটি প্রতিবন্ধী কি না, তা এখনো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বনে বেড়ে উঠেছে—এটা অস্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। প্রথমে যখন তাকে পাওয়া যায়, আচরণ খুব হিংস্র ছিল। বাথরুম ব্যবহারের অভ্যাস ছিল না, কারও সঙ্গে মিশতেও পারত না। আর তাই সবাই ধরেই নেয় সে বনে বেড়ে উঠেছে।

এদিকে মানবাধিকারকর্মীরা জোর দিয়ে বলছেন, এটা কন্যাশিশু বঞ্চনার আরেকটি গল্প।

নারীনেত্রী রঞ্জনা কুমারী বলেন, ‘সত্যি ঘটনা হচ্ছে মেয়েটির পরিবার তাকে আর দেখভাল করতে চায়নি। আমাদের দেশে অনেক পরিবারে মেয়েশিশুর চেয়ে ছেলেশিশুর গুরুত্ব বেশি। এমনই একটি পরিবার হয়তো এই মেয়েশিশুটির জন্য আর কোনো অর্থ খরচ করতে চায়নি। আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধী মেয়েশিশুকে বড় করা অনেকের জন্যই কঠিন।’
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×