পিযুষ তার মাকে নিয়ে গেছে সরকারি হাসপাতালে । মায়ের চোখ চেকআপ করাবে । কয়েকদিন ধরে তিনি ঝাপসা দেখছেন । টিকেট কেটে বসে আছে সিরিয়ালের ডাক পরার জন্য । ডাক পড়ল । ভিতরে গেল। কিছু লেখালেখি করে আরেক রুমে থাকা এক মহিলা চোখ বিশেষজ্ঞকে রেফার করল ।
ওখানে গিয়ে দেখে তা সিরিয়াল । অপেক্ষা করতে লাগল সে ও তার মা । ঘন্টাখানেক বসার পর হঠাত্ ঘোষণা আসল আজকে আর চশমা দেয়া হবেনা । আপনার আগামীদিন আসেন । নয়ন অবাক । চোখ চেকআপ করাতে এসে সে এসব কি শুনছে । চোখ না দেখে এরা কেমনে বুঝল যে চশমা লাগবে !
সবাই চলে যেতে শুরু করল । সে ভাবল একি কোন কারণ না জেনে কেন তারা চলে যাচ্ছে । সে একা কিভাবে কারণ জানবে ? কিছু লোকজন থাকতে থাকতে সে বলল - স্যার এতক্ষণ বসিয়ে রেখে এখন চলে যেতে বলছেন কেন । তাহলে আগে বললেন না কেন ? সে ভাবল কিছু লোকজন তার সাথে সুর মিলাবে । কিন্তু না কেউ সুর মিলায় নি ।
তার জবাব না পেয়ে আবার সে জিজ্ঞাসা করল । কোন সাড়া পেল না । শেষে সে মাকে নিয়ে বেরিয়ে আসছে আর ভাবছে এভাবে চলে যাওয়া যায়না । কিছু একটা করতে হবে ।
গেইটের কাছে এসে মাকে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে সে গেল প্রশাসনিক ব্লকে । দেখে কয়েকটি টেবিলে কেউ নেই । ভিতরে একটি ছোট কেবিনে দেখে কোষাধক্ষ চেয়ার একজন বসে আছেন । সে বিনয়ের সাথে বলল - স্যার আমি কিছু বলতে চ্চাছি ।
স্যার- হ্যা বলেন । বসুন ।
সে সমস্ত ঘটনা বলল ।
স্যার পিয়নকে ডাকলেন । একে ইনচার্জ স্যারের রুমে নিয়ে যাও । আর বলবে আমি পাঠিয়েছি ।
উনাকে আবার সবকিছু বলবেন ।
পিযুষ ইনর্চাজকে সবকিছু বলল । স্যার পিয়নকে দিয়ে তদন্তের জন্য ঐ মহিলা চোখ বিশেষজ্ঞের রুমে পাঠিয়ে বললেন যে দেখে আস ঘটনা কি ? আর ওকে বললেন যে তোমার মাকে নিয়ে ঐ রুমে যান । আমি দেখছি কেমনে চেকআপ হয়না ।
পিযুষ মাকে আনতে যাওয়ার আগেই দেখে মা চলে এসেছেন যে পিযুষ কোন ঝামেলা বাধাল কিনা ?
অবশেষে ঐ ডাক্তার ম্যাডাম অতি যত্নে তার মাকে দেখল । এত সময় নিয়ে দেখল যে পিযুষেরই বিরক্তি শুরু হল । বাইরে দাড়িয়ে থাকা দুটি মেয়েকে দেখে তার মায়া হল তারা এখনো দেখাতে পারেনি । পারবে কিনা তাও সিউর না । সে ভাবছে এরকম হলে কেমনে চলবে ? সবাই তো আর তার মত ঘাটাঘাটি করতে পারবেনা । তাও সে খুশি তার কাজ হয়েছে ।
পাদটিকা : সব মানুষ মাছের মতো হলে বাচাঁ যায় না । দু-একজন অন্যরকম মানুষ লাগে । - হুমায়ুন আহমদ